শরীরে একসঙ্গে ৫টি কিডনি কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের বিজ্ঞানী দেবেন্দ্র বারলেওয়ারের। ছবি: সংগৃহীত।
দু’টি নয়, একেবারে পাঁচ-পাঁচটি কিডনি শরীরে। আর তা নিয়েই দিব্যি রয়েছেন কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের বিজ্ঞানী দেবেন্দ্র বারলেওয়ার। কী ভাবে এতগুলি কিডনি এল শরীরে?
৪৭ বছরের বিজ্ঞানীর বিরলের মধ্যে বিরলতম অস্ত্রোপচার হয়েছে ফরিদাবাদের একটি বেসরকারি হাসপাতালে। জানা গিয়েছে, ক্রনিক কিডনির রোগে আক্রান্ত দেবেন্দ্র। বছর বছর তাঁর কিডনি প্রতিস্থাপন করতে হয়। এই নিয়ে তৃতীয় বার কিডনি প্রতিস্থাপন হয়েছে। আর সব মিলিয়ে তাঁর শরীরে কিডনির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে পাঁচ। যদিও তার মধ্যে একটিই সক্রিয়।
২০১০ সালে প্রথম কিডনি প্রতিস্থাপন করা হয় দেবেন্দ্রের। যে হাসপাতালে তিনি ভর্তি রয়েছেন সেখানকার ইউরোলজি বিভাগের প্রধান কনসালট্যান্ট চিকিৎসক অনিল শর্মা জানিয়েছেন, বার বার মূত্রনালির সংক্রমণ হত দেবেন্দ্রের। পরে ধরা পড়ে, তিনি ক্রনিক কিডনি ডিজ়িজ়-এ (সিকেডি) আক্রান্ত। রোগ এতটাই বাড়াবাড়ি পর্যায়ে পৌঁছোয় যে, দু’টি কিডনিই অকেজো হয়ে যায়। ফলে প্রতিস্থাপনের প্রয়োজন হয়। প্রথম দাতা ছিলেন বিজ্ঞানীর মা। সেই কিডনি প্রতিস্থাপিত হওয়ার এক বছরের মধ্যে ফের ডায়ালিসিস করার প্রয়োজন হয়। ২০১২ সালে দ্বিতীয় কিডনি প্রতিস্থাপন করা হয়। সে বার দাতা ছিলেন দেবেন্দ্রেরই কোনও এক আত্মীয়।
দ্বিতীয় বার কিডনি প্রতিস্থাপনের পরে তা চলে প্রায় ১০ বছর। কিন্তু ২০২২ সালে করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পরে ফের কিডনির রোগ দেখা দেয়। প্রতিস্থাপিত কিডনিটি অকেজো হতে শুরু করে। ফলে আরও এক বার প্রতিস্থাপনের প্রয়োজন পড়ে। চলতি বছর জানুয়ারি মাসে ‘ব্রেন ডেথ’ এক রোগীর কিডনি তাঁর শরীরে বসানো হয়েছে বলে খবর। ফলে মোট কিডনির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে পাঁচটিতে। চিকিৎসক জানিয়েছেন, বিজ্ঞানীর রক্তের গ্রুপ দেখে সঠিক দাতার খোঁজ চলছিল অনেক দিন ধরেই। তৃতীয় বার প্রতিস্থাপনের এই প্রক্রিয়া ছিল খুবই জটিল। চার ঘণ্টা ধরে অস্ত্রোপচার চলে। দাতার শরীর থেকে নেওয়া কিডনি আপাতত সঠিক ভাবেই কাজ করছে বিজ্ঞানীর শরীরে। তাঁর শারীরিক অবস্থাও স্থিতিশীল।
পুরনো কিডনি কেন বার করা হল না?
এই বিষয়ে চিকিৎসকের বক্তব্য, নতুন কিডনি তলপেটের কাছে ‘ইলিয়াক ফোসা’ অঞ্চলে প্রতিস্থাপিত হয়েছে। পুরনো কিডনি কেটে বার করতে গেলেই শরীরে অভ্যন্তরে প্রচণ্ড রক্তপাত শুরু হবে, সংক্রমণের আশঙ্কাও বাড়বে। তাই পুরনো কিডনিগুলি না সরিয়েই, নতুন কিডনি প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। এতে ঝুঁকি কম হবে।