Rampurhat Murder

Sreelekha Mitra: মুখ্যমন্ত্রীকে চটালে পুরস্কার পাবে না, অগ্নিদগ্ধ বগটুই নিয়ে চুপ ইন্ডাস্ট্রি: শ্রীলেখা

শুনলাম, জুন নাকি ব্যস্ত, তাই কথা বলতে পারছেন না। নির্বাচনের সময় তো গ্রামে গ্রামে ঘুরে প্রচার করেছেন। এখন?

Advertisement
শ্রীলেখা মিত্র
শ্রীলেখা মিত্র
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ মার্চ ২০২২ ১৫:০৮
রামপুরহাটের হত্যাকাণ্ড নিয়ে লিখলেন শ্রীলেখা

রামপুরহাটের হত্যাকাণ্ড নিয়ে লিখলেন শ্রীলেখা

কাল থেকে বারবার রামপুরহাটের খবরগুলো চোখের সামনে ভাসছে। শিশুদের জুতো বাড়ির বাইরে পাওয়া গিয়েছে! শিশু-সহ আট মহিলা! কী দোষ করেছিল তারা? এ ভাবে মেরে ফেলা হল? আঁতকে আঁতকে উঠছি! এ বার আমি কিছু বললেই বা লিখলেই বলা হবে, ‘শ্রীলেখা বিস্ফোরণ ঘটাল!’, ‘শ্রীলেখা বোমা ফাটাল!’ আক্ষরিক অর্থে যেখানে বোমা ফাটিয়ে এতগুলি মানুষকে হত্যা করা হল, সেখানে আমার কথা বলাটাই অন্যায়? আমি তো সত্যি কথা বলছি। অবাক হই তাঁদের দেখে, যাঁরা ক্ষমতায় বসে মুখে কুলুপ এঁটে রয়েছেন! বুঝতে পারি, সাধারণ মানুষের হয়ে কথা বললে তো পুরস্কার বিতরণী উৎসবে মঞ্চে উঠে উত্তরীয় পরা যাবে না বা পরানো যাবে না। অন্যায়ের বিরোধিতা করলে তো চলচ্চিত্র উৎসবের মুখ হওয়া যাবে না। তাই আমাদের ইন্ডাস্ট্রির কাছ থেকে আমি কিছুই আশা করি না। তাঁরা নির্বাচনে জিতে নিজের আবাসনে ঢুকে তালা আটকে দেন। চার দেওয়ালের বাইরের জগতে কী ঘটছে, তাতে কিছুই যায় আসে না। তাই ইন্ডাস্ট্রির নীরবতায় আমি অভ্যস্ত।

কিন্তু সাধারণ মানুষ? যাঁরা ফেসবুকে এত বড় বড় পোস্ট করেন, তাঁরা কই? সবাই চুপ কেন? প্রশাসনের এত বড় গাফিলতি কারও নজরে পড়ছে না? ফেসবুকে নিজের বড়াই করা ছাড়া আর কোনও দায় নেই এই সমাজের প্রতি? যাঁরা ‘দ্য কাশ্মীর ফাইলস’ দেখে কেঁদেছেন, এই ঘটনা দেখে তাঁদের বুক কাঁপছে না? এই ঘটনা নিয়ে ছবি বানানো হলে তখন লোকের চোখে জল আসবে।
অন্য দিকে তৃণমূলের বুদ্ধিজীবীরা কি এখনও কলকাতার রাস্তায় যেতে যেতে 'দিদি'র পোস্টার বা ব্যানার দেখে গর্ব বোধ করতে পারে?

শুনলাম, জুন মালিয়া নাকি ব্যস্ত, তাই কথা বলতে পারছেন না। নির্বাচনের সময়ে তো গ্রামে গ্রামে ঘুরে প্রচার করেছেন। এখন? আনিস খানের মৃত্যুর পরে পরমব্রত চট্টোপাধ্যায় টুইট করেছিলেন, ‘হত্যাকারীরা কোন দলের, নিহত কোন দলের ছিলেন , এইসব যুক্তি তক্কো তথ্য নিষ্প্রয়োজন মনে করছি এক্ষেত্রে, এবং এগুলি নির্বিশেষে আনিস খানের নারকীয় হত্যাকাণ্ডের ঘটনার তীব্র নিন্দা করছি। এই ঘটনার বিচার এবং অপরাধীদের আইনানুগ শাস্তি হওয়া দরকার।’ কেন হত্যাকারীর দল নিষ্প্রয়োজন? এ বারও কেন তিনি গর্জে উঠছেন না এই হত্যাকাণ্ডের পর? প্রশাসন নিয়ে চুপ কেন তিনি?

Advertisement
আরও পড়ুন:
আরও পড়ুন:

যাঁরা সাধারণ মানুষের জন্য ভাবেন না, তাঁরা ছবি বানাবেন? অভিনয় করবেন? নাচ করবেন? গান করবেন? শিল্প করবেন?

না, সত্যিই আর মানবজাতির প্রতি আস্থা ভরসা নেই। অনেকেই তো আমায় জিজ্ঞাসা করেন, কেন আমি ইন্ডাস্ট্রির লোকের সঙ্গে মিশি না। তার উত্তর হল, মানুষ যদি এমন হয়, তবে আমি তাদের ভালবাসি না। তাই জন্যেই কুকুরদের নিয়ে আমার গণ্ডি। ভাল আছি এ ভাবেই। এই হলোকাস্ট বা হত্যালীলার পরেও এই মানুষগুলো চুপ? তা হলে আমিও আর তাঁদের সঙ্গে নিজেকে জুড়তে চাই না।
দলে দলে প্রাণ চলে যাচ্ছে, এ দিকে গণতন্ত্রের কথা বলা হচ্ছে। গণতন্ত্র তো কেবল একটি পোশাকি নাম। প্রশাসনের মদত না থাকলে এ ভাবে বাড়ি বাড়ি জ্বলে উঠতে পারত একটা গ্রামে? সাধারণ মানুষকে বলতে চাই, দেখুন কাদের জিতিয়েছেন! আপনারাও ফোঁস করতে ভুলে গিয়েছেন।
আজ আমি বলে দিচ্ছি, আমি সিপিএম-এর সমর্থক হতে পারি, কিন্তু সেই দল যদি কোনও ভুল করে, আমি চুপ করে থাকব না। আমি অন্যায়ের প্রতিবাদ করব! আগেও করেছি, পরবর্তী কালেও করব। লিখে দিলাম। শ্রীলেখা মিত্র বিক্রি হয়নি এখনও।

আরও পড়ুন
Advertisement