শাহরুখ খান এবং ঐশ্বর্যা রাই। এক সময়ে পর্দায় সফল জুটির তালিকায় একেবারে উপর দিকের বাসিন্দা। ‘জোশ’-এর যমজ ভাই-বোন একে একে ‘মহব্বতে’ এবং ‘দেবদাস’-এ লিখে ফেললেন প্রেম-বিরহের নতুন সংজ্ঞা। জুটির ঝুলিতে তখন সাকুল্যে দু’টি ছবি। এবং তার পরেই শেষ। কিন্তু জানেন কি, এই তালিকা আরও দীর্ঘ হতে পারত?
‘চলতে চলতে’ ছবিতে মুখ্য ভূমিকায় প্রথমে ছিলেন শাহরুখ-ঐশ্বর্য। ছবির শ্যুট এগিয়েছিল বেশ কিছু দূর। হইহই করে চলছিল কাজ। কিন্তু আচমকাই ছবি থেকে বাদ পড়লেন নায়িকা। ব্যক্তিগত জীবনের টালমাটাল পরিস্থিতির কারণেই হাতছাড়া হয়েছিল অভিনয়ের সুযোগ।
সেই ছবির শ্যুট চলাকালীন সলমন খানের সঙ্গে সম্পর্কে ছিলেন ঐশ্বর্য। কিন্তু তত দিনে তাঁদের প্রেমের সম্পর্কে মিশে গিয়েছে তিক্ততা। নানা কারণে প্রায়শই বিতণ্ডায় জড়াতেন সলমন। তুমুল ঝগড়া বাধত দু’জনের।
শোনা যায়, প্রেমিকার সমস্ত সহ-অভিনেতাকেই সন্দেহের চোখে দেখতেন ‘ভাইজান’। মাঝেমধ্যেই হানা দিতেন ঐশ্বর্যার ছবির সেটে। ব্যতিক্রম ঘটেনি ‘চলতে চলতে’-র ক্ষেত্রেও।
আচমকাই এক রাতে ছবির সেটে পৌঁছে যান সলমন। তখন একটি গানের শ্যুট শেষ করে পরের দৃশ্য শুরুর পরিকল্পনা চলছে। কিন্তু কোনও কিছুর তোয়াক্কা না করেই ঐশ্বর্যের সঙ্গে ঝামেলা শুরু করে দেন ‘টাইগার’।
চার ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে ঝগড়া চলে সলমন-ঐশ্বর্যার। রেগেমেগে সেট থেকে বেরিয়ে যান সলমন। আচমকা এ ভাবে কাজে বিঘ্ন ঘটায় ক্ষুণ্ণ হয়েছিলেন পরিচালক আজিজ মির্জা। সে দিনের মতো কাজে ইতি টেনে দেন তিনি।
এই ঘটনার পরেই ঐশ্বর্যাকে ছবি থেকে বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন শাহরুখ। কাজের জায়গায় কোনও ধরনের সমস্যা চাননি কিং খান। তাই কোনও বাড়তি ঝামেলায় না গিয়ে সরিয়ে দেওয়া হয় ঐশ্বর্যাকে। পরিবর্তে নায়িকার চরিত্রে আসেন রানি মুখোপাধ্যায়।
অতীতে ঐশ্বর্যা জানিয়েছিলেন— তাঁকে যে ছবি থেকে বাদ দেওয়া হবে, সে কথা তাঁকে আগে জানাননি শাহরুখ। এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, “যখন কোনও কারণ না দেখিয়েই এই ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, মানুষ চমকে যায়। তার ব্যাখ্যা চেয়ে আমি কখনও কাউকে কোনও প্রশ্ন করি না।”
পরবর্তীতে নিজের ভুল বুঝেছিলেন শাহরুখ। পরোক্ষ ভাবে ক্ষমাও চেয়েছিলেন ‘বন্ধু’ ঐশ্বর্যার কাছে। কিন্তু এ বিষয়ে আর কখনও কথা বলেননি তাঁরা।
তবে সব রাগ-অভিমান-খারাপ লাগা ভুলে ২০১৬ সালে কর্ণ জোহরের ‘অ্যায় দিল হ্যায় মুশকিল’ ছবিতে একসঙ্গে দেখা যায় দু’জনকে। যুগল হিসেবেই শাহরুখ-ঐশ্বর্য ছিলেন ছোট্ট দু’টি চরিত্রে।