কাঞ্চন-শ্রীময়ী। ছবি: সুমন সাহা।
এটাই প্রথম জামাইষষ্ঠী।
কাঞ্চন-শ্রীময়ীর বিয়ের বছর ঘোরেনি। এ বার ছোট মেয়ে-জামাইকে আদর করে জামাইষষ্ঠী খাওয়ালেন শ্রীময়ীর মা। লুচি, ছোলার ডাল, কাতলা মাছের মাথা থেকে পোলাও, মাংস— সবই ছিল পাতে সাজানো। শেষ পাতে পায়েস, দই, মিষ্টি।
কিন্তু এমন আয়োজনের মধ্যেই কি শোনা গেল বিচ্ছেদের সুর!
বিয়ের পর থেকে এখনও মধুচন্দ্রিমায় নিয়ে যেতে পারেননি কাঞ্চন। তাঁর শুধু কাজ আর কাজ। এই ক’দিনেই একাকিত্বে ভুগতে শুরু করেছেন শ্রীময়ী। এমন পরিস্থিতি চলতে থাকলে নাকি বিচ্ছেদের কথাও ভাবতে পারেন তিনি। মজার ছলেই বললেন অভিনেত্রী।
কিন্তু স্বামীর নাম যখন কাঞ্চন, তখন অভিযোগ করে পার পাওয়া মুশকিল। তাই কাঞ্চন বেঁধে ফেললেন কথার জালে, ‘‘তুমি আমার মধু, আকাশে আছে চাঁদ, এইখানেই মধুচন্দ্রিমা।’’ কিন্তু শুকনো কথায় চিঁড়ে ভেজার নয়। আদুরে গলায় শ্রীময়ী জানালেন, তিনি উপহার পেতে ভালবাসেন। তা সে যত সামান্য উপহারই হোক না কেন, তাঁকে নিয়মিত চমকে দিতে হবে, এমনটাই চান শ্রীময়ী। কিন্তু কাঞ্চন যে সব ভুলে যান! জন্মদিন বা অন্য কোনও বিশেষ দিনে উপহার দেওয়ার কথা মনেই রাখতে পারেন না।
আর এই সব কিছুর মধ্যে বসে মিটিমিটি হাসছেন শাশুড়িমা। ছোট জামাইকে বিশেষ ভাবে ধুতি-পাঞ্জাবি উপহার দিয়েছেন তিনি। সে কথা নিজেই জানিয়েছেন কাঞ্চন। পাশাপাশি এটা জানিয়ে দিতেও ভোলেননি, মেয়ে যতই অভিযোগ তুলুন, মা-বাবার জন্য উপহার দিতে ভোলেননি কাঞ্চনও। অভিনেতা বলেন, ‘‘বয়স যত বাড়ে, উপহার দেওয়ার মানুষের সংখ্যা কমে যায়। তাই জামাইষষ্ঠীর দিনে শ্বশুর-শাশুড়িকে উপহার দেওয়া দরকার।’’
শ্রীময়ীদের বাড়িতে জামাইষষ্ঠী মানে শুধুই ভূরিভোজ নয়। বরং সেখানে রয়েছে আরও বিশেষ কিছু রীতিনীতি। জামাইয়ের হাতে তুলে দিতে হয় কাঁঠাল পাতায় পাঁচ ফল, নতুন জামাকাপড় তো বটেই, তার পাশাপাশি হাতে বেঁধে দিতে হয় হলুদ সুতো, আর পাখার বাতাস করে শাশুড়ি বলেন, ‘ষাট্ ষাট্ ষাট্’।
তবে শুধু শাশুড়ি নন। কাঞ্চনের প্রাপ্তিযোগ ভাল। তাই আসানসোল থেকে ছোট জামাইয়ের জন্য এসেছেন মাসিশাশুড়িও। শ্রীময়ী বলেন, ‘‘আসলে আমার মা-মাসিরা চার বোন। সকলেরই ছেলে, শুধু আমার মায়ের দুই মেয়ে। তাই মাসি চেয়েছিল এই জামাইষষ্ঠীতে যোগ দিতে।’’
আনন্দবাজার অনলাইনের আয়োজনে জামাইষষ্ঠী জমজমাট। শাশুড়ি খাইয়ে দিলেন পোলাও, কাঞ্চনের আবদারে খাওয়ালেন ছানার কোফতা। আর এরই মধ্যে নাকি কাঞ্চন মাথা খেতে শুরু করেছেন শ্রীময়ীর। তাই বিশেষ ভাবে কাঞ্চনকে মাছের মাথা খাইয়ে দিলেন শ্রীময়ী নিজের হাতে। বাদ যান না কাঞ্চনও, শ্রীময়ীকে পোলাও খাওয়ানোর সময় বোঝা গেল, কতটা যত্নশীল তিনি।
সবই মধুর, কিন্তু ষষ্ঠীর সকালেও একের পর এক কাজ রেখেছেন নতুন জামাই। তা নিয়ে অভিযোগ রয়েছে শাশুড়িমায়েরও। কাঞ্চনকে শেষ পর্যন্ত কথা দিতে হয়েছে বিকেলে ফিরেই যাবেন শাশুড়ির কাছে। তত ক্ষণ ফলার করেই অপেক্ষা করবেন শ্রীময়ীর মা। সন্তানের মঙ্গল কামনায় এই তো রীতি।