‘হম দিল দে চুকে সনম’-এর এক দৃশ্যে বিক্রম গোখলে এবং সলমন খান ফাইল চিত্র
অবস্থা সঙ্কটজনক হলেও এখনও দেহে প্রাণের স্পন্দন রয়েছে মরাঠি অভিনেতা বিক্রম গোখলের। বুধবার রাতে খবর রটেছিল, মৃত্যু হয়েছে তাঁর। শোকপ্রকাশ করেছিলেন একাধিক তারকা। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমও বিক্রমের প্রয়াণের খবরে সিলমোহর দিয়েছিল। তবে সবটাই গুজব বলে দাবি পরিবারের। অভিনেতার স্ত্রী এবং কন্যা বুধবার রাতেই টুইট করে জানান, ভেন্টিলেশনে রয়েছেন তাঁদের কাছের মানুষটি। এতেই ফের বিভ্রান্তি ছড়ায়। তবে বৃহস্পতিবার হাসপাতাল সূত্রেই খবর মেলে, এখনও লড়ছেন বিক্রম।
পরিবারের এক ঘনিষ্ঠ সদস্য অভিনেতার শারীরিক অবস্থার খবরাখবর ভাগ করে নেন। জানান, অবস্থা আরও আশঙ্কাজনক। বিক্রমের শরীরের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ কাজ করা বন্ধ করে দিচ্ছে একে একে।
গত ১৫ দিন ধরে পুণের দীননাথ মঙ্গেশকর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ‘হম দিল দে চুকে সনম’-খ্যাত অভিনেতা। হাসপাতালের চিকিৎসকরা এত দিন সংবাদমাধ্যমের কাছে কোনও তথ্য জানাতে চাননি। কিন্তু মৃত্যুর খবর রটার পর চিকিৎসকরাও বয়ান দিলেন বৃহস্পতিবার। সূত্রের খবর, হাসপাতালে ভর্তি করানোর পর অভিনেতার শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল ছিল। কিন্তু গত কয়েক দিন ধরেই বিক্রমের শারীরিক অবস্থার ক্রমশ অবনতি ঘটেছে। এখন ভেন্টিলেশনে রয়েছেন ৮২ বছরের অভিনেতা। প্রসঙ্গত, সম্প্রতি টলিউডেও একই ঘটনা ঘটে। স্ট্রোক হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন অভিনেত্রী ঐন্দ্রিলা শর্মা। ২০ নভেম্বর, রবিবার তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। কিন্তু ভেন্টিলেশনে থাকাকালীনই হঠাৎ এক রাতে সমাজমাধ্যমে তাঁর মৃত্যুসংবাদের গুজব রটে যায়। পরে ঐন্দ্রিলার বন্ধু সব্যসাচী চৌধুরী সেই গুজব রটনাকারীদের ভর্ৎসনা করে ফেসবুকে লেখেন। বিক্রমের মৃত্যুসংবাদ হঠাৎ চাউর হওয়ায় একই রাস্তা নিতে হলে বিক্রমের স্ত্রীকে। তিনিও টুইটারে জানান, তাঁর স্বামী এখনও বেঁচে আছেন।
বিক্রমের পারিবারিক বন্ধু রাজেশ বললেন, “গত ২৪ ঘণ্টায় অত্যন্ত সঙ্কটজনক অবস্থায় পৌঁছে গিয়েছে বিক্রম। চিকিৎসকরা আপ্রান চেষ্টা করছেন। লড়াই করছে বিক্রমও। যদি শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়, সে খবর জানানো হবে। ওষুধে সাড়া দিচ্ছে না ও। যদি সেরে ওঠে, এখন সেই অপেক্ষা।”
বিক্রম তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে পুণেতে থাকেন। ‘হম দিল দে চুকে সনম’ ছবিতে ঐশ্বর্যা রাই বচ্চনের বাবার চরিত্রে অভিনয় করে প্রচারের আলোয় চলে আসেন বিক্রম। এক সময়ের মরাঠি ছবির দাপুটে এই অভিনেতা পাল্লা দিয়ে হিন্দি ছবিতেও অভিনয় করেছেন। ‘দিল সে’, ‘ভুলভুলাইয়া’, ‘হিচকি’, ‘মিশন মঙ্গল’-সহ আরও ছবিতে তাঁর অভিনয় আজও দর্শকের মনে রয়েছে। মরাঠি ছবি ‘অনুমতি’-তে অভিনয়ের জন্য পেয়েছেন সেরা অভিনেতার জাতীয় পুরস্কার।
১৯৭৬ সালে মাত্র ২৬ বছর বয়সে বলিউডে পা রাখেন বিক্রম। অমিতাভ বচ্চন অভিনীত ‘পরওয়ানা’ ছিল বিক্রমের প্রথম ছবি। বিক্রমকে দর্শক সম্প্রতি ‘নিকম্মা’ ছবিতে দেখেছেন। এই ছবিতে মুখ্য চরিত্রে ছিলেন শিল্পা শেট্টি এবং অভিমন্যু দাশানি। ‘হম দিল দে চুকে সনম’ ছবিতে ঐশ্বর্যা রাই বচ্চনের বাবার চরিত্রে অভিনয় করে প্রচারের আলোয় চলে আসেন বিক্রম। ‘দিল সে’, ‘ভুলভুলাইয়া’, ‘হিচকি’, ‘মিশন মঙ্গল’-সহ আরও ছবিতে তাঁর অভিনয় এখনও দর্শকের মনে রয়েছে।