পিঠের ব্যথা কমাতে কী ভাবে ব্যবহার করবেন এসেনশিয়াল তেল। ছবি: ফ্রিপিক।
পিঠে-কোমরে ব্যথা এখন ঘরে ঘরে। যাকেই জিজ্ঞাসা করবেন, তিনিই বলবেন বেশি ক্ষণ বসে থাকলেই পিঠটা টনটনিয়ে ওঠে। শিরদাঁড়া বেয়ে ব্যথা এঁকেবেঁকে নেমে আসে কোমরে। তার পরে সেখানেই ঘাপটি মেরে বসে থাকে। বসে থেকে ওঠার সময়ে, শোওয়ার সময়, দাঁড়িয়ে থাকলে, এমনকী ঝুঁকে কিছু তুলতে গেলেও ব্যথা যেন সজোরে চাবুক কষায়! ঝনঝন করে ওঠে পিঠ, কোমর।
নাছোড়বান্দা এই ব্যথা কমাতে ব্যথানাশক ওষুধ খেয়েও কাজ হয় না। পিঠে-কোমরে ‘হটব্যাগ’ দিলে সাময়িক আরাম পাওয়া যায়। তা হলে এই ব্যথা সারবে কী করে? চিকিৎসকেরা বলছেন, উপায় আছে। ব্যথাবেদনাকে জব্দ করতে পারে ‘এসেনশিয়াল অয়েল’।
‘এসেনশিয়াল অয়েলে’র উপকারিতা সম্পর্কে কে না জানেন! সর্দি কাশির মতো নানা সমস্যার হাত থেকে রক্ষা করে এই তেল। আবার চুল থেকে ত্বকের যত্নের জন্যও চোখ বুজে ভরসা রাখা যায়। ‘এসেনশিয়াল অয়েল’ ব্যথানাশকও। গাদা গাদা ওষুধ না খেয়ে, ‘এসেনশিয়াল অয়েল’ ব্যবহার করলে ব্যথা কমবে খুব তাড়াতাড়ি। এ বার দেখা যাক, কোন ‘এসেনশিয়ার অয়েল’ কোন ব্যথার দাওয়াই।
১) ইউক্যালিপটাস তেল
পিঠ-কোমরের ব্যথায় খুব আরাম দেয় ইউক্যালিপটাস অয়েল। ইউক্যালিপটাস গাছের পাতার থেকে যে তেল পাওয়া যায়, তার মধ্যে রয়েছে অনেক ঔষধি গুণ। মাংসপেশিতে ব্যথা হলে আলতো করে মালিশ করতে পারেন এই তেল। পিঠ, হাঁটুর ব্যথা, গেঁটে বাতে ইউক্যালিপটাস তেল মালিশ করলে আরাম পাওয়া যায়। এই তেলে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আছে, যা শরীরের জন্য খুব ভাল।
২) ক্যামোমাইল তেল
ক্যামোমাইল তেলে ক্নান্তিভাব কমে যায়। ত্বকে কোনও রকম প্রদাহ হলে, পেশিতে ব্যথা হলে বা টান ধরলে তা দূর করতে পারে এই তেল। ব্যথার জায়গায় ক্যামোমাইল তেল মালিশ করলে খুব আরাম পাওয়া যায়।
৩) ল্যাভেন্ডার তেল
মানসিক চাপ, উদ্বেগ নিয়ন্ত্রণ করতে ল্যাভেন্ডার তেল বেশ কার্যকরী। মাথায় ব্যথা হলেও চিকিৎসকেরা ল্যাভেন্ডার তেল ব্যবহার করতে বলেন। গরম জলে কয়েক ফোঁটা ল্যাভেন্ডার তেল মিশিয়ে যদি পিঠে ও কোমরে নিয়মিত মালিশ করা যায়, তা হলে অল্প দিনেই ব্যথা উধাও হবে।
৪) রোজ়মেরি তেল
গাঁটে গাঁটে ব্যথা হলে রোজ়মেরি তেল লাগাতে পারেন। পেশির প্রদাহ, পেশিতে টান ধরে যাওয়ার সমস্যা থেকে রেহাই দিতে পারে এই তেল। রোজ়মেরি তেল রক্ত সঞ্চালন স্বাভাবিক রাখে। ফলে ব্যথা এক জায়গায় থমকে থাকতে পারে না।
৫) জুনিপার বেরি তেল
ঋতুস্রাবের সময়ে পেটে ব্যথা, মাথায় ব্যথা, পেশিতে ব্যথা কমাতে জুনিপার বেরি তেলের জুড়ি মেলা ভার। স্নানের জলে মিশিয়েও ব্যবহার করা যায় এই তেল। ত্বকের যে কোনও সংক্রমণ সারাতেও কাজে লাগে জুনিপার বেরি তেল।
৬) পেপারমিন্ট তেল
যে কোনও আঘাতের কারণে ব্যথা, ক্ষত সারাতে কাজে লাগে পেপারমিন্ট তেল। ব্যথার জায়গায় এই তেল মালিশ করলে প্রদাহ কমে যায় চটজলদি। ব্যথার জায়গায় শীতল অনুভূতি এনে দেয় এই তেল। পেপারমিন্ট তেলের নিয়মিত ব্যবহার করলে ব্যথা তাড়াতাড়ি কমে যেতে পারে।
৭) আদা তেল
আদার গুণাগুণ সম্পর্কে অনেকেই জানেন। কিন্তু জানেন কি, আদার তেলও কিন্তু সমান উপকারী? অ্যালিসিন, সেলেনিয়াম, ভিটামিন সি-র মতো নানা উপকারী উপাদানে ভরপুর এই তেল। আদা তেলের অন্যতম একটি স্বাস্থ্যগুণ হল পেশি, হাঁটুর ব্যথা উপশম করা।
এই প্রতিবেদন সচেতনতার উদ্দেশ্যে লেখা হয়েছে। সকলের শরীর এক রকম নয়। অনেকের বিভিন্ন রকম অসুস্থতা, অ্যালার্জি জনিত সমস্যা থাকে। তাই পিঠে ব্যথা বা গাঁটে গাঁটে ব্যথা বা অন্যত্র ব্যথা হলে ‘এসেনশিয়াল অয়েল’ ব্যবহার করবেন কিনা তা চিকিৎসকের থেকে জেনে নেওয়াই ভাল।