রূপমের জন্মদিনে মনের কথা লিখলেন দীপ্সিতা। ছবি: সংগৃহীত।
তিনি বাংলার রকস্টার। মঞ্চে তাঁকে দেখলে উপস্থিত শ্রোতা-দর্শক ভেসে যান সুরের মূর্ছনায়। তাঁর গান একাধিক প্রজন্মকে শিখিয়েছে প্রেমের ভাষা। আবার কখনও তাঁর গান থেকেই প্রতিবাদের ভাষা খুঁজে পেয়েছেন অনুরাগী শ্রোতারা। এমনই এক শ্রোতা হলেন বাম নেত্রী দীপ্সিতা ধর। তাঁর কিশোর বয়স জুড়েও ছিলেন রূপম। তাই রকস্টারের জন্মদিনে মনের কথা উজাড় করে দিলেন দীপ্সিতা।
সমাজমাধ্য়মে রূপমের সঙ্গে একটি ছবি ভাগ করে নেন দীপ্সিতা। ছবিটি কয়েক মাস আগের। সেই ছবি নিজের কিশোরবেলাকে দেখাতে চান বামনেত্রী। তাঁর কথায়, “একটা ১৬ বছরের বদমেজাজি, অভিমানী, অসুস্থ মেয়েকে এই ছবিটা দেখাতে চাই।”
তার পরেই ‘ফসিল্স’ ব্যান্ডের সঙ্গে তাঁর যাপন নিয়ে কথা বলেছেন দীপ্সিতা। এই বাংলা রক ব্যান্ড আসলে ঝাঁ চকচকে ইংরেজি মিডিয়ামের ছেলেমেয়েদের নয়। বরং প্রতিদিন লোকাল ট্রেনে যাতায়াত করেও জীবনের মধ্যে উপভোগ খুঁজে নিয়েছেন যাঁরা, তাঁদের, মত বামনেত্রীর। তাই দীপ্সিতা লেখেন, “আসলে ‘ফসিল্স’ ঠিক ফার্স্ট বেঞ্চের কেতাদুরস্ত ঝকঝকে ইংরাজি মিডিয়ামের না, বরং ডানকুনি লোকালে দু’ঘন্টা জার্নি করে, ঘামে ভেজা গায়ে হাঁফাতে হাঁফাতে কোনও মতে শেষ বেঞ্চের কোণায় সেঁধিয়ে যায় যে রোগা পাতলা ছেলেটা, যার নাম কেউ জানে না, মেঠো উচ্চারণে জবাব দিলে, ফার্স্ট বেঞ্চ যাদের জন্য পাঠায় তাচ্ছিল্যের হাসি, তাদের চুপ থাকা রাগের ইয়ারফোনে ‘ফসিল্স’ ছিল।”
দীপ্সিতা মফস্বলের মেয়ে। তাই তাঁর লেখায় উঠে আসে, “যে উপেক্ষার পাহাড় ডিঙিয়ে, অদ্ভুত থেকে স্বাভাবিক হয়ে ওঠা হল না মুখচোরা মফস্বলের, সেই রাগ, জেদের ফিরতি লোকালে ‘ফসিল্স’ বাজে। সন্ধ্যের নিভু হাওয়ায় মঞ্চে মাথা ঝাঁকাতে থাকা লোকটার সামনে সে ফেলে আসে তার কৈশোরে লালিত রাগ, কষ্ট, অপমান। আমাদের জ্বালা-যন্ত্রনার প্রতিচ্ছবি হয়ে ওঠে একটা বাংলা ব্যান্ড। শেষ বিকেলের শিসের মতো মায়াবী নয়, ক্ষত-বিক্ষত মামুলি সৈন্যের অস্ত্রের ক্লান্তির মতো সুতীব্র হয়ে ওঠে ‘ফসিল্স’। শুভ জন্মদিন রূপমদা। ভালো থেকো!”
দীপ্সিতার ভাগ করে নেওয়া এই ছবিতে শিল্পী ও বামনেত্রী দু’জনকেই শুভেচ্ছা বার্তায় ভরিয়ে দিয়েছেন অনুরাগীরা।