সোরিয়াসিসে ভুগছেন? কোন কোন খাবার রোজের পাতে রাখলে অসুখ নিয়ন্ত্রণে থাকবে? প্রতীকী ছবি।
সোরিয়াসিস মানেই আতঙ্ক। এই রোগ একবার হলে সহজে সারতে চায় না। ত্বকে মারাত্মক সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ে। ত্বকের উপরের স্তর থেকে খোসার মতো চামড়া উঠতে শুরু করে দেয়। সেই জায়গায় ভয়ঙ্কর জ্বালা, চুলকানি হয়। কেবল দুই হাতেই হয়, কনুই, হাঁটু এমনকি মাথার ত্বকেও সোরিয়াসিস হতে পারে। সোরিয়াসিস ছোঁয়াচে না হলেও, এই ধরনের ত্বকের অসুখ হলে অনেক বেশি সাবধানে থাকতে হয়। কী ধরনের সাবান, ক্রিম ব্যবহার করবেন, তা চিকিৎসকের পরামর্শ মতোই করতে হয়। সোরিয়াসিস যদি বেড়ে যায়, তা হলে এর থেকে অন্য রোগও হতে পারে। তাই ত্বকের অসুখকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে কেবল ওষুধ খাওয়া নয়, রোজের খাওয়াদাওয়ার দিকেও নজর রাখা প্রয়োজন।
সোরিয়াসিস শরীরের এক জায়গায় হলে সেখান থেকে দ্রুত অন্য জায়গায় ছড়িয়ে যেতে পারে। মাছের আঁশের মতো চামড়া উঠতে শুরু করে। অনেক সময়ে ঘা হয়ে যায় ত্বকে। শীতের সময়ে জ্বালা ও চুলকানি আরও বাড়ে।
‘জামা নেটওয়ার্ক’ নামক বিজ্ঞানপত্রিকায় সোরিয়াসিসে আক্রান্তদের ডায়েট নিয়ে বিশেষ প্রতিবেদন ছাপা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, স্যাচুরেটেড ফ্যাট আছে এমন খাবার, খুব বেশি মিষ্টি জাতীয় খাবার, ভাজাভুজি ও প্রক্রিয়াজাত খাবার, ফ্রজেন ফুড, অ্যালকোহল ও গ্লুটেন আছে এমন খাবার খেলে সোরিয়াসিসের সংক্রমণ আরও বেড়ে যাবে। যদি এই অসুখকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে হয়, তা হলে এমন খাবার খেতে হবে যাতে বেশি পরিমাণে থাকবে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড ও ফাইবার। যে সব খাবার খেলে শরীরে প্রদাহ হবে না, এমন খাবারই রাখতে হবে রোজের ডায়েটে।
কী কী খাবেন?
মাছে প্রচুর পরিমাণে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে। তাই রোজ মাছ খেলে ভাল। ‘আমেরিকান অ্যাকাডেমি ডার্মাটোলজি’ বিজ্ঞানপত্রিকার একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সামুদ্রিক মাছ খেলে ত্বকের সংক্রমণ কম হবে। কর্ড, ম্যাকারেলের মতো সামুদ্রিক মাছ এ দেশে তেমন পাওয়া যায় না। তাই ভেটকি, পমফ্রেট, ইলিশ মাছ খেতে পারেন। তাতেও ভরপুর মাত্রায় ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড আছে।
লিন ফ্যাট খেতে হবে। মাংস খেলে চর্বি বাদ দিয়ে খেতে হবে। রেড মিটের বদলে চিকেন খেলে ভাল। লিন মিটের তুলনায় কোলেস্টেরল ও স্যাচুরেটেড ফ্যাটের পরিমাণ কম থাকে। চিকেন ছাড়াও লিন প্রোটিনের অন্যতম উৎস মাছ। সোরিয়াসিসে আক্রান্তদের জন্য ছোট মাছ খাওয়া বেশি উপকারী।
বেশি করে খেতে হবে সবুজ শাকসব্জি ও ফল। ভিটামিন এ, ই ও অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট বেশি আছে এমন সব্জি ও ফল খেলে ভাল। বেরি জাতীয় ফল, পালং শাক, ব্রোকোলি খেলে উপকার হবে।
শিম, কড়াইশুঁটিতে ফাইবার, ক্যালশিয়াম বেশি থাকে। এই সব্জি খেলে শরীরে প্রদাহ কম হবে। পাশাপাশি, রক্তে শর্করার মাত্রাও নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
বিভিন্ন রকম বাদাম ও বীজ খেতে পারেন। বাদাম ও বীজের ভিটামিন, ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড ও অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট সোরিয়াসের সংক্রমণ কমাতে সাহায্য করে। কাঠবাদাম, সূর্যমুখীর বীজ, কুমড়োর বীজ, তিসির বীজ, চিয়া বীজ রাখতে পারেন রোজের ডায়েটে। তবে বাদাম ও বীজ কী পরিমাণে খাবেন তা পুষ্টিবিদের থেকে জেনে নেওয়াই ভাল।