ঐন্দ্রিলা এবং সব্যসাচী উভয়েই নেটমাধ্যমে জানিয়েছিলেন, অভিনেত্রী দ্বিতীয় বার কর্কট রোগে আক্রান্ত।
অস্ত্রোপচারের ধকল হাসিমুখে সামলেছেন। একের পর এক কেমোথেরাপির ধকলে ক্লান্ত ঐন্দ্রিলা শর্মা। মঙ্গলবার রাতে ফেসবুকে এ কথা জানিয়েছেন অভিনেত্রীর প্রেমিক সব্যসাচী চৌধুরী। প্রতি মাসেই প্রেমিকার স্বাস্থ্য সংক্রান্ত খবর, তাঁর ভাল-মন্দ ছোট পর্দার ‘বামদেব’ ভাগ করে নেন অনুরাগীদের সঙ্গে। গত রাতে ঐন্দ্রিলার খবর জানাতে গিয়ে ব্যথা পেয়েছেন অভিনেতাও। তাঁর লেখায় সেই যন্ত্রণার ছাপ স্পষ্ট, ‘কখনও ডানায় চোট লাগা পাখি দেখেছ? আমি প্রতিনিয়ত দেখি।’ সব্যসাচীর সমব্যথী ওপার বাংলার অভিনেতা গাজী আব্দুন নূর, এ পার বাংলার ছোট পর্দার জনপ্রিয় অভিনেতা অভিষেক বসু, স্বাগতা মুখোপাধ্যায়, পরিচালক প্রতীম ডি. গুপ্তা সহ বহু জন।
এর আগে ঐন্দ্রিলা এবং সব্যসাচী উভয়েই নেটমাধ্যমে জানিয়েছিলেন, অভিনেত্রী দ্বিতীয় বার কর্কট রোগে আক্রান্ত। এ বার মারণ রোগ থাবা বসিয়েছে তাঁর ফুসফুসে। চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে প্রথমে টানা চিকিৎসা। তার পর সফল অস্ত্রোপচার। উভয়েই ভেবেছিলেন, ‘অস্ত্রোপচারটাই আসল। সেটা সামলে উঠলে বাকি চিকিৎসা খুব সমস্যার হবে না। বিষয়টা একে বারেই উল্টে গেছে। অস্ত্রোপচারের পরে যে কেমোথেরাপি দেওয়া হচ্ছে সেটা অনেক বেশি কষ্টের’। একের পর এক কেমো নিতে নিতে কী অবস্থা অভিনেত্রীর? বার্তায় সব্যসাচী জানিয়েছেন, ‘কিছু কিছু দিন বড়ই কষ্ট পায়। মাঝে মধ্যেই রক্তচাপ অস্বাভাবিক ভাবে কমে যায়। বিছানা থেকে মাথা তুলতে পারে না। রক্তের মধ্যেও বিস্তর গোলযোগ দেখা যায়’। একই সঙ্গে, ‘ব্রহ্মতালু থেকে শুরু করে পায়ের পাতা পর্যন্ত মারাত্মক যন্ত্রণা হতে থাকে। মুঠো মুঠো ব্যথার ওষুধেও যা কমতে চায় না। হাত-পা টিপে দিলে বা গরম সেঁক দিলে সাময়িক আরাম পায় ঠিকই, কিন্তু তা যথেষ্ট নয়। কড়া মাত্রার ঘুমের ওষুধ খাইয়ে কোনও মতে ঘুম পাড়িয়ে রাখতে হয় ঐন্দ্রিলাকে’।
তার মধ্যেই যখন একটু ভাল থাকেন তখন পছন্দের মোমো খান অভিনেত্রী। শুয়ে শুয়ে নানা ধরনের ছবি দেখেন। শরীর একটু ভাল থাকলেই বিরিয়ানি খাওয়ার বায়না করেন। একই সঙ্গে ছোট পর্দায় যখনই কোনও ধারাবাহিক চলে, ছটফটিয়ে ওঠেন ঐন্দ্রিলা। দ্রুত হাতে বন্ধ করে দেন টিভি। অভিনেতা বন্ধুরা চুটিয়ে অভিনয় করছেন আর ঐন্দ্রিলা বিছানায় শুয়ে! সেটা তিনি কিছুতেই মন থেকে মেনে নিতে পারেন না। নিজেকে শান্ত করতে অভিনেত্রী নিজের পুরনো কাজগুলোই ফের দেখেন শুয়ে শুয়ে।
‘জিয়ন কাঠি’র অভিনেত্রীকে নিয়ে বলতে গিয়ে সব্যসাচীর উপলব্ধি, ‘ঐন্দ্রিলার অসুখটা এতটাই দীর্ঘায়িত যে শুরুতে যে মানুষগুলি উৎকণ্ঠিত থাকেন তাঁরাও আস্তে আস্তে উপেক্ষা করতে শুরু করেন। জগতের নিয়ম অনুযায়ী সেটাই খুব স্বাভাবিক। সেটা ও নিজেও বোঝে। তাই শরীর বেশি খারাপ থাকলে শিশুর মতন আচরণ করে’। তখন কী করে তাঁকে ভোলান অভিনেতা? ঘুমোনোর আগে প্রেমিকাকে ভূতের গল্পের বই পড়ে শোনাতে হয় । ফিনিক্স পাখির গল্পও বলেন সব্যসাচী। আর মনে মনে বিশ্বাস করেন, ‘ছ’বছর আগে যেমন ফিরে এসেছিল, ঠিক সে ভাবেই আবার ফিরবে ঐন্দ্রিলা’।