Asha Bhosle

প্রেমের উপহার ছিল একটি ঝাড়ু! রোগাপাতলা ফ্যাকাশে চেহারার পঞ্চমকে স্পষ্ট মনে পড়ে আশার

রাহুল দেব বর্মণের জন্মবার্ষিকীতে স্মৃতিমেদুর আশা ভোঁসলে। গায়িকা হিসাবে রাহুলই তাঁর প্রতিভার যোগ্য মূল্যায়ন করতে পেরেছিলেন, মত আশার। পঁচিশ বছরের সাঙ্গীতিক সংযোগ ছিল তাঁদের।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
মুম্বই শেষ আপডেট: ২৭ জুন ২০২৩ ১৬:৩৫
When Asha Bhosle said RD Burman gifted her a broomstick, sulked through their first meeting and still won her heart

আশা ভোঁসলে- রাহুল দেব বর্মণ। ছবি: সংগৃহীত।

কিংবদন্তি সুরকার রাহুল দেব বর্মণ এবং সঙ্গীতশিল্পী আশা ভোঁসলের প্রেমকাহিনি মায়ানগরীর চর্চায় থেকেছে দীর্ঘ কাল। ১৯৮০ সালে রাহুল বিয়ে করেন আশাকে। দু’জনেরই দ্বিতীয় বিবাহ সেটি।

সঙ্গীতের ক্ষেত্রে যেমন জোরদার ছিল তাঁদের বন্ধন, তেমনটাই ছিল ব্যক্তিগত জীবনে।

Advertisement

আশা তাঁর এক সাক্ষাৎকারে রাহুলের সঙ্গে তাঁর প্রথম সাক্ষাতের কথা বলেছিলেন। প্রতিভাবান রাহুল তখন তরুণ। ভালবেসে সকলেই তাঁকে পঞ্চম বলে ডাকতেন।

রোগাপাতলা, ফ্যাকাশে এক যুবক। চোখে মোটা চশমা। সেই পঞ্চমকে চিনতেন আশা। গায়িকার কথায়, “সেই ছেলেটি আমার অটোগ্রাফ চেয়েছিল। রেডিয়োতে আমার গাওয়া মরাঠি নাট্যসঙ্গীত শুনেছিল ভাল লেগেছিল ওর।”

এর পর বন্ধুত্ব গভীর হয় তাঁদের। আশা জানতে পারেন, কলকাতায় কলেজ ছেড়ে দিয়েছেন রাহুল। স্মৃতিচারণে আশা বলেন, “ওর ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েছিলাম। বলেছিলাম, অন্তত গ্র্যাজুয়েশনটা করে নিতে। রেকর্ডিং চলাকালীন ও অভিমান করেছিল আমার উপর। কথা বলত না। ”

মজাদার মানুষ ছিলেন রাহুল। অনেকের গলা নকল করতে পারতেন। আশাকে এক বার ঝাড়ু উপহার দিয়েছিলেন, সঙ্গে অবশ্য একটা গোলাপও ছিল।

প্রখ্যাত সঙ্গীত পরিচালক শচীন দেব বর্মণের পুত্র রাহুল সঙ্গীতের ক্ষেত্রে নতুন ধারা এনেছিলেন। সঙ্গীত তাঁর এতটা জুড়ে ছিল যে, অস্তিত্বের অন্য দিকগুলি তার ছায়ায় ঢাকা পড়ে গিয়েছিল বলে ভাবেন আশা। স্বামী হিসাবে, সন্তান হিসাবে সমাজের চেনা ছকে ধরা যেত না তাঁকে।

আশা বলেন, “ও ফ্লোরেই ঘুমোতে পছন্দ করত। কিন্তু ওর মিউজ়িক সিস্টেম, স্টিরিয়ো সব অবিকৃত ভাবে রাখা থাকত। কী খাচ্ছে, তা নিয়ে ভাবত না। সঙ্গীতের মধ্যেই ছিল ওর বেঁচে থাকা, খাওয়া, ঘুমোনো। এখন মনে হয়, ওর মতো প্রতিভাকে সমাজের চেনা ছকে জোর করে বাঁধার চেষ্টা করে ঠিক করিনি।”

গায়িকা হিসাবে রাহুলই তাঁর প্রতিভার যোগ্য মূল্যায়ন করতে পেরেছিলেন বলে মনে করেন আশা। ওপি নাইয়ার বা শঙ্কর-জয়কিষণ তাঁর প্রতিভার কদর করলেও রাহুলই গায়িকা হিসাবে তাঁর ব্যাপ্তিকে আবিষ্কার করেছিলেন। তাঁর কণ্ঠ নিয়ে নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছেন তিনি। ২৫ বছরের সাঙ্গীতিক সংযোগ ছিল তাঁদের।

রাহুলের সঙ্গে তাঁর শেষ সাক্ষাতের কথাও জানান আশা। রাহুল তাঁর বেদনার কথা বলতে চাইছিলেন। আশা বলেন, “ও আমার নাম ধরে আ ... আ ... বলে ডাকতে চাইছিল, কিন্তু কথা শেষ করতে পারেনি।” ১৯৯৪ সালের ৪ জানুয়ারি রাহুলের মৃত্যু হয় মাত্র ৫৪ বছর বয়সে।

২৭ জুন রাহুল দেব বর্মণের জন্মবার্ষিকী।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও পড়ুন
Advertisement