সম্প্রতি অমিতাভ বচ্চনকে দেখা গিয়েছে শিঙ্গলস রোগের বিরুদ্ধে বিজ্ঞাপনী প্রচার চালাতে। ছবি: সংগৃহীত।
সম্প্রতি অমিতাভ বচ্চনকে দেখা গিয়েছে শিঙ্গলস রোগের বিরুদ্ধে বিজ্ঞাপনী প্রচার চালাতে। ৫০ বছরের ঊর্ধ্বে শিঙ্গলস রোগে আক্রান্ত হন অনেকেই। ‘গ্ল্যাক্সোস্মিথক্লাইন’ সংস্থার সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে অভিতাভ দেশবাসীর কাছে শিঙ্গলসের টিকা নেওয়ার জন্য আর্জি জানিয়েছেন। এই রোগ সম্পর্কে জনগণকে সচেতন করতেও উদ্যোগী হয়েছেন অভিনেতা। কী এই রোগ? কেন তা ঠেকাতে টিকা নেওয়া জরুরি?
অনেকের ধারণা, এক বার চিকেন পক্স শরীরে হানা দিলেই আর এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা নেই। কিন্তু অনেক সময়েই এই রোগের ভাইরাস শরীরে থেকে যায়। বয়স বাড়লে এই ভাইরাস থেকেই হার্পিস জ়স্টার বা শিঙ্গলস রোগে আক্রান্ত হন অনেকে। হার্পিসের সঙ্গে কিছুটা মিল থাকলেও এই রোগ আলাদা। চিকিৎসক সুবর্ণ গোস্বামী বলেন, ‘‘শিঙ্গলসের জন্য মূলত হার্পিস জ়স্টার নামক একটি ভাইরাস দায়ী। কেউ যদি এক বার চিকেন পক্সে আক্রান্ত হন, তা হলেই ভবিষ্যতে এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। বয়স বাড়লে যখন শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায় কিংবা ক্যানসার-এইচআইভির মতো রোগের কারণে যাঁদের রোগে প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে গিয়েছে, তাঁদেরও এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেশি।’’ বিজ্ঞাপনী প্রচারে অমিতাভ বলেছেন, ‘‘শিঙ্গলস রোগ তীব্র যন্ত্রণা ও বেদনার কারণ হতে পারে, বিশেষ করে বয়স্কদের এই রোগের আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি। তাই আমি সকলকেই অনুরোধ করব চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে এই রোগের হানা রুখতে টিকা নেওয়ার জন্য।’’
উপসর্গ কী?
এই রোগে মূলত শরীরে নির্দিষ্ট কিছু অংশে যেমন মুখ, ঘাড়, পিঠ, বুক ও পেটে ফোস্কা, র্যাশ দেখা যায়। এই রোগে আক্রান্ত হলে মাঝে মাঝে জ্বর আসে। ফোস্কার স্থানগুলিতে তীব্র যন্ত্রণা অনুভূত হয়। তবে পক্সের মতো এই রোগে সারা গা জুড়ে ফোস্কা পড়ে না। এই যন্ত্রণা বেশ কিছু দিন ভোগায় রোগীকে। চিকিৎসক সুবর্ণ গোস্বামী বলেন, ‘‘এই রোগের থেকে বাঁচতে জন্মের পরেই টিকা নেওয়া জরুরি। তবে টিকা নিলেই যে আর এই রোগ হবে না, এমনটা ভুল। টিকা নিলে রোগ হলেও সংক্রমণের তীব্রতা কম হবে। এই রোগের উপসর্গগুলি দেখলেই ফেলে না রেখে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। ট্যাবলেট ও মলম দুই ব্যবহার করে এই রোগ থেকে সেরে ওঠা যায়। এই রোগে মৃত্যু হয় না। তবে অনেকের ক্ষেত্রেই যন্ত্রণা বাড়াবাড়ি পর্যায়ে পৌঁছতে পারে। চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে থাকলে এই রোগ থেকে দ্রুত সেরে ওঠা যায়।’’
কোভিডের পর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার কমে গিয়েছে অনেকের। তাই বয়স্কদের শরীরে সহজেই হানা দিচ্ছে এই ভাইরাস। এই যন্ত্রণার হাত থেকে রেহাই পেতে টিকাকরণ জরুরি। ৬০ বছর পর্যন্ত এই টিকা নেওয়া যায়।