দর্শকদের কাছে অভিনেত্রীর আন্তরিক অনুরোধ, ‘‘যে সমস্ত প্রেক্ষাগৃহে ছবিটি মুক্তি পাচ্ছে সেখানে গিয়ে সবাই ছবিটি দেখুন। হল ভরলে, বাণিজ্য ভাল হলে, সমালোচক, দর্শকের প্রশংসা পেলে এবং হাউজফুল বোর্ড ঝুললে নন্দনেও সত্যজিৎ রায় ‘অপরাজিত’ই থাকবেন।’’
নন্দনে পরাজিত ‘অপরাজিত রায়’?
‘ভবিষ্যতের ভূত’-এর মতোই ‘অপরাজিত’ প্রদর্শন নিয়ে ফের সমস্যার সম্মুখীন অনীক দত্ত। সত্যজিৎ রায়ের উপরে তৈরি ছবির জায়গা নেই নন্দনে! আগের বার তাঁর সমর্থনে প্রতিবাদে সামিল হয়েছিলেন সায়নী ঘোষ। শাসকদলের যুব নেত্রী ‘অপরাজিত’-র অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অভিনেত্রী। এ বারেও কি তিনি পরিচালকের হয়ে বক্তব্য রাখবেন? এই নিয়ে কৌতূহল টলিউডে। একাধিক অভিনেতা, পরিচালক ইতিমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় কটাক্ষ করেছেন তাঁকে। সায়নীর কী অবস্থান? জানতে আনন্দবাজার অনলাইন যোগাযোগ করেছিল তাঁর সঙ্গে।
যুবনেত্রীর সপাট জবাব, ‘‘ছবিটা অনীক দত্তের ছবি হিসেবে নয়, সত্যজিৎ রায়ের ছবি হিসেবে দেখছি। সেই পরিচালক যিনি বাংলাকে বিশ্বের দরবারে তুলে নিয়ে গিয়েছিলেন। তাঁর জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে ‘অপরাজিত’ বানানো। সেই ছবি নন্দনে জায়গা পেল না। এটা আমায় সবচেয়ে বেশি আঘাত দিচ্ছে। নন্দন কর্তৃপক্ষের এই পদক্ষেপ মানতে খুবই কষ্ট হচ্ছে। আমি এ বারেও অনীকদার পাশেই।’’
অভিনেত্রীর আরও দাবি, অনীক দত্তের মতো বড় পরিচালক নন্দনে জায়গা পাচ্ছেন না! ছোট পরিচালকেরা তো ভয়ে আরও পিছিয়ে যাবেন। আর কেউ সত্যজিৎ রায়ের উপরে ছবিই বানাতে চাইবেন না! এটা মস্ত বড় ভুল পদক্ষেপ। সায়নী নিজেও বিষয়টি পুনর্বিবেচনার আর্জি জানিয়ে নন্দন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে নাকি কথা বলেছেন। কী উত্তর পেয়েছেন? কর্তৃপক্ষের যুক্তি, ‘কিশমিশ’, ‘রাবণ’, ‘মিনি’ দর্শক টানছে। মাত্র এক সপ্তাহ হল ছবিগুলো এসেছে। এখন তাদের সরিয়ে কী করে অন্য ছবিকে জায়গা দেবেন তাঁরা? এ দিকে দর্শকদের একটা বড় অংশ সায়নীকে জানিয়েছেন, তাঁরা ছবি নন্দনে দেখার জন্য সাগ্রহে অপেক্ষা করে রয়েছেন। অভিনেত্রী নিজেই জানেন না, কী জবাব দেবেন তাঁদের!
‘কিশমিশ’-এর প্রযোজক অভিনেতা সাংসদ দেব। ‘মিনি’-তে অভিনয় করেছেন সাংসদ মিমি চক্রবর্তী। ‘কলকাতার হ্যারি’র প্রযোজক বিধায়ক সোহম চক্রবর্তী। এ দিকে অনীক দত্তের সরকার বিরোধিতার কথা সবাই জানেন। সেই জন্যই কি নন্দন বা রাধার মতো সরকারি প্রেক্ষাগৃহ জায়গা দিল না ছবিটিকে? সায়নীর পাল্টা প্রশ্ন, ‘‘বিষয়টি অনীক দত্ত বনাম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বা তৃণমূল বনাম সিপিএম নয়। তা হলে যুবনেত্রী হওয়ার পরে অনীকদা আমায় ছবিতে নিতেন না। অনেকেই বলছেন, তিনটি ছবিতে শাসকদলের প্রতিনিধিরা রয়েছেন। তাই তাঁদের ছবি জায়গা পেয়েছে। ‘অপরাজিত’-তে আমি আছি। তা হলে জায়গা পেল না কেন?’’
এ ক্ষেত্রে তিনি আঙুল রেখেছেন অন্য একটি সমস্যার দিকে। সায়নীর মতে, প্রতি সপ্তাহে একমুঠো বাংলা ছবি মুক্তি পাচ্ছে। ফলে, প্রেক্ষাগৃহ দিতে গিয়ে ঘাম ছুটছে মালিকদের। ‘অপরাজিত’-র নন্দন না পাওয়ার এটিও একটি সম্ভাব্য কারণ। সে কথা তিনি ফেসবুকেও লিখেছেন, ‘বাংলায় এক সঙ্গে অনেক ছবি মুক্তি পায়। সেটার ভাল দিক যেমন আছে, কিছু অসুবিধেও রয়েছে।’ তাই দর্শকদের কাছে অভিনেত্রীর আন্তরিক অনুরোধ, ‘‘যে সমস্ত প্রেক্ষাগৃহে ছবিটি মুক্তি পাচ্ছে সেখানে গিয়ে সবাই ছবিটি দেখুন। হল ভরলে, বাণিজ্য ভাল হলে, সমালোচক, দর্শকের প্রশংসা পেলে এবং হাউজফুল বোর্ড ঝুললে নন্দনেও সত্যজিৎ রায় ‘অপরাজিত’ই থাকবেন।’’