‘ভোলা’র নামভূমিকায় অভিনয় করেছেন অজয় দেবগন। ছবি: সংগৃহীত।
একটা সময় ছিল যখন রোহিত শেট্টির ছবি মানেই বলা হত, গাড়ি ওড়ানো ছবি! কটাক্ষই যেন তৈরি করে দিয়েছিল পরিচালকের নিজস্ব ছবি নির্মাণের ভাষাকে। ইদানীং দেশ জুড়ে দক্ষিণী ছবির রমরমার পর, বলিউডও মনে হচ্ছে অ্যাকশন ছবির ক্ষেত্রে কিছু নির্দিষ্ট শব্দবন্ধের দিকে এগতে চাইছে। দক্ষিণ ছাড়া কি গতি নেই? তার উপর সেই ছবি যদি দক্ষিণী ছবির রিমেক হয়, তা হলে তো সোনায় সোহাগা!
‘রানওয়ে থার্টিফোর’-এর পর ফের পরিচালকের আসনে অজয় দেবগন। দর্শকের জন্য তাঁর উপহার ‘ভোলা’। ২০১৯ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত তামিল ছবি ‘কাইথি’র হিন্দি পুনর্নিমাণ। ধুন্ধুমার অ্যাকশন আর একমেবাদ্বিতীয়ম অজয়— আর বিশেষ কিছু বলার নেই। বলে রাখা ভাল প্রথম দিনেই (রামনবমী উপলক্ষে ‘ভোলা’ মুক্তি পেয়েছে বৃহস্পতিবার) ছবি কিন্তু বক্স অফিসে ১১ কোটি টাকার ব্যবসা করেছে!
ছবির নামভূমিকায় রয়েছেন অজয়। সাজা কেটে জেল থেকে বেরিয়েছে সে। লখনউতে অনাথ আশ্রমে বড় হচ্ছে তার একমাত্র মেয়ে। দশ বছর মেয়েকে দেখেনি ভোলা। মেয়ের সঙ্গে দেখা করতে যাওয়ার আগেই পুলিশ অফিসার ডায়ানার (তব্বু) মুখোমুখি হয় ভোলা। মাদক পাচারকারীদের থেকে উদ্ধার করা বিশাল পরিমাণের মাদক ফিরে পেতে চাইছে দলের চাঁই। অন্য দিকে, বেঁহুশ ৪০ জন পুলিশ অফিসারকে ৮০ কিলোমিটার দূরে ট্রাকে করে নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব পায় সে। এক রাতের গল্পে শুরু হয় অযৌক্তিক অ্যাকশন এবং অজয়ের বিক্রম।
মূল ছবির থেকে ভোলার চিত্রনাট্যের কিছু রদবদল করা হয়েছে। অ্যাকশন এবং জাঁকজমকের তুলনায় ‘ভোলা’ অনেকটাই এগিয়ে। কিন্তু বাদ সেধেছে ছবির চিত্রনাট্য। অ্যাকশনে যেন চাপা পড়ে গেল ছবির মূল আবেগ। কখনও ত্রিশূল হাঁকিয়ে, কখনও বাইকে সওয়ার হয়ে এমনকি, মেশিনগান হাতে শয়ে শয়ে শত্রুকে নিকেশ করেছেন অজয়। বার বার মৃত্যুকে ছুঁয়েও তিনি ফিরে আসেন। এই প্রসঙ্গেই কেউ ‘আরআরআর’ ছবিতে রাম চরণের কথা উল্লেখ করতেই পারেন। আসলে, এই ধরনের ছবির ক্ষেত্রে যুক্তি খুঁজতে যাওয়া অর্থহীন। তাই অজয়ের অনুরাগীদের জন্য এই ছবি নিঃসন্দেহে উপভোগ্য।
তব্বু তাঁর সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। তবে কাঁধে গুলি লাগার পরেও যে ভাবে লড়ে গেলেন তা মানতে কষ্ট হয়। গজরাজ রাও, বিনীত কুমার, মকরন্দ দেশপাণ্ডে এমনকি, কিরণ কুমারকেও সে ভাবে জায়গা দেওয়া হয়নি। গ্যাংস্টার আশুর চরিত্রে দীপক দোব্রিয়াল এবং অবসরের মুখে পৌঁছে যাওয়া পুলিশ কনস্টেবলের চরিত্রে সঞ্জয় মিশ্র কিছুটা হলেও ছবির মুড ধরে রেখেছেন। ভোলার স্ত্রীর চরিত্রে অমলা পালের শুধু কয়েক ঝলকেরই উপস্থিতি।
‘শিবায়’ ছবিতেও ভিএফএক্স-এর উপরে জোর দিয়েছিলেন অজয়। এখানে কিন্তু স্টান্টে মনোযোগ দিতে গিয়ে অন্যত্র তাল কেটেছে। সেট ডিজ়াইনও মধ্যমানের। তবে ছবির টেনশনকে ধরে রাখতে সাহায্য করেছে ‘কেজিএফ’ খ্যাত রবি বসরুরের আবহসঙ্গীত। ছবির শেষে রয়েছে সিক্যুয়েলের ইঙ্গিত। দেখা যাক, আগামী পর্বে অজয় আর কী কী চমক হাজির করেন।