— প্রতীকী চিত্র।
সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে অনেক ক্ষণ কিছু খাওয়া হয়নি। রাতে ঘুমোনোর সময় ৭ থেকে ৮ ঘণ্টা টানা পেট খালি থাকার পর সকালেও খেতে দেরি হলে মুখের স্বাদ তেতো লাগা স্বাভাবিক। দেহঘড়ির নিয়ম অনুযায়ী ঘুম ভাঙার পর থেকেই পাকস্থলী তার সহজাত প্রবৃত্তিতে পিত্তরস ক্ষরণ করতে থাকে। যা খাবার ভাঙতে সাহায্য করে। সময়মতো খাবার পেটের মধ্যে না গেলে সেই পিত্তরসই খাদ্যনালির উপরের দিকে উঠে আসে। তখন মুখের ভিতরের অংশ তেতো লাগে। আবার অনেকেরই মুখে খাবারের স্বাদ মিষ্টি, টক, নোনতায় বদলে যায়। আবার কারও মুখে খাবারের স্বাদ ধাতব বস্তুর মতো লাগে। চিকিৎসকেরা বলছেন, মুখের স্বাদের সঙ্গে শারীরবৃত্তীয় নানা জটিলতার সম্পর্ক রয়েছে।
কী কী কারণে মুখের স্বাদ পাল্টে যেতে পারে?
১) তেতো স্বাদ
মুখের স্বাদ তেতো হওয়ার পিছনে সাধারণত অনেক ক্ষণ কিছু না খেয়ে থাকাকেই দায়ী করা হয়। চিকিৎসার পরিভাষায় যাকে অ্যাসিড রিফ্লাক্স বলা হয়। তবে চিকিৎসকেরা বলছেন, মুখের স্বাদ তেতো হওয়ার পিছনে হরমোনের সমস্যা, মানসিক চাপ, স্নায়ু কিংবা লিভারের সমস্যাও থাকতে পারে।
২) টক স্বাদ
যা খাচ্ছেন তাতেই মুখের ভিতরটা কেমন টক হয়ে যাচ্ছে। সেই অম্লত্বের পরিমাণ এতটাই যে, দাঁত সুড়সুড় করছে। অনেক ক্ষণ কিছু না খেয়ে অ্যাসিডিটি বা গলা-বুক-জ্বালার মতো সমস্যা হলে মুখের স্বাদ টক হয়ে যেতে পারে। খাবার হজমে সহায়ক উৎসেচকগুলি খাদ্যনালির উপরের দিকে উঠে আসে। ওই উৎসেচকের মধ্যে থাকা ব্যাক্টেরিয়াগুলি জিভের স্বাদ পাল্টে দেয়। চিকিৎসকেরা বলছেন, অন্তঃসত্ত্বা অবস্থাতেও অনেকেরই মুখের স্বাদ পাল্টে যায়।
৩) নোনতা স্বাদ
শরীরে জলের ঘাটতি দেখা দিলে মুখের স্বাদ নোনতা লাগে। চিকিৎসকেরা বলছেন, জল কম খাওয়া হলে মুখের লালা শুকিয়ে গেলে, রক্তে সোডিয়ামের মাত্রা কমে মুখের স্বাদ নোনতা হয়ে যায়। অনেক সময় হাইপার টেনশনের রোগীদের ক্ষেত্রেও মুখের স্বাদ নোনতা হয়ে যাওয়ার মতো সমস্যা হতে দেখা গিয়েছে।
৪) ধাতব স্বাদ
সাধারণত অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় অনেক মহিলারই মুখের স্বাদ পাল্টে যায়। রক্তে বিভিন্ন খনিজের অভাবে অনেক সময় খাবারের স্বাদ বদলে ধাতব স্বাদের হয়ে যেতে পারে। তবে চিকিৎসকেরা বলছেন, এমন লক্ষণ কিন্তু মাড়ি থেকে রক্ত পড়া বা জিঞ্জিভাইটিসের কারণেও হতে পারে।
৫) মিষ্টি স্বাদ
দু’-এক ঘণ্টা আগে যে কোনও মিষ্টিজাতীয় খাবার খেয়েছেন, এমনটা নয়। অথচ মুখের ভিতরটা কেমন যেন মিষ্টি লাগছে। চিকিৎসকেরা বলছেন, রক্তে শর্করার মাত্রার সঙ্গে যুক্ত এই লক্ষণ। সাধারণত ডায়াবিটিসে আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে এমন সমস্যার কথা শোনা যায়।