অভিনেত্রী ইন্দ্রাণী হালদারকেও ‘কাস্টিং কাউচ’-এর শিকার হতে হয়েছিল? ছবি: সংগৃহীত।
‘কাস্টিং কাউচ’ এই শব্দটা লাইট, ক্যামেরা, অ্যাকশনের জগতে ভীষণই চর্চিত। বহু নায়ক-নায়িকা লালসার শিকার হয়েছেন প্রযোজক-পরিচালকদের। এই গল্প কিন্তু নতুন নয়। কানাঘুষো এই সব গল্প শুনলেও প্রকাশ্যে খুব কম নায়িকারা এই বিষয়ে মুখ খুলেছেন। হালে ‘মিটু’ মুভমেন্টের জন্য যদিও বেশ কিছু ঘটনার কথা জানা গিয়েছে। জানেন কি, এমন ঘটনার সম্মুখীন হতে হয়েছিল টলিপাড়ার জনপ্রিয় অভিনেত্রী ইন্দ্রাণী হালদারকেও?
টালিগঞ্জ ইন্ডাস্ট্রিতে তাঁর হয়ে গেল প্রায় ৩৪ বছর। অভিজ্ঞতার ঝুলি পরিপূর্ণ। সেই ঝুলি থেকেই বার হল এমনই এক তিক্ত স্মৃতি। মুম্বই যাওয়ার স্বপ্ন কার থাকে না? তেমনই কেরিয়ারের শুরুতে মুম্বইয়ে কাজের সুযোগ এসেছিল তাঁরও। সেই ছবির প্রযোজক কী করেছিলেন, সেই ভয়াবহ ঘটনা এখনও তাঁর স্মৃতিতে টাটকা। সেই ঘটনার বিবরণ দিতে গিয়ে এখনও হাত-পা কেঁপে ওঠে তাঁর।
ইন্দ্রাণী বলেন, “তখন আমার বয়স ২০। আমার সঙ্গে শুটিংয়ে মা-বাবাও যেতেন। শুটিংয়ে প্রথম শিডিউলে আমার মা গিয়েছিলেন। দু’জনকে ভাল হোটেলে রাখা হয়। কিন্তু সমস্যাটা হয় দ্বিতীয় শিডিউলে। সেই সময় আমার সঙ্গে বাবার যাওয়ার কথা। আমার টিকিটটা সকালে কাটা হল। আর বাবারটা বিকেলে। শুধু তাই নয়, এ বারে যে হোটেলে আমাদের থাকতে দেওয়া হয়েছিল সেটা দেখেই মনে সন্দেহ দানা বাঁধে।” এই কথা বলতে বলতেই হাত-পা রীতিমতো কাঁপতে শুরু করে ইন্দ্রাণীর। তিনি আরও যোগ করেন। বলেন, “যে দিন আমরা মুম্বই পৌঁছই, সে দিন আমার কোনও কাজই ছিল না। আচমকাই দুপুরে প্রযোজক ফোন করে বলেন দুপুরে আমার সঙ্গে কথা বলতে আসবেন। তা শুনেই আমি ঘাবড়ে যাই। বুঝতে পারছিলাম না, কেন উনি আসছেন। তার পর সময় গড়াতেই সবটা স্পষ্ট হল। উনি রুমে ঢুকেই আমার সঙ্গে অসভ্যতা করার চেষ্টা করেন। নিজের জামাকাপড় খোলার চেষ্টা করেন। আমার হাত ধরেও টানাটানি শুরু করেন। এক মুহূর্তে আমার মনে হচ্ছিল, আমায় ধর্ষিতা হতে হবে? হাত-পা সহায় ছিল। সেই যাত্রায় প্রযোজকের স্ত্রীর ফোন আমায় বাঁচিয়ে নেয়। তবে সেই প্রযোজক বলেছিলেন, আমার জীবনে কখনও উন্নতি হবে না। বড় বড় নায়িকা আপস করতে দু’মিনিটও ভাবেন না। কিন্তু আমি কখনও আপস করতে রাজি ছিলাম না।”
এই ঘটনার পরও কিন্তু পরবর্তী কালে মুম্বইয়ের ধারাবাহিকে দর্শক দেখেছেন ইন্দ্রাণীকে। কয়েক যুগ পেরিয়ে এখন তিনি সফল। কিছু দিনের মধ্যেই শুরু হবে তাঁর নতুন রিয়্যালিটি শো। এত কিছুর পরেও কিছু কিছু স্মৃতি রয়ে যায় মনের কোণে।