৪০-এর আগেই ঋতুবন্ধ! ছবি: সংগৃহীত।
অল্প পরিশ্রম করেই হাঁপিয়ে উঠছেন, ওজন বেড়ে যাচ্ছে, চুল ঝরে যাচ্ছে, মুখের জেল্লা হারিয়ে যাচ্ছে— থাইরয়েডের সমস্যা বাড়লে এমন উপসর্গ দেখা যায় শরীরে। থাইরয়েডের সমস্যা এখন উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবিটিসের মতোই দেখা যায় ঘরে ঘরে। গলা এবং ঘাড়ের সংযোগস্থলে থাইরয়েড গ্রন্থি থেকে নির্গত এই হরমোনটি শারীরবৃত্তীয় অনেক কাজই সুষ্ঠু ভাবে পরিচালনা করতে সাহায্য করে। থাইরয়েড হরমোনটির অতিরিক্ত ক্ষরণ বা কম ক্ষরণের প্রভাব পড়ে ঋতুবন্ধের উপর। সাধারণত ৪৫ থেকে ৫০ বছরের মধ্যেই মহিলাদের ঋতুবন্ধ হয়। কিন্তু অনেক সময় থাইরয়েডের কারণে সময়ের অনেক আগেই ঋতুবন্ধ হয়ে যেতে পারে।
রক্তে থাইরক্সিন হরমোন ক্ষরণের পরিমাণ কমে যাওয়াকে হাইপোথাইরয়েডিজ়ম বলে। তবে কেবলমাত্র এই হরমোনের ক্ষরণ কমে গেলেই ঋতুবন্ধের সময় এগিয়ে আসে না। এ ক্ষেত্রে দায়ী হল ‘অটো ইমিউন থাইরয়েডাইটিস’। যার ফলে মহিলাদের সময়ের আগেই ঋতুবন্ধের ঝুঁকি বাড়ে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই দেখা গিয়েছে, এ ধরনের থাইরয়েড ডিম্বাশয়ের কোষগুলিকেও নষ্ট করে ফেলে। যার ফলে ডিম্বাশয়ের কার্যকারিতা সময়ের আগেই বন্ধ হয়ে যায়।
‘অটো ইমিউন থাইরয়েডাইটিস’ হলে সন্তানধারণের সময় সমস্যা হয় অনেকের ক্ষেত্রে। এ ক্ষেত্রে থাইরয়েড শরীরের একটি অংশ হওয়া সত্ত্বেও এই হরমোনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্য শরীর কিছু অ্যান্টিবডি তৈরি করে। এই অ্যান্টিবডি শরীরে বেশ কিছু থাইরয়েড কোষ নষ্ট করে ফেলে। যার ফলে থাইরক্সিন হরমোনের ক্ষরণ কমে যায়। কাদের এই অটো ইমিউন রোগটি হবে, তা আগে থেকে বলা মুশকিল।
৩৫ বছরের পর থেকে মহিলাদের শরীরে ইস্ট্রোজেনের মাত্রাও কমতে থাকে। সুতরাং যদি এই অটোইমিউন রোগটি হয়, তা হলে ঋতুবন্ধ হয়ে যাওয়া স্বাভাবিক। তবে এই রোগ সঠিক সময়ে ধরা পড়লে বা ঋতুস্রাবের পরিমাণ কিংবা চক্রে কোনও রকম অস্বাভাবিকতা দেখে সচেতন হলে, পরিস্থিতি কিন্তু নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব বলেই মত চিকিৎসকের।