একের অধিক বিয়ে কি অন্যায়! আশিসের বিয়ে প্রসঙ্গে কী বললেন শ্রাবন্তী, রূপাঞ্জনা? ছবি: সংগৃহীত।
তাঁর বয়স ৬০ ছুঁইছুঁই। এই বয়সে নতুন ভাবে কিছু শুরু করার কথা হয়তো অনেকে ভাবতেই পারে না। কিন্তু এই বয়সেই নতুন করে জীবনকে সাজানোর ভাবনা ভেবেছেন অভিনেতা আশিস বিদ্যার্থী। দীর্ঘ ২২ বছরের দাম্পত্যে ইতি টেনে সংসার পেতেছেন নতুন ভাবে। ২৫ মে রূপালি বড়ুয়াকে বিয়ে করেন আশিস। তার পর থেকে দফায় দফায় কটাক্ষের সম্মুখীন হতে হয়েছে তাঁকে। আশিস প্রথম নন। টলিউডেও এমন অনেক কাহিনি আছে। ব্যক্তিগত সম্পর্কের জন্য বার বার দর্শকের কটাক্ষের মুখোমুখি হয়েছেন অভিনেত্রী শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায়। স্বামী রাজীব কুমারের সঙ্গে আইনি বিচ্ছেদের পর আরও দু’বার সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন নায়িকা। বিয়েও করেছিলেন। তা নিয়ে দর্শকদের কটাক্ষের শিকার হতে হয়েছিল তাঁকে। শুধু কি শ্রাবন্তী?
বেশ কিছু দিন আগে নিজের সম্পর্কের কথা ঘোষণা করেন অভিনেত্রী রূপাঞ্জনা মিত্র। তাঁর প্রথম বারের বিচ্ছেদ হয়েছে অনেক দিন হল। এক ছেলের মা তিনি। তার পর বয়সে ছোট কারও সঙ্গে প্রেম! এ কথা প্রকাশ্যে আসতেই চারিদিকে শুরু হয়েছিল সমালোচনা। আশিসের ক্ষেত্রেও পরিস্থিতি খানিকটা এমনটাই। এই পরিস্থিতিতে কী বললেন শ্রাবন্তী, রূপাঞ্জনারা?
একের অধিক যদি কেউ বিয়ে করেন? নতুন করে জীবন শুরু করতে চান, সেই ভাবনা কি অন্যায়? আনন্দবাজার অনলাইনের তরফে যোগাযোগ করা হয় শ্রাবন্তীর সঙ্গে। তাঁর স্পষ্ট জবাব, “আমি নিজের শর্তে বাঁচি। আর অন্যের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে তাঁরাই চর্চা করেন, যাঁদের জীবনে ফাঁকা সময় অনেক।” নায়িকা আরও যোগ করেন, “তাঁর খারাপ সময় তো পাশে দাঁড়িয়ে কেউ সাহায্য করেনি। তা হলে সে যদি ভাল থাকার চেষ্টা করেন, তা হলে অন্য জনের এত সমস্যা কিসের? উনি ভাল থাকতে চেয়েছেন। এটা তো অন্যায় নয়। খুব ভাল যে, ৫৭ বছর বয়সে নতুন ভাবে জীবন শুরু করার কথা ভেবেছেন। আমাদের তো প্রশংসা করা উচিত।”
একই সুর রূপাঞ্জনার গলায়। অভিনেত্রীর জীবনসঙ্গী তাঁর থেকে ছ’বছরের ছোট। পাহাড়েই নিজেদের আংটিবদল সারেন তাঁরা। সে ছবি প্রকাশ্যে আসার পরেও অনেক কটাক্ষের মুখে পড়তে হয়েছিল তাঁকে। আশিসের বিয়ে প্রসঙ্গে রূপাঞ্জনা আনন্দবাজার অনলাইনকে বলেন, “মানুষের মননটা জানা জরুরি। তাঁরা যদি সকাল থেকে উঠে নেতিবাচক বিষয় খুঁজে খুঁজে বার করার চেষ্টা করেন, তা হলে বুঝতে হবে তাঁদের জীবনটাই আসলে এমন। কিছু হলেই তাঁরা ভয় পান। এগুলোতে বেশি না গুরুত্ব না দেওয়াই ভাল। এটা তো তাঁর জীবন। তিনি ভাবছেন। আশিসবাবুর সঙ্গে আমার এক বারই আলাপ হয়েছিল। খুবই ভাল মানুষ বলে মনে হয়েছে। আমি যখন নিজের সম্পর্কের কথা ঘোষণা করি, তখনও অনেকে নানা মন্তব্য করেছিলেন। তবে তাঁরাই এখন ভাল কথা বলেন। সুতরাং, আমি আশিসবাবুকে শুভেচ্ছা জানাব নতুন জীবনের জন্য।”
আশিস, রূপাঞ্জনা, শ্রাবন্তীই শুধু নন অতীত এবং বর্তমান থেকে এমন অনেক উদাহরণ দেওয়া যায়, যাঁরা নিজেদের শর্তে বেঁচেছেন। কিশোর কুমার থেকে সঞ্জয় দত্ত, সইফ আলি খান থেকে মাসাবা গুপ্ত রয়েছেন তালিকায়।
কটাক্ষ প্রসঙ্গে মুখ খুলেছেন আশিসও। তাঁর সাফ কথা, ‘‘ভাল থাকার অধিকার সবার আছে।’’ একটি দীর্ঘ ভিডিয়োয় নিজের কথা বলেছেন আশিস। তিনি বলেন, “দিনের শেষে আমরা সবাই কিন্তু খুশি থাকতে চাই। আর এই খুশির জন্য ২২ বছর আগে আমি ও পিলু একে অন্যের হাত ধরেছিলাম। আমাদের জীবনে আমাদের সন্তান অর্থ আসে। তারও এখন বয়স ২২। কিন্তু এত সুন্দর একটা সময় কাটানোর পর আমরা বুঝতে পারি আমরা ভাল নেই। আমরা বুঝতে পারি, আমরা ভবিষ্যৎটা আলাদা ভাবে দেখি। বিয়ে টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করেছি।” কিন্তু শেষমেশ কোনও টোটকাই কাজে আসেনি। তখন তাঁরা আলাদা ভাবে পথ চলার সিদ্ধান্ত নেন।