Kolkata Doctor Rape-Murder Case

রাজনীতি সরিয়ে উঠে এল সোহিনী, কাঞ্চনাদের দাবি, অ্যাকাডেমি চত্বরে স্লোগান ‘বিচার চাই’

অ্যাকাডেমি চত্বরে জড়ো হয়েছিলেন নানা বয়সের মানুষ। নানা পেশা, নানা ধর্ম। হাওড়ার এক মহিলা আইনজীবী এসেছিলেন সারা রাত প্রতিবাদে যোগ দেবেন বলে।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ অগস্ট ২০২৪ ০০:৫৯
Sohag Sen Sohini Sengupta Kanchana Moitra joins the reclaim the night Kolkata protest form Academy Of Fine Arts

অ্যাকাডেমি চত্বরে প্রতিবাদী জমায়েত। (ডানদিকে) সোহিনী সেনগুপ্ত। ছবি: সংগৃহীত।

‘মেয়েরা, রাত দখল করো’, এমনই ছিল ডাক। রাতের কলকাতা, কলকাতা শহরতলি ছাড়িয়ে সারা রাজ্যের পথে পথে মানুষের পদ বিক্ষোভ। মহিলারা অগ্রভাগে, তবে পুরুষেরাও নেমেছেন পথে, প্রতিবাদে।

Advertisement

শহর কলকাতার সংস্কৃতির আখড়া হিসেবে পরিচিত অ্যাকাডেমি অফ ফাইন আর্টস চত্বর। এখানেই রানুচ্ছায়া মুক্ত মঞ্চে জড়ো হয়েছিলেন নারীরা। তাদের পাশাপাশি কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এসেছিলেন পুরুষেরাও। এক পৃথিবীর দু’টি গোলার্ধের মতো, পরিপূরক। আবার তারই পাশে আর একদল মানুষ, যাঁরা তৃতীয় লিঙ্গ হিসাবে পরিচিত। মানুষের সম্পূর্ণ সত্তা পথে নেমে প্রতিবাদী।

কিন্তু এমন একটা রাত দেখতে হবে, ভাবেননি কেউ। চাননি কোনও মানুষ। তবু ভরা শ্রাবণে মেঘের ভ্রূকূটি এড়িয়ে কলকাতার রাস্তায় মানুষ, আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে নিহত চিকিৎসক-প়ড়ুয়ার অপরাধীদের বিচার চেয়ে।

অ্যাকাডেমির অফ ফাইন আর্টসের সামনে এসেছিলেন অভিনেত্রী কাঞ্চনা মৈত্র। তিনি বলেন, “এর আগে রাতের কলকাতা দেখেছি পুজোর সময়, কাজ থেকে ফেরার পথে চা খেতে গিয়ে, কোথাও আড্ডা দিতে গিয়ে। কিন্তু এই ভাবে একটা নৃশংসতার প্রতিবাদ করতে মাঝরাতে রাস্তায় নামতে হবে ভাবিনি। আসলে কিছু মানুষের ব্যর্থতা আমাদের এখানে এনে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে।” একজন মহিলা ধর্ষিতা, নিহত। এই প্রেক্ষিতে কাঞ্চনা বলেন, “সব সময়ই ধর্ষণ নিয়ে রাজনীতি হয়। এটা একেবারে অনুচিত। এত বড় একটা ঘটনা, সকলের এক জোট হয়ে অপরাধীর শাস্তি দাবি করা উচিত।”

অ্যাকাডেমি চত্বরে জড়ো হয়েছিলেন নানা বয়সের মানুষ। নানা পেশা, নানা ধর্ম। হাওড়ার এক মহিলা আইনজীবী এসেছিলেন সারা রাত প্রতিবাদে যোগ দেবেন বলে। তাঁদেরই পাশাপাশি ছিলেন খ্যাতনামী মহিলারা। মূলত নাট্য জগতের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরাই এসেছিলেন এই এলাকার প্রতিবাদ জমায়েতে।

এসেছিলেন বর্ষীয়ান অভিনেত্রী সোহাগ সেন। যদিও এ দিন তিনি কোনও কথা বলতে রাজি হননি। তাঁর উপস্থিতিটুকুই বুঝিয়ে দিয়েছে প্রতিবাদের ভাষা কেমন হওয়া উচিত। মঞ্চের একের পর এক মানুষ জানিয়েছেন তাঁদের অনুভবের কথা।

যেমন কথা দিয়েছিলেন, তেমনই পথে নেমেছিলেন অঞ্জন দত্ত। কিন্তু তিনিও কথা বলতে নারাজ। তিনি এসেছিলেন স্বামী হিসেবে, বাবা হিসেবে, শ্বশুর হিসেবে, বলেছেন নিজেই। দাঁড়িয়ে থেকেছেন পিছনে।

তত ক্ষণে স্লোগান উঠতে শুরু করেছে, ‘বিচার চাই’। উপস্থিত ছিলেন, নাট্য ব্যক্তিত্ব সোহিনী সেনগুপ্ত। তিনি বলেন, “আজ এই ভাবে এত মানুষ পথে নেমে চিৎকার করছেন, সুবিচারের দাবিতে। এর মধ্যে কোনও রাজনীতি নেই। রয়েছে শুধু ভাল থাকার আর্তি। আর সে টুকু পাওয়ার জন্য অনেক কষ্ট করে তাঁরা এখানে এসেছেন।” এ রাতের সমাবেশ থেকে তিনি সকলের উদ্দেশে বার্তা দিতে চেয়েছেন, বিশেষত মেয়েদের, “নিজের ব্যথার কথা, নিজের দাবির কথা বলে ফেলতে হবে এই ভাবে।”

আরও পড়ুন
Advertisement