Supreme court hearing on RG Kar incident

জুনিয়র ডাক্তারদের কাজে ফিরতে হবে, সুপ্রিম নির্দেশ প্রসঙ্গে কী ভাবনা? জানালেন চিকিৎসক-শিল্পীরা

আরজি কর মামলায় মঙ্গলবার থেকে জুনিয়র চিকিৎসকদের কাজে ফেরার নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। কী ভাবছেন চিকিৎসক-শিল্পীরা?

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৬:৩২
Supreme Court directs junior doctors to resume work and Bengali doctor artists reacts

(বাঁ দিক থেকে) সিধু, বিডি মুখোপাধ্যায় এবং কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়। গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।

সোমবার সুপ্রিম কোর্টে আরজি কর মামলার শুনানিতে আন্দোলনরত জুনিয়র চিকিৎসকদের কর্মবিরতি প্রত্যাহার করা নির্দেশ দিয়েছে প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের অধীনস্থ বেঞ্চ। মঙ্গলবার বিকেল ৫টার মধ্যে চিকিৎসকদের কাজে যোগ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে কী ভাবনা এই আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত চিকিৎসক-শিল্পীদের, জানার চেষ্টা করল আনন্দবাজার অনলাইন।

Advertisement

শুরু থেকেই আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে জুনিয়র ডাক্তারদের পাশে ছিলেন বর্ষীয়ান অভিনেতা চিকিৎসক বিডি মুখোপাধ্যায়। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ তাঁকে হতবাক করেছে। তাঁর অনুমান, ‘‘হাইকোর্ট কিন্তু সিবিআইকে মামলা হস্তান্তর করে সুন্দর পদক্ষেপ করে। সুপ্রিম কোর্ট স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে মামলাটি যে দিন নেয়, তার পর থেকেই মনে হচ্ছিল, এ রকম কিছু হতে পারে।’’

বিডি মুখোপাধ্যায়ের মতে, প্রতিবাদ প্রত্যেক মানুষের ব্যক্তিগত অধিকার। সুপ্রিম কোর্টের এই নির্দেশের নেপথ্যে অন্য কোনও অভিসন্ধি রয়েছে বলেই তিনি মনে করছেন। তাঁর কথায়, ‘‘ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের সঙ্গে কপিল সিব্বলের সম্পর্ক কারও অজানা নয়। তাই এই নির্দেশ কেন দেওয়া হল, তা বেশ স্পষ্ট।’’ তবে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের ফলে আন্দোলনের তীব্রতা যে কমে যাবে, তা মানতে নারাজ বিডি মুখোপাধ্যায়। বললেন, ‘‘প্রথমে ছিল প্রতিবাদ। পরে আন্দোলন। এখন বিদ্রোহ! এটা এত সহজে থেমে যাবে না!’’ আগামী দিনে আন্দোলনের অভিমুখ কী হতে পারে, তা আলোচনাসাপেক্ষ বলেই মনে করছেন বিডি মুখোপাধ্যায়। বললেন, ‘‘জুনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে দেখা করব। এই নির্দেশের বিরুদ্ধে কী ভাবে পদক্ষেপ করা যায়, তা নিয়েও আইনজীবীর সঙ্গে পরামর্শ করব।’’

সঙ্গীতশিল্পী সিধু অবশ্য জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মবিরতি প্রত্যাহারের পক্ষে। তাঁর মতে, চিকিৎসকেরা কাজে ফিরলে যে প্রতিবাদ হবে না, সে রকম কোনও কারণ নেই। বরং চিকিৎসকেরা কাজে ফিরলে স্বাস্থ্যব্যবস্থা আরও সুষ্ঠু ভাবে পরিচালিত হবে। তবে, এ ক্ষেত্রে তাঁর অন্য পর্যবেক্ষণ রয়েছে। সিধু বলেন, ‘‘ডাক্তারদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে এর আগে সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দেয়। রাজ্য যদি তা পালন করে থাকে, তা হলে জাক্তারদের কাজে ফিরতে কোনও অসুবিধা হওয়ার কথা নয়।’’

সোমবার সুপ্রিম কোর্টে রাজ্যের আইনজীবী কপিল সিব্বল গত কয়েক দিনে বিনা চিকিৎসায় ২৩ জন রোগীর মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করেন। সিধুর মতে, চিকিৎসা ব্যবস্থার মতো পরিষেবার ক্ষেত্রে অনির্দিষ্ট কালের জন্য কর্মবিরতি চললে সাধারণ মানুষ সমস্যায় পড়তে পারেন। তাঁর কথায়, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মতো সুরক্ষা ব্যবস্থা না তৈরি হলে, কেন জুনিয়র ডাক্তারদের উপর চাপ দেওয়া হবে! সে ক্ষেত্রে তো রাজ্য সরকারের উপর চাপ আসা উচিত।’’

পরিচালক কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায় এখনই বিষয়টি নিয়ে আলাদা করে কোনও মন্তব্য করতে নারাজ। তাঁর মতে, কর্মবিরতি চলবে কি না, সে সিদ্ধান্ত জুনিয়র চিকিৎসকেরাই নেবেন। তবে পুরো বিষয়টির নেপথ্য যে নানা অভিসন্ধি চলছে, তা নিয়ে সহমত পোষণ করলেন কমলেশ্বর। তাঁর কথায়, ‘‘এটুকু বলতে পারি, আন্দোলনকে ভাঙার জন্য নানা প্রচেষ্টা চলছে। তার বিরোধিতা করা উচিত।’’

গত এক মাসে চিকিৎসক অভিনেতা কিঞ্জল নন্দ আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদ আন্দোলনের অন্যতম মুখ হয়ে উঠেছেন। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশকে কী ভাবে দেখছেন তিনি? কিঞ্জলের কথায়, ‘‘এই ধরনের কথাগুলো শোনা এবং গ্রহণ করা খুবই কষ্টের। আমাদের আন্দোলনকে অস্বীকার করা বা অসম্মান করা, এই বিষয়টাকে সাধারণ মানুষ মেনে নেবেন না।’’

সোমবার সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ পাওয়ার পর থেকেই জুনিয়র ডাক্তারেরা নিজেদের মধ্যে বৈঠকে বসেন। মঙ্গলবার থেকে তাঁরা কাজে ফিরবেন কি না, তা এই প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়া পর্যন্ত জানা যায়নি।

আরও পড়ুন
Advertisement