Jisshu Sengupta

Baba Baby o...: ‘বাবা বেবি ও…’ ছবির একরত্তি নায়করা ১৬ দিন ধরে শ্যুটিং করতে করতে যিশুকেই নিজেদের বাবা ভেবেছিল

ছবির সেট থেকে শ্যুটের সময়— সব কিছুই তৈরি হয়েছিল কাইজান আর অভিরাজের কথা ভেবে। উইন্ডোজের পক্ষ থেকে ছবির সহযোগী পরিচালক দ্বীপায়ন সাহা আর শ্যামলী এক টানা বাচ্চাদের বাড়িতে হাজির থাকতেন।

Advertisement
স্রবন্তী বন্দ্যোপাধ্যায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ জুলাই ২০২১ ১৭:৫৫
‘বাবা বেবি ও…’  অন্যতম দুই নায়ক।

‘বাবা বেবি ও…’ অন্যতম দুই নায়ক।

যিশু সেনগুপ্ত ছবির নায়ক। মুম্বই-কলকাতা-হায়দরাবাদ। তাঁকে পাওয়া মুশকিল। কলকাতায় ছবির শ্যুটের জন্য তাঁর সময় পাওয়া আরও মুশকিল। কিন্তু তিনি সম্প্রতি এমন এক ছবিতে কাজ করলেন যেখানে তাঁর সময় অনুযায়ী শ্যুটের দিনক্ষণ ঠিক হল না! উল্টে যিশু সেনগুপ্তকেই তাদের ‘মুড’ অনুযায়ী চলতে হল।

তারা কারা?

নাম তাদের কাইজান কামাল আর অভিরাজ সাহা। না, তারা কেউ বিখ্যাত তারকা নন। তারা সাড়ে সাত মাসের দুই শিশু। অরিত্র মুখোপাধ্যায় পরিচালিত ‘বাবা বেবি ও…’ ছবির অন্যতম দুই নায়ক।

সাড়ে সাত মাসের বাচ্চাদের নিয়ে ১৬ দিনে শ্যুট শেষ করলেন কী করে? প্রশ্নটা শুনেই পরিচালক অরিত্র মুখোপাধ্যায় বললেন, “প্রত্যেক দিন সকালে উঠতাম আর ভাবতাম আজ যদি ওদের মুড ভাল না থাকে! সর্বনাশ হয়েছে। সব তো পিছিয়ে যাবে! ওদের জন্য সেট তৈরি করে কাজ করেছিলাম আমরা।”

এই ছবির লেখক, চিত্রনাট্যকার জিনিয়া সেন অবশ্য বললেন, “অডিশনের সময় আমরা বুঝেছিলাম ওরা কোনও নির্দেশ দিলে তাতে সাড়া দেয়। ছবিতে একটা দৃশ্য আছে রেশমিদি একটা বাচ্চাকে তেল মালিশ করছে। ওই দৃশ্যে বাচ্চাটা আপনা থেকেই যে ভাবে খিলখিলিয়ে হাসছিল তা অবিশ্বাস্য!”

জিনিয়ার মনে আছে, বাচ্চাদের নিয়ে ছবির কথা শুনে যিশু বলেছিলেন, ‘‘শুধু বাচ্চাদের জন্য কিন্তু আলাদা করে ৪ দিন হাতে রাখিস।’’ জিনিয়া সেই কথা মনে করে বললেন, “ওদের জন্য তো আলাদা কোনও দিন প্রয়োজনই হয়নি, বরং ওরা বড়দের সঙ্গে নির্দিষ্ট সময়েই শ্যুট শেষ করেছে। ইউনিটের সবাইকে ওরা পরিবারের মতো ভাবত।”

Advertisement
কোভিডের সময় অতিরিক্ত সতর্কতা মেনে হয়েছে ছবির কাজ।

কোভিডের সময় অতিরিক্ত সতর্কতা মেনে হয়েছে ছবির কাজ।

ছবির সেট থেকে শ্যুটের সময়— সব কিছুই তৈরি হয়েছিল কাইজান আর অভিরাজের কথা ভেবে। উইন্ডোজের পক্ষ থেকে ছবির সহযোগী পরিচালক দ্বীপায়ন সাহা আর শ্যামলী এক টানা বাচ্চাদের বাড়িতে হাজির থাকতেন। শুধু বাচ্চাদের লক্ষ্য করতেন তারা। অরিত্র জানালেন, “ওরা কখন খায়, কখন ঘুমোতে যায়, কী করলে আনন্দ পায়— তার একটা চার্ট তৈরি করা হয়েছিল। সেটে ওদের ঘর তৈরি করা হয়েছিল। সেখানে ওরা খেত, ঘুমত, রেগে যেত। এমনকি দু’জনে খেলতে খেলতে ভাব করেছিল দু’জনের সঙ্গে।”
তবে দু’জন বন্ধু হলে কী হবে? এক জন বল ভালবাসত তো আর এক জন সফট টয়। সব কিছুই সেটে মজুত থাকত। দু’জনের মিলও ছিল। দু’জনেই দাড়িওয়ালা লোক দেখলে ভয় পেয়ে যেত।

অরিত্র সে বিষয় বলতে গিয়ে বললেন, “এই ছবিতে তো দাড়িওয়ালা লোক ছিল। কী করব! শেষে আমি দাড়িওয়ালা চরিত্রের পোশাক পরতাম। তখন বাচ্চারা ক্লোজ শর্ট দিত”।

এই কোভিডের সময় অতিরিক্ত সতর্কতা মেনে প্রযোজনা সংস্থা উইন্ডোজ এই ছবির কাজ করেছিল। বাচ্চাদের বাইরে নিয়ে গিয়ে শ্যুট করা হয়নি। বাচ্চাদের ব্যবহৃত চাদর, বালিশই সেটে ব্যবহার করা হয়েছিল। অরিত্র বললেন, “ওরা সেটে আসার আগে সব স্যানিটাইজ করা হত। আমাদের ইউনিট এবং ওদের বাবা-মায়েরা খুব সহযোগিতা করেছিলেন। বাচ্চারা সেটে এলে কেউ কথা বলত না, পাছে ওদের মন অন্য দিকে চলে যায়!”

বাচ্চাদের নিয়ে এত কম সময়ে অতিমারিকালে শ্যুট করার কথা ভাবলেন কী করে? প্রযোজক শিবপ্রসাদ বললেন, “অরিত্র আমাদের ছবি ‘রামধনু’, ‘হামি’-তে কাজ করেছে। বাচ্চা নিয়ে কাজ করতে ও পারবে জেনেই এই ছবি করার কথা ভেবেছি। তবে টলিপাড়ায় এত কম বয়সের নায়কদের নিয়ে এত দিন ধরে আমি আগে কাজ করিনি। সে এক দারুণ অভিজ্ঞতা!”

৪০ বছরের এক ব্যক্তিকে নিয়ে এই ছবির গল্প। তিনি বিয়ে করবেন না বলেই ঠিক করেন। তবে তিনি বাবা হতে চেয়েছিলেন। আর তাই সারোগেসির মাধ্যমে যমজ সন্তানের বাবা হন। পরবর্তীকালে ওই দুই সন্তানের বাবা (মেঘ) একটি মেয়ের প্রেমে পড়েন। যাঁর নাম বৃষ্টি। ছবিতে মেঘের ভূমিকায় যিশু সেনগুপ্ত। আর বৃষ্টির ভূমিকায় সোলাঙ্কি রায় অভিনয় করেছেন।

Advertisement
আরও পড়ুন