ব্রাত্য বসুর নাটকের হিন্দি রূপান্তরিত নাটক ‘অন্তিম রাত’। সংগৃহীত।
বাংলা নাটক নিয়ে তিনি খুব একটা আশাবাদী নন। সার্বিক ভাবে থিয়েটারের পরিসর খুব একটা বৃহৎ নয়, এটি কার্যত স্পষ্ট। তবে ব্রাত্য বসুর নাটক ‘অন্তিম রাত’ বাংলা ভাষার পরে হিন্দি ভাষায় অভিনীত হতে চলেছে। এটাকে কি বাংলা নাটকের ব্যাপ্তি হিসাবে দেখা যায় না?
এ প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী তথা পরিচালক, নাট্যকার, অভিনেতা ব্রাত্য বসু আনন্দবাজার অনলাইনকে বললেন, “হিন্দি ভাষায় বাংলা নাটক অনূদিত হচ্ছে বলেই বিরাট কিছু পরিবর্তন হয়ে গিয়েছে বা যাবে, এমন নয়। তবে যাঁরা আশার আলোর সঞ্চার হয়েছে বলে দাবি করছেন তাঁদের ধন্যবাদ জানাই। বর্তমান সময়ে দাঁড়িয়ে আমি থিয়েটার নিয়ে খুব একটা আশাবাদী নই।”
ব্রাত্যর এই নাটকের হিন্দি অভিনয়ের প্রস্তাব নিয়ে প্রায় এক বছর আগে অভিনেতা বিজয় কুমার ও রাজেন্দ্র নাথ যোগাযোগ করেন তাঁর সঙ্গে। প্রাথমিক ভাবে রাজি হননি নাট্যকার। প্রাথমিক ভাবে নাকি তাঁর মনে হয়েছিল, এই নাটকের মাধ্যমেই মঞ্চে ফিরবেন তিনি। সে পরিকল্পনা থেকে যে সরে এসেছেন পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষামন্ত্রী, তেমন নয়।
এ দিকে অনুমতি না মেলায় নাট্যকারকে না জানিয়েই হিন্দি রূপান্তর অভিনয়ের তোড়জোড় শুরু করে দেন বিজয় কুমার, রাজেন্দ্র নাথেরা। সে খবর কানে যেতেই বাদ সাধেন ব্রাত্য। তখন ফের অনুরোধ আসে তাঁর কাছে। এ বার আর সত্যিই অনুরোধ ফেলতে পারেননি নাট্যকার। ব্রাত্য বলেন, “নাটকটি দেখে ওঁদের ভাল লেগেছে। কলকাতায় এসে আমাকে অনুরোধ করেছিলেন। বর্ষীয়ান অভিনেতা তাই আর না বলতে পারিনি।”
এই নাটকের প্রেক্ষাপট ভারতে মোহম্মদ আলী জিন্নার শেষ রাত। সম্প্রতি রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে তৈরি ছবির উপর নিষেধাজ্ঞা জারির প্রবণতা এসেছে। ‘ইমার্জেন্সি’, ‘স্কাই ফোর্স’ তার সাম্প্রতিকতম দৃষ্টান্ত। বিনোদন দুনিয়ার উপর রাজনৈতিক প্রভাব কি ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে? ব্রাত্যর মতে, “রাজনৈতিক প্রভাব আগেও ছিল। এই নাটকের প্রেক্ষাপট যে হেতু দেশ স্বাধীন হওয়ার আগের, ১৯৪৭ সালের ৫ অগস্ট— তাই খুব প্রভাব পড়বে কি না জানি না! বাণিজ্যিক ছবির ক্ষেত্রে এই ধরনের নিষেধাজ্ঞা বেশি আসে।” ব্রাত্য মনে করেন এই ধরনের নিষেধাজ্ঞা আসলে প্রচার পাইয়ে দেয়। তাই তিনি বলেন, “থিয়েটারের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি হলে তো ভালই! হইচই হবে, প্রচারের আলোয় আসবে নাটক। মানুষ দেখতে যেতে চাইবেন।”
তিনি আরও জানালেন, দর্শকের উপর হিন্দি ভাষায় এই নাটকের প্রভাব কেমন পড়ছে তার উপর নির্ভর করছে সবটা। বললেন, “যদি প্রযোজনা ভাল হয় তা হলে মানুষ দেখবেন। আর যদি গোটা বিষয়টা শুধু ইতিহাসের পাতায় তথ্য হিসাবে থেকে যায়— একদা আমার নাটক হিন্দিতেও অভিনীত হয়েছিল, তা হলে কিছু হবে না।”
উল্লেখ্য, ২৭ জানুয়ারি, অ্যাকাডেমি অফ ফাইন আর্টসে প্রদর্শিত হবে এই নাটক। আগামী দিনে মুম্বইয়ে প্রদর্শনের কথাবার্তা চলছে। ব্যস্ততা কাটিয়ে নিজের নাটকের হিন্দি অনুবাদ দেখতে যাবেন মন্ত্রী।