শ্রীলেখা মিত্র
কুকুর দত্তক নিলে ‘ডেট’-এ যাবেন। এমনই শর্ত রেখেছিলেন শ্রীলেখা মিত্র। বামপন্থী অভিনেত্রী বেছে নিয়েছিলেন এক জন রেড ভলান্টিয়ারকেই (শশাঙ্ক ভভাসার)। ভেবেছিলেন, রেড ভলান্টিয়ারের সদস্য তো মানুষের প্রাণ বাঁচান, তা হলে পথকুকুরকেও যত্ন করবেন। কিন্তু পরিকল্পনার সঙ্গে বাস্তব মেলেনি। শশাঙ্কের কথা অনুযায়ী, তাঁর অযত্নে সে কুকুরছানা পাড়ায় বেরিয়ে পড়ে। বড় কুকুররা তাকে মেরে ফেলে। এর পর প্রতিবাদের মুখে পড়ে মার খেতে হয়েছে শশাঙ্ককে। সেই পথপশুপ্রেমীদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেন শশাঙ্ক। সিপিএম পার্টির অন্দরেই দ্বন্দ্ব শুরু হয়ে যায় তার পর থেকে। আনন্দবাজার অনলাইনকে শ্রীলেখা বলেন, ‘‘যখন কেউ ছিল না, আমি সিপিএম-এর পাশে দাঁড়িয়েছিলাম। এখন সেই পার্টির সদস্যরা আমার নামে যা ইচ্ছে তাই বলে যাচ্ছে।’’
এই সমস্ত বিবাদে নেটাগরিকরা শ্রীলেখাকে নিয়ে মস্করা শুরু করেছেন। কেউ আবার ঘোরতর সমালোচনায় মেতেছেন তাঁর। শ্রীলেখাকে ‘কুকুর মৌলবাদী’ তকমা দিয়েছেন কেউ কেউ। জনৈক নেটাগরিকের মতে, কুকুরের পরিবর্তে নিজের সঙ্গে ‘ডেট’-এর প্রস্তাব রাখা অনুচিত। তিনি লিখেছেন, ‘উনি কি নিজেকে ট্রফি মনে করেন?’ তার পরে সিপিএম নেতৃত্বের উদ্দেশে তাঁর অনুরোধ, ‘কুকুরবাদী এবং ক্যাডারবাদী এই দুই দলে বিভক্ত হয়ে যাবেন না। ঐক্যই বল। ইউনিটি ইজ স্ট্রেংথ।’ লাইভ ভিডিয়োয় শ্রীলেখার কান্নাকে ঘিরেও হাসাহাসি চলছে নেটমাধ্যমে। আর এক নেটাগরিকের মন্তব্য, ‘সিপিএমের অভিনেত্রী, কুকুর-মৌলবাদী এবং সিপিএম সদস্য ও রেড ভলান্টিয়ারদের দিনব্যাপী নাটক নিয়ে আমার প্রতিক্রিয়া…কিছু যায় আসে না।’ নীচে শ্রীলেখারই একটি ছবি পোস্ট করেন তিনি।
কুকুরছানা দত্তক নেওয়ার পর থেকে দু’জন পথপশুপ্রেমীর সঙ্গে যোগাযোগ রাখছিলেন শশাঙ্ক। তাঁর কথায় জানা যায়, তাঁদের এক জন মঙ্গলবার রাতে ফোন করেন শশাঙ্ককে। ঠিক হয়, তাঁর বাড়ি গিয়ে কথা বলবেন। সেই মতো দক্ষিণেশ্বরে শশাঙ্কের বাড়ির কাছে পৌঁছন দু’জন মহিলা। সঙ্গে ছিলেন আরও চার পুরুষ। শশাঙ্কের অভিযোগ, কথা বলতে বলতেই শশাঙ্কের গায়ে হাত তোলেন তাঁরা। চড়, থাপ্পড় মারা শুরু হয়। পাড়ার লোকেরা এসে তাঁকে রক্ষা করেন। এই ঘটনার পরেই সরকারি হাসপাতালে গিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা করান শশাঙ্ক।
নেটাগরিকদের অনুমান, অভিনেত্রী সম্ভবত এ বার তৃণমূলে যোগ দিচ্ছেন। কিন্তু শ্রীলেখা আনন্দবাজার অনলাইনকে জানিয়েছেন, মানুষ তাঁর সম্পর্কে কী বলছেন, তার উপর ভিত্তি করে তিনি কোনও সিদ্ধান্ত নেবেন না। শ্রীলেখা বললেন, ‘‘আমি বামেদের সমর্থন করতাম, আগামীতেও তাই করব।’’