আদা, হলুদ একসঙ্গে খাওয়া যায়? ছবি: সংগৃহীত।
কখনও রোদ, আবার কখনও বৃষ্টি। রোদ থেকে এসেই সোজা শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ঘরে ঢোকা। নিরন্তর এই অভ্যাসে শরীরের দফরফা হচ্ছে। দু’দিন অন্তর সর্দি-কাশি। পেটের গোলমাল তো নিত্যসঙ্গী। এই ধরনের সমস্যা নিয়ন্ত্রণে রাখতে অনেকেই আয়ুর্বেদে ভরসা রাখেন।
গ্যাস, অম্বলের সমস্যা নিয়ন্ত্রণে রাখতে আদার টুকরো মুখে দেওয়ার চল অনেক দিন। আবার রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা ভাল রাখতে অনেকেই দুধে এক চিমটে হলুদ মিশিয়ে খেয়ে থাকেন। কিন্তু এই দু’টি উপাদান এক সঙ্গে খেলে কী উপকার হয়?
হলুদের মধ্যে সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে উপাদানটি রয়েছে, তা হল ‘কারকিউমিন’। ক্যানসার প্রতিরোধক হিসাবে জনপ্রিয় হলেও এই উপাদান সার্বিক ভাবে রোগ প্রতিরোধ শক্তি বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করে। ‘জার্নাল মলিকিউল্স’-এ প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, হলুদের মধ্যে থাকা ‘কারকিউমিন’ সাধারণ সর্দি-কাশি, আর্থ্রাইটিস, বিপাকহার জনিত নানা রকম সমস্যা নিরাময় করতে কাজে আসে।
অন্য দিকে, আদার ঔষধি গুণও কম নয়। শরীরে প্রদাহজনিত ব্যথা, বমি বমি ভাব, হজমের গোলমাল নিরাময় করতেও সাহায্য করে এই কন্দ। আমেরিকার ন্যাশনাল লাইব্রেরি অফ মেডিসিন-এ প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, শুধু সাধারণ ব্যথা-বেদনাই নয়, ঋতুস্রাব থেকে অস্টিয়োআর্থ্রাইটিস, সব ধরনের ব্যথা বশে রাখতে সাহায্য করে আদা। রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে রাখতেও আদার ভূমিকা রয়েছে।
এই দু’টি উপাদান এক সঙ্গে মিশিয়ে খেলে কী কী উপকার হয় জানেন?
১) প্রদাহনাশক
হলুদে রয়েছে কারকিউমিন এবং আদায় রয়েছে জিঞ্জারল। এই দু’টি উপাদানই প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গিয়েছে, এই উপাদান প্রদাহজনিত ব্যথাবেদনা নিয়ন্ত্রণে রাখতেও সহায়তা করে।
২) ব্যথা কমায়
আয়ুর্বেদে ‘পেনকিলার’ বলতে আদা এবং হলুদ বেশ জনপ্রিয়। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গিয়েছে, এই দুটি যৌগ বাতজ ব্যথাবেদনা নিরাময়ে সাহায্য করে। পেশির ব্যথা কমাতেও আয়ুর্বেদে এই দু’টি যৌগকে যথেষ্ট গুরুত্ব দেওয়া হয়।
৩) হজমশক্তি বৃদ্ধি করে
হজমের গোলমাল ঠেকাতে এক টুকরো আদা এবং এক টুকরো হলুদ থেঁতো করে ঈষদুষ্ণ জল দিয়ে খাওয়া যেতে পারে। রোজ অ্যান্টাসিড বা হজমের ওষুধ না খেয়ে এই ধরনের ভেষজের উপর ভরসা রাখলে উপকার পাবেন। এই দু’টি উপাদান হজমে সহায়ক উৎসেচকগুলি ক্ষরণে সহায়তা করে। খাবার হজমের পাশাপাশি গ্যাস, পেটফাঁপার সমস্যা নিয়ন্ত্রণে রাখতেও সহায়তা করে আদা এবং কাঁচা হলুদ।