প্রক্রিয়াজাত খাবার মানেই নুনের আধিক্য। ছবি- সংগৃহীত
অফিসের কাজের চাপে বেশির ভাগ দিনই বাড়ি ফিরতে দেরি। ক্লান্তিতে রান্না করার ইচ্ছা বা সময় কোনওটাই নেই। চিন্তা নেই, মুশকিল আসান, করতে ফ্রিজে রয়েছে ‘রেডি টু ইট’ পাস্তা থেকে পিৎজা, সব্জি থেকে পরোটা সবই। কেবল গরম করে নিলেই কেল্লাফতে। রোজের জীবনে সময় বাঁচাতে প্রক্রিয়াজাত খাবারের দিকে আমাদের ঝোঁক বাড়ছে।
যাঁরা ‘রেডি টু ইট’ খাবার খান না, তাঁদের হেঁশেলেও মিলবে নানা ধরনের সসের বোতল, চিপ্সের প্যাকেট! ফ্রিজারে থাকে সসেজ, সালামি আর বেকন। সচেতন হলেও প্রক্রিয়াজাত খাবার থেকে একেবারে মুখ ফিরিয়ে রাখা সম্ভব হয় না। তবে রোজের ডায়েটে এই খাবার রাখা স্বাস্থ্যের পক্ষে মোটেই ভাল না। এ সব খাবারে অতিরিক্ত নুন ও চিনি দেওয়া থাকে, দীর্ঘস্থায়ী করার জন্য মেশানো থাকে নানা ধরনের রাসায়নিক, যা স্বাস্থ্যের জন্য মোটেও ভাল নয়। ওবেসিটি, কিছু কিছু ক্যানসার, ডায়াবিটিস সবই উস্কে দিতে পারে এই প্রসেসড ফুড।
প্রক্রিয়াজাত খাবারের ক্ষতিকর দিক
ওজন বাড়ে: প্রক্রিয়াজাত খাবারে ক্যালোরির মাত্রা অনেক বেশি থাকে। তাই এই ধরনের খাবার রোজের ডায়েটে রাখলে ওজন বাড়তে বাধ্য। পুজোর আগে ওজন ঝরানোর পরিকল্পনা থাকলে ডায়েট থেকে প্রক্রিয়াজাত খাবার বাদ দিতেই হবে।
হৃদ্যন্ত্রের সমস্যা: প্রক্রিয়াজাত খাবার মানেই নুনের আধিক্য। বেশি মাত্রায় নুন শরীরে গেলে রক্তচাপ বাড়ে। এ ছাড়া এই ধরনের খাবারে ফ্যাটের মাত্রাও বেশি থাকে, যা কোলেস্টেরলের ঝুঁকি বাড়ায়। শরীরে উচ্চ রক্তচাপ ও কেলেস্টেরল বাসা বাঁধলে হৃদ্যন্ত্রের স্বাস্থ্যও খারাপ হতে শুরু করে।
পেটের সমস্যা: এই ধরনের খাবার নিয়মিত খেতে শুরু করলে পেটের বারোটা বাজবেই। হজমপ্রক্রিয়াও দুর্বল হয়ে পড়বে।
সমস্যা এড়ানোর উপায় কী?
চিকিৎসকদের মতে, এ ক্ষেত্রে মেনে চলতে হবে কিছু সাবধানতা। প্রসেস করা ফুড বা প্যাকেটজাত খাবার কেনার আগে তাই সতর্ক হোন।
কেনার আগে প্যাকেটে কী লেখা আছে, তা ভাল করে পড়ার অভ্যাস করতে হবে। সাধারণত ‘লো ফ্যাট’, ‘লো ক্যালোরি’ ‘জিরো ফ্যাট’ এই ধরনের কথা লেখা থাকে। এ সব দেখে নিরাপদে আছেন, ভাববেন না। দ্রব্যের গায়ে অন্য কোনও উপাদানের পরিষ্কার বর্ণনা না থাকলে তা কিনবেন না। ‘নো অ্যাডেড সুগার’ লেখা থাকলেও ভাল করে খেয়াল করুন তাতে ‘হাই ফ্রুকটোজ কর্ন সিরাপ’, ‘সুইট সিরাপ’, ‘কেন জ্যুস ক্রিস্টাল’ জাতীয় কোনও বস্তুর উপস্থিতি জানানো হয়েছে কি? থাকলে এগুলোই কিন্তু বাড়তি চিনির জোগান দেবে। কাজেই কিনবেন না।
‘অর্গ্যানিক’ এই শব্দেও বিভ্রান্তি ছড়ায়। অর্গ্যানিক চিনি বা নুন আদতে সাধারণ চিনি বা নুন-ই। এই ধরনের চিনি তৈরিতে একাধিক শস্য ব্যবহৃত হয়েছে, এটুকুই যা বাঁচোয়া। কাজেই অর্গ্যানিক মানেই ভাল— এমন নয়। খাবারে কতটা ক্যালোরি ঢুকছে সে হিসেব কিন্তু সব প্যাকেটের গায়ে লেখা থাকে না। ক্যালোরির হিসাব দেওয়া রয়েছে এমন খাবারই বেছে নিন।