স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়। ছবি: সংগৃহীত।
তাঁর কাছে প্রস্তাব আসতেই থাকে। কিন্তু বেছে কাজ করতে পছন্দ করেন অভিনেত্রী স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়। ২৯তম কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচিত্র উৎসব চলছে। অতীতে একাধিক বার চলচ্চিত্র উৎসবে ছবি দেখতে এসেছেন অভিনেত্রী। যোগ দিয়েছেন আলোচনাচক্রে। তবে স্বস্তিকা এই প্রথম উৎসবে পা রাখলেন তাঁর ছবি নিয়ে। একটি ছবি নয়, উৎসবে দেখানো হচ্ছে স্বস্তিকা অভিনীত দু’টি ছবি।
চলচ্চিত্র উৎসবের বাংলা প্যানোরামা বিভাগে দেখানো হচ্ছে অভিজিৎ শ্রীদাস পরিচালিত ‘বিজয়ার পরে’ এবং রাজেশ রায় পরিচালিত ছবি ‘মাতৃপক্ষ’। দু’টি ছবিতেই অভিনয় করেছেন স্বস্তিকা। প্রথম কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসবে আসার অভিজ্ঞতা মনে পড়ে? নন্দন চত্বরে একান্তে আনন্দবাজার অনলাইনকে স্বস্তিকা বললেন, ‘‘যত দূর মনে পড়ছে, ২০১১ সালে বাবার প্রথম ছবি ‘সংসার সীমান্তে’র বিশেষ প্রদর্শন ছিল। সে বার ছবিটা দেখতে এসেছিলাম।’’ ইন্ডাস্ট্রিতে রয়েছেন দীর্ঘ দিন। কিন্তু এত দিন পরে ‘কিফ’-এ ছবি দেখানো হচ্ছে। মনের মধ্যে কী চলছে? অভিনেত্রী বললেন, ‘‘আমি খুবই অবাক হয়েছি। ছবিগুলো উৎসবে জমা দেওয়ার পর কোনও খবর পাচ্ছিলাম না। তার পর পরিচালকদের থেকে হঠাৎ জানতে পারলাম। আমি খুব খুশি।’’
চলতি বছরেই ‘শিবপুর’ ছবিতে স্বস্তিকার অভিনয় দর্শকদের পছন্দ হয়েছিল। তার পর চলচ্চিত্র উৎসবে দু’টি ছবির নির্বাচন। এই বছরটাকে কী ভাবে দেখছেন তিনি? অভিনেত্রী বললেন, ‘‘আমি ভাল-মন্দ বিচার করি না। কোনও বছর বেশি, তো কোনও বছরে কম কাজ করি। তা ছাড়া, এখন শুধু ভাল কাজই করতে চাই।’’ তা হলে বাকিদের সঙ্গে প্রতিযোগিতা? স্বস্তিকার উত্তর, ‘‘আমার কাছে যা প্রস্তাব আসে, সব করলে হয়তো আমাকে সারা বছর শুটিং করতে হবে। প্রত্যেক মাসে ছবি মুক্তি পাবে, দু’দিন পর হারিয়েও যাবে! আমি সেটা চাই না।’’
তবে ছবি নির্বাচনের ক্ষেত্রে চিত্রনাট্য এবং চরিত্রকে মাথায় রাখেন বলে জানালেন স্বস্তিকা। তাঁর কথায়, ‘‘‘বিজয়ার পরে’ ছবিতে আমার উপস্থিতি কম। গল্পের কেন্দ্রে রয়েছেন দীপঙ্কর জেঠু (দীপঙ্কর দে) এবং মমতা শঙ্কর। কিন্তু শুধু মুখ্যচরিত্র ছাড়া অভিনয় করব না, এ রকম ভাবনা আমার নেই। কারণ, এখন সিনেমা অনেকটাই বদলে গিয়েছে।’’ যেটুকু জায়গা পাচ্ছেন, তার মধ্যেই চরিত্রকে কী ভাবে দর্শকদের মনে গেঁথে দিতে পারেন, সেই ব্যাপারেই বেশি মনোযোগ দেন স্বস্তিকা। উদাহরণ দিতে গিয়ে অভিনেত্রী তাঁর জনপ্রিয় হিন্দি ওয়েব সিরিজ় ‘পাতাললোক’-এর প্রসঙ্গ উত্থাপন করলেন। বললেন, ‘‘ওই সিরিজ়ে আমরা প্রায় দুশো জন কাজ করেছিলাম। তার মধ্যে যদি আমার চরিত্রটা দর্শকের মনে থাকে, তার মানে আমাকে ততটাই বেশি পরিশ্রম করতে হচ্ছে। কে মুখ্যচরিত্রে, কে পার্শ্বচরিত্রে, এ সব নিয়ে এখন কেউ ভাবে না।’’
এই বছর থেকে উৎসবে বাংলা প্যানোরামা বিভাগে থাকছে পুরস্কার। দেখানো হচ্ছে স্বস্তিকার দু’টি ছবি, তাই সুযোগও বেশি। পুরস্কার পেলে কী করবেন? অভিনেত্রী হেসে বললেন, ‘‘একটি ছবিতে আমি শহরের মহিলার চরিত্রে। অন্য ছবিতে একদমই মেঠো চরিত্র, যেখানে আমার সংলাপ বলার ধরনটাও আলাদা। কোনও একটা ছবি পুরস্কার পেলে খুব খুশি হব।’’