প্লাস্টিকের কৌটোর গায়ে চিহ্ন কিসের? ছবি: সংগৃহীত।
বেঁচে যাওয়া খাবার ফ্রিজে তুলে রাখতে প্লাস্টিকের টিফিন বাক্স ব্যবহার করেন অনেকেই। রেস্তরাঁ থেকে খাবার আনিয়েও খাওয়া হয়। সেখান থেকে যে ধরনের প্লাস্টিকের কৌটো দেওয়া হয়, অনেকেই সেগুলি ধুয়েমুছে রেখে দেন। খাবার গরম করতে এই ধরনের বাক্সগুলি ব্যবহার করা হয় অনেক হেঁশেলেই। কিন্তু সেই সব প্লাস্টিকের কৌটো আদৌ পুনর্ব্যবহারযোগ্য কি না, সে সব বিষয়ে স্পষ্ট ধারণা সকলের নেই। আবার স্বাস্থ্য সচেতন অনেকেই দাম দিয়ে নামী সংস্থার প্লাস্টিকের কৌটো, জলের বোতল কেনেন। কিন্তু কোন খাবার রাখার ক্ষেত্রে তা কী ভাবে ব্যবহার করতে হয়, জানেন না।
প্লাস্টিকের বোতল, টিফিন বাক্স কিংবা কন্টেনারের পিছনে নানা রকম চিহ্ন থাকে। বেশির ভাগ সময়েই তা আমাদের চোখ এড়িয়ে যায়। শুধুমাত্র মাইক্রোঅয়েভে গরম করতে দেওয়ার সময়ে এক বার দেখে নেওয়া হয় কৌটোর গায়ে ঢেউ খেলানো চিহ্নটি আছে কি না। তবে, বি়জ্ঞানীরা বলছেন, প্লাস্টিকের কৌটোর পিছনে দেওয়া চিহ্নগুলির কিন্তু আলাদা অর্থ রয়েছে। কোন খাবার কী ধরনের কৌটোয় রাখা যায় বা গরম করা যায়, সেই সব কিছু নির্ধারণ করে ওই চিহ্নগুলি।
প্লাস্টিকের বোতল, কৌটোর গায়ে দেওয়া চিহ্নগুলির মানে কী?
১) পিইটি (পলিইথাইলিন টেরিপ্যাথলেট)
জল, নরম পানীয়ের প্লাস্টিকের বোতলের পিছনে এই ধরনের চিহ্ন দেখা যায়। সাধারণত এক বার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিকের কৌটো বা বোতলে এই চিহ্ন দেওয়া থাকে।
২) এইচডিপিই (হাই ডেনসিটি পলিইথাইলিন)
দুধ রাখার প্লাস্টিকের পাত্র, ডিটারজেন্টের কৌটো এবং কিছু কিছু টিফিন বাক্সের গায়েও এই চিহ্ন থাকে। ‘এইচডিপিই’ দেওয়া প্লাস্টিকের কৌটো ‘পিইট’ বা ‘পেট’-এর তুলনায় ভাল।
৩) পিভিসি (পলিভিনাইল ক্লোরাইড)
রান্নার তেল রাখার প্লাস্টিকের জার, প্লাম্বিংয়ের জিনিসপত্র, খাবার মুড়িয়ে দেওয়ার বেশ কিছু র্যাপ পিভিসি দিয়ে তৈরি হয়। এই ধরনের প্লাস্টিক থেকে ক্ষতিকর রাসায়নিক নির্গত হয়। তাই খাবার রাখার কোনও জিনিসের মধ্যে পিভিসি না থাকাই বাঞ্ছনীয়।
৪) এলডিপিই (লো ডেনসিটি পলিইথাইলিন)
চাল, ডাল, নুন, চিনির মতো নিত্য দিনের জিনিস যে সব প্যাকেটে দেওয়া হয় সেখানে ‘এলডিপিই’ চিহ্নটি থাকে। অভিজ্ঞেরা বলছেন, খাবার জিনিস রাখার ক্ষেত্রে এই ‘এলডিপিই’ কিন্তু অনেকটাই নিরাপদ।
৫) পিপি (পলিপ্রোপাইলিন)
ওষুধের প্লাস্টিকের শিশি, নামী সংস্থার ইয়োগার্ট বা টক দইয়ের কন্টেনারের পিছনে এই চিহ্ন দেখা যায়। ‘পিপি’ চিহ্ন দেওয়া কন্টেনার পুনর্ব্যবহারযোগ্য। তবে মাইক্রোঅয়েভে গরম করার ক্ষেত্রে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে।
৬) পিএস (পলিস্টাইরিন)
এক বার ব্যবহারযোগ্য কফি বা চায়ের কাপ, খাবারের ট্রে, প্লাস্টিকের চামচ, কাঁটাচামচে ‘পিএস’ চিহ্নটি থাকে। অভিজ্ঞরা বলছেন, সেই সব জিনিস গরম করলে তা থেকে স্টাইরিন নামক বিষাক্ত একটি রাসায়নিক নির্গত হয়। যা ক্যানসারের কারণ হতে পারে।
৭) আদার (অফেন পলিকার্বোনেট অর এবিএস)
উপরে উল্লিখিত কোনও গোত্রের মধ্যেই এইটি পড়ে না। অভিজ্ঞেরা বলছেন, এই ধরনের প্লাস্টিকের মধ্যে ক্ষতিকর ‘বিপিএ’ বা বিসফেনল-এ নামক রাসায়নিকটি থাকে। যা শরীরে প্রবেশ করলে শুধু ক্যানসার নয়, নানা রকম শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে।