সৃজিত মুখোপাধ্যায় পরিচালিত নতুন হিন্দি ওয়েব সিরিজ়ে কেকে মেনন এবং রণবীর শোরের সঙ্গে অভিনয় করেছেন রুদ্রনীল ঘোষ। ছবি: ফেসবুক।
ভারতীয় প্রেক্ষাপটে শার্লক হোমসকে নিয়ে যে সৃজিত মুখোপাধ্যায় ওয়েব সিরিজ় তৈরি করছেন, সে খবর এখন পুরনো। এই হিন্দি সিরিজ়ে শার্লক এবং তাঁর সহকারী ডক্টর ওয়াটসনের ভূমিকায় অভিনয় করছেন যথাক্রমে কেকে মেনন এবং রণবীর শোরে। সিরিজ়ে একটি বিশেষ চরিত্রে অভিনয় করেছেন রুদ্রনীল ঘোষ।
কেকে এবং রণবীরের সঙ্গে তোলা নিজের একটি ছবি সমাজমাধ্যমে ভাগ করে নিয়েছেন রুদ্রনীল। সঙ্গে রুদ্রনীল লিখেছেন ‘‘‘শিক্ষকদের’ সঙ্গে কাজের শেষে।’’ বিগত এক মাস ধরে বোলপুরে শুটিং সেরেছেন রুদ্রনীল। দুই অভিনেতার সঙ্গে প্রথম সাক্ষাৎ কী রকম ছিল? রুদ্রনীল জানালেন, মুম্বইতে লুক সেট হওয়ার সময় কেকের সঙ্গে তাঁর প্রথম আলাপ।
বলিউডের দুই শক্তিশালী অভিনেতার সঙ্গে কাজ করে কী রকম অভিজ্ঞতা হল তাঁর? আনন্দবাজার অনলাইনকে রুদ্রনীল বললেন, ‘‘এক সময় হিন্দি ছবিতে নাচ-গান বা অ্যাকশন দৃশ্যের মাধ্যমেই তারকার স্টারডম তৈরি হয়েছিল। সেটাকে ভেঙে পরে দিকে সমান্তরাল ঘরানার অভিনেতারা উঠে আসেন, যাঁদের মধ্যে নাসিরুদ্দিন শাহ বা ওম পুরী ছিলেন অন্যতম। পরবর্তী সময়ে এই ধারাকে যাঁরা এগিয়ে নিয়ে গিয়েছেন, তার মধ্যে কে কে মেনন বা রণবীর শোরে অন্যতম।’’ তাই দুই অভিনেতার সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতার পুরোটাই রুদ্রের কাছে প্রাপ্তি। তাঁর কথায়, ‘‘আমরা যাঁরা অভিনেতা সত্তা নিয়ে বেশি চিন্তাভাবনা করি, তাঁদের কাছে এই দুই অভিনেতার সঙ্গে কাজ করা স্বপ্নপূরণের থেকে কম নয়।’’
এর আগে ‘রে’ সিরিজ়ে সৃজিত পরিচালিত একটি গল্পে ছিলেন কেকে মেনন। কেকে বা রণবীর বাংলা ইন্ডাস্ট্রি সম্পর্কে কতটা ওয়াকিবহাল? রুদ্র বললেন, ‘‘আমি হিন্দিতে যাঁদের সঙ্গে কাজ করেছি, তাঁরা প্রত্যেকেই বাংলার প্রতিভার কদর করেন। ‘মাইকেল’-এ নাসিরুদ্দিন স্যর বা ‘ময়দান’-এ অজয় (দেবগন) স্যর এবং গজরাজ রাও, প্রত্যেকেই বাংলা ইন্ডাস্ট্রির প্রতি শ্রদ্ধাশীল।’’ কথা প্রসঙ্গেই কেকে এবং রণবীরের সঙ্গে তাঁর বন্ধুত্বের উদাহরণ দিলেন রুদ্রনীল। বললেন, ‘‘ওঁরা তো আমাকে বললেন, মুম্বইতে আমি গেলেই যেন ওঁদের সঙ্গে দেখা করি। কোনও রকম প্রয়োজনে অবশ্যই যোগাযোগ করতে বলেছেন। এটা তো শুধু আমার নয়, বাংলা ইন্ডাস্ট্রির জন্যও একটা বড় প্রাপ্তি।’’
দু’জন কী রকম মানুষ? রুদ্র হেসে বললেন, ‘‘কেকে মেনন একটু ঠান্ডা, চুপচাপ। কিন্তু রণবীর খোলা মনের মানুষ। যখন যেটা মনে হয় সামনেই বলে দেন।’’ এক মাসের দীর্ঘ শুটিং শিডিউলে দু’জনের সঙ্গেই অনেকটা সময় কাটিয়েছেন রুদ্রনীল। সেরা স্মৃতির কথা জিজ্ঞাসা করতেই রুদ্রনীল ফিরলেন স্মৃতিচারণায়। প্রচণ্ড গরমে সারা দিন শুটিং করে ইউনিট হোটেলে ফিরে সকলে টেবিল টেনিস খেলতে জড়ো হতেন। রুদ্র বললেন, ‘‘টেবিল টেনিস খুব একটা ভাল খেলতে পারি না, তাই আমাকে নিয়ে ঠাট্টা হত। আমি ক্যারাম খেলতাম।’’ কেকে বা রণবীর যখন খেলায় ব্যস্ত, তখন ফোনে সারা দিনের জমে থাকা মেসেজের উত্তর দিতে ব্যস্ত হয়ে যেতেন রুদ্রনীল। অভিনেতা বললেন, ‘‘ওঁরা দু’জনেই আমাকে দেখে হেসে বলতেন, ওই দেখো রুদ্র ফোনে দেশোদ্ধার করছে!’’
নিজের অংশের শুটিং করে রুদ্রনীল ফিরে এসেছেন কলকাতায়। কিন্তু এই সিরিজ়ে তাঁর অভিনীত চরিত্রটি কী রকম? না, এই প্রসঙ্গে এখন কোনও তথ্য দিতে নারাজ অভিনেতা। সিরিজ়ের বাকি অংশের শুটিং সারা হবে মহিষাদলে।