নানা ধরনের সুগন্ধির সঙ্গে ঘরের ভিতরের বায়ুদূষণের প্রত্যক্ষ যোগ রয়েছে ছবি: সংগৃহীত।
আসছে ক্রিসমাস!
ঘর সাজানোর তোড়জোড় শুরু হয়েছে এখন থেকেই। ক্রিসমাস ট্রি, সান্তা বুড়ো, মোজা, নানা ধরনের রঙিন কাগজে মোড়া উপহারের বাক্স তো আছেই, সঙ্গে থাকবে ছোট-বড় নানা ধরনের সুগন্ধি মোমবাতিও। ঘরের ভ্যাপসা গন্ধ দূর করতে কিংবা মনের ক্লেদ মুছে ফেলতে সাহায্য করে সুগন্ধি মোমবাতি, এয়ার ফ্রেশনার কিংবা ধূপ। কিন্তু সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে, এই ধরনের সুগন্ধির সঙ্গে ঘরের ভিতরের বায়ুদূষণের প্রত্যক্ষ যোগ রয়েছে।
আয়ারল্যান্ডের ইউনিভার্সিটি কলেজ কর্ক অ্যান্ড মারি কগিন্স, গলওয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে এই সংক্রান্ত একটি গবেষণা হয়। গবেষণার প্রধান অসিত কুমার মিশ্র বলেন, “শীতে বায়ুদূষণের মাত্রা এমনিতেই বেড়ে যায়। তার উপর ঘরে এই ধরনের সুগন্ধি জ্বালালে ঘরের ভিতরের বাতাসেও মিশতে শুরু করে দূষিত পদার্থ।”
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)-র দাবি, বন্ধ ঘরে সুগন্ধি মোমবাতি জ্বালিয়ে রাখলে বাতাসে সূক্ষ্ম কণার ঘনত্ব বাড়তে থাকে, যা ফুসফুসের পক্ষে বিপজ্জনক। ঘরের বায়ু স্বাভাবিক মাত্রায় আসতে কয়েক ঘণ্টা সময় লেগে যায়। শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে শরীরে ওই বিষাক্ত বায়ু প্রবেশ করলে ফুসফুস ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
জলন্ত ধূপ, সুগন্ধি মোমবাতি বিপজ্জনক কেন?
গবেষণায় বলা হয়েছে, মোমবাতি-ধূপ আগুনের সংস্পর্শে এলে নানা ধরনের বিষাক্ত রাসায়নিকযুক্ত গ্যাস উৎপন্ন হয়। কার্বন মনোক্সাইড, সালফার ডাইঅক্সাইড এবং নাইট্রোজেনের অক্সাইড উৎপন্ন হয়, যা স্বাস্থ্যের জন্য খারাপ। এতে অ্যালার্জি-জনিত শ্বাসকষ্ট বেড়ে যায়। দীর্ঘ সময় ধরে এই দূষিত বাতাস শরীরে মিশলে হার্টের রোগ, ফুসফুসের ক্যানসার কিংবা ব্রঙ্কাইটিসের মতো সমস্যা বাড়াবাড়ি আকার ধারণ করতে পারে। সুগন্ধি মোমের গন্ধে অ্যাজ়মার আশঙ্কাও বাড়তে পারে।
অর্গ্যানিক বা প্রাকৃতিক উপাদানে তৈরি মোমবাতি থেকেও কি একই রকম সমস্যা হতে পারে?
অনেকেই মনে করেন, প্রাকৃতিক উপাদানে তৈরি মানেই তা নিরাপদ। এ কথা পুরোপুরি ঠিক নয়। সেই সব উপাদান থেকেও নানা রকম রাসায়নিকযুক্ত বিষাক্ত গ্যাস নির্গত হয়। ফলে শ্বাসকষ্ট, অ্যালার্জি, সর্দিকাশির সমস্যা হতেই পারে।