Sandhya Mukhopadhyay

Sandhya Mukhopadhyay: সুচিত্রা সেনের প্রেমে পড়া মানেই সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে সখ্য

আমার খবর নিচ্ছেন আমাদের ‘গীতশ্রী’, ‘‘কেমন আছ রূপঙ্কর? ভাল আছ তো?’’

Advertisement
রূপঙ্কর বাগচী
রূপঙ্কর বাগচী
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ২০:৪৪
সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়কে নিয়ে কলম ধরলেন রূপঙ্কর।

সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়কে নিয়ে কলম ধরলেন রূপঙ্কর।

ছোটবেলায় মায়ের মুখে শুনেছি, যখন নক্ষত্রপতন হয়, তখন একটি তারা খসে না। এক তারার মৃত্যু নাকি ডেকে নেয় তার বাকি সঙ্গীদেরও। মা নেই। তাঁর জায়গা অজান্তেই জুড়ে বসেছিলেন সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়। লতা মঙ্গেশকরকে হারানোর ব্যথা এখনও মেলায়নি। তার আগেই ফের মাতৃ-বিয়োগ। সন্ধ্যাদিও আর নেই!

২০২০-তে আচকা অতিমারির প্রকোপ। বিশ্ব স্তব্ধ। প্রাণভয়ে সবাই যে যার বাড়িতে বন্দি। কেউ যে কারও মুখ দেখব তারও উপায় নেই। দরকারে পাশে দাঁড়ানো দূরের কথা। সেই সময়ে প্রথম ফোন। ফোন করে আমার খবর নিচ্ছেন আমাদের ‘গীতশ্রী’, ‘‘কেমন আছ রূপঙ্কর? ভাল আছ তো?’’ আমি তখন গানের ক্লাস নিচ্ছি। সব ভুলে দৌড়ে এসে ফোন ধরেছিলাম। যাঁর গানে প্রজাপতি পাখায় পাখায় রং ছড়ায়, সেই তিনিই আমার খোঁজ নিচ্ছেন! একা আমি নই, আমার পরিবারের প্রতি জনের খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে খবর নিয়েছেন তার পর। বলেছেন, ‘‘কী ভাল গান কর তোমরা! আমি অবাক হয়ে শুনি।’’

Advertisement


এর পরেও খোঁজ নিয়েছেন সুযোগ করে। সে দিন আমি বাজারে। শুনেই শঙ্কিত কণ্ঠে প্রশ্ন, ‘‘মাস্ক, স্যানিটাইজার নিয়ে বাজারে গিয়েছ তো? দূরত্ব মানছ? সবার আগে জীবন।’’ কী করে ভুলি, সন্ধ্যাদিই আমার যৌবনে গানের ইন্দ্রধনু। সুচিত্রা সেনের প্রেমে পড়া মানেই সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গেও সখ্যস্থাপন। একইসঙ্গে ভাল লাগে ওঁর গাওয়া ঠুংরি। ওঁর এক একটা গান বাংলা গানের স্বর্ণযুগের মণি-মাণিক্য। এ ভাবেই কি গানের দুনিয়া ক্রমশ দেউলিয়া হয়ে যেতে বসেছে?

একা আমি নই। আমার সতীর্থ রাঘব চট্টোপাধ্যায়, লোপামুদ্রা মিত্রের সঙ্গেও কথা হত স্বর্ণকণ্ঠীর। শুধুই কুশল জিজ্ঞাসা নয়, গান নিয়েও আলোচনায় মেতে উঠতেন অনায়াসে। শেষ দিন পর্যন্ত ওঁর গলা কান পেতে শোনার মতো ছিল। শুনেছি, প্রতি দিন নিয়ম করে রেওয়াজে বসতেন। লতাজির মতোই সন্ধ্যাদিও ভীষ নিয়মনিষ্ঠ ছিলেন। তাই সুর কখনও ওঁকে ছেড়ে যায়নি। যিনি সবার মঙ্গল চাইতেন, সবার খোঁজ নিতেন, তিনিই এ ভাবে আচমকা বিদায় নিলেন। মা নেই। বিপদে আপদে এ ভাবে আর কে ফোন করে খোঁজ নেবেন আমার!

আরও পড়ুন
Advertisement