RG Kar Protest

পুজোর বাকি এক মাস, প্রতিবাদের মধ্যেই কি ‘উৎসবে ফিরছেন’ টলি তারকারা, কেমন চলছে কেনাকাটা?

খাঁ খাঁ করছে পুজোর বাজার। প্রতিবাদের পাশাপাশি পুজোর প্রস্তুতি কত দূর? আনন্দবাজার অনলাইনকে জানালেন ছোট-বড় পর্দার শিল্পীরা।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৬:৫৫
Ushasie Chakraborty, Solanki Roy, Swastika Dutta and Sourav Das share their Durga Puja plan amidst RG Kar protest situation

পুজোর কেনাকাটা কি আদৌ করছেন তারকারা! ছবি: সংগৃহীত।

আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদের মধ্যেই পুজোয় ফিরতে বলেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ৯ সেপ্টেম্বর তাঁর বক্তব্যে উঠে এসেছে ‘উৎসবে ফেরা’র আহ্বান। হাতে আর মাত্র একটি মাস। আগামী ৯ অক্টোবর দুর্গাবোধন। এ শুধু ধর্মীয় উৎসব নয়, বরং পশ্চিমবঙ্গের সব থেকে বড় উৎসব, যার জন্য অপেক্ষা করে থাকেন সমস্ত ধরনের ব্যবসায়ী। এই মরশুমেই মেপে নেওয়া হয় আগামী বছরের সম্পূর্ণ ব্যবসার তল। সাধারণত, জুলাই মাস থেকেই কেনাকাটা শুরু হয়ে যায় কলকাতার বাজারে। সেপ্টেম্বর মাসের দু’টি রবিবার পেরিয়ে গিয়েছে। হাতিবাগান থেকে গড়িয়াহাট, ছোট ব্যবসায়ীরা তেমন সুবিধা করতে পারেননি।

Advertisement

কিন্তু, কেনাকাটা কি একেবারেই হচ্ছে না? সত্যিই কি পুজোর জন্য কোনও কেনাকাটা করছেন না টলি পাড়ার ছোট-বড় পর্দার তারকারা? খোঁজ নিল আনন্দবাজার অনলাইন।

অভিনেত্রী শোলাঙ্কি রায় পুজোর কেনাকাটা নিয়ে ভাবতেই চাইছেন না এই মুহূর্তে। তিনি বলেন, “এক সময় শুধু পয়লা বৈশাখ আর পুজোয় জামাকাপড় কেনা হত সারা বছরের জন্য। এখন সারা বছর কেনাকাটা হয়। কিন্তু অভ্যাসবশত পুজোর কেনাকাটা হয়। এ বার হবে না। কেনাকাটা করার মতো মানসিক অবস্থাই নেই।”

অভিনেত্রী স্বস্তিকা দত্ত জানালেন, সত্যিই এ বার তাঁর বাড়িতে তেমন করে পুজোর প্রস্তুতি শুরু হয়নি। স্বস্তিকা বলেন, “এমনিতেই আজকাল আমি আর পুজোর জন্য আলাদা করে কিছু কিনি না। পেশাগত কারণে সারা বছরই এই সব চলতে থাকে। তবে, পরিবারের জন্য তো কেনাকাটা করতেই হয়। এ বার আমার বাবা, মা-ও নিষেধ করেছেন ওঁদের জন্য কিছু কিনতে। সত্যিই এ বার আমাদের পরিবারে পুজো নেই।”

উষসী চক্রবর্তী বলেন, “একদম কেনাকাটা করার ইচ্ছে নেই। এমনকি পুজোর সময় একটা বেড়াতে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল বহু দিন আগে নির্ধারিত। জানি না, সেখানেও যাব কি না। মানসিকতাই নেই।” তাঁর দাবি, “সর্বত্র স্থিতাবস্থা ফেরানোর চেষ্টা চলছে। তবে পুজোর এখনও এক মাস বাকি। এই ক’দিনে পরিস্থিতি কী হবে, জানি না। যেমন থাকবে, সেই অনুযায়ী কাজ করব।”

প্রতিবাদ চালিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্যও একটা স্বাভাবিক জীবনযাপনের প্রয়োজন, এমনই মনে করেন সঙ্ঘশ্রী সিংহ। অভিনেত্রী বলেন, “খালি পেটে প্রতিবাদ হয় না। সত্যিই আমাদের সকলের ওই ছোট ছোট ব্যবসায়ীদের কথাও ভাবা উচিত যিনি কাচের চুড়ি বিক্রি করেন, টিপের পাতা বিক্রি করেন। এই দুটো মাসের উপর নির্ভর করে তাঁদের বাকি দশটা মাস। ফলে খানিকটা কেনাকাটা করব।”সারা বছরের এই একটা সময় বাঙালি তার বৃহত্তর পরিবারের সঙ্গে মিলিত হয়। সঙ্ঘশ্রী জানান, “আমার শ্বশুরবাড়িতে দুর্গাপুজো হয়। সেখানকার কিছু নিয়ম রয়েছে। আত্মীয় পরিজনেদের জন্য উপহার দিতে হয়। সেগুলো তো দিতেই হবে। পুজোর দিনও আমাকে উপস্থিত থাকতে হবে, আচার মেনে। তাই কিছু কেনাকাটা হবেই। কিন্তু, তার মানে এটা নয় যে আমরা ভুলে যাব দু’মাস আগে কী ঘটে গিয়েছে। বিচারের দাবিতে পথে নামা, দাবি আদায়ের জন্য প্রতিবাদ সবই চলবে আগের মতো।”

অভিনেতা রোহন ভট্টাচার্য বলেন, “আমার নিজের বা আশপাশের মানুষের মধ্যে পুজো নিয়ে কোনও উৎসাহ দেখতে পাচ্ছি না। কেনাকাটা করার ইচ্ছেটাই নেই। তবে, পুজো হবে। হয়তো যতখানি উৎসাহে পুজো হয়, ততখানি উৎসাহ থাকবে না। অনেক মানুষের জীবিকা এর সঙ্গে জড়িত। সে দিকটা অবশ্যই ভাবতে হবে। তবে, কেউ চাইলে উৎসবে ফিরতেই পারেন।”রোহন মনে করেন আরজি কর-কাণ্ডে নিহত চিকিৎসক-পড়ুয়ার জীবন আর ফিরে পাওয়া যাবে না। কিন্তু, এই প্রতিবাদ না হলে হয়তো এমন আরও অনেকের জীবন চলে যাবে। তাই এই প্রতিবাদের বিশেষ প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। অন্য সব কিছু বাদ রেখে প্রতিবাদ চালিয়ে যেতে হবে।

অভিনেতা সৌরভ দাস বলেন, “পুজো হয়তো হবে। কিন্তু যত ক্ষণ না ন্যায়বিচার হচ্ছে, তত ক্ষণ তো প্রতিবাদ চলবেই। কেনাকাটার কথা সত্যিই এখনও মাথায় আসেনি।”

আরও পড়ুন
Advertisement