রণবীর কপূর। ছবি: সংগৃহীত।
বলিউডের অন্যতম জনপ্রিয় তারকা তিনি। মায়ানগরীর নামজাদা ফিল্মি পরিবারের সন্তান। স্বজনপোষণের বিতর্কের মধ্যেও নিজের প্রতিভার প্রমাণ রেখে অভিনেতা হিসাবে নিজের কেরিয়ার তৈরি করেছেন রণবীর কপূর। তাঁর ঝুলিতে ‘ওয়েক আপ সিড’, ‘রকস্টার’, ‘তামাশা’, ‘ব্রহ্মাস্ত্র: পার্ট ওয়ান– শিবা’-র মতো ছবি। বক্স অফিস সব সময় সদয় না হলেও অভিনেতা হিসাবে বরাবরই প্রশংসিত রণবীর। অভিনয় তো বটেই, পাশাপাশি তাঁর চাহনিতেও মুগ্ধ অনুরাগীরা। তাঁর এই অনুরাগী কূলের একটা বড় অংশই মহিলা। কিন্তু অভিযোগ, সেই মহিলাদেরই ‘অসম্মান’ করার আগে এক বারও ভেবে দেখেন না ঋষি-পুত্র!
বহু বছর ধরেই রণবীরের এই ‘গুণ’-এর সাক্ষী সমাজমাধ্যম। বিশেষত, সমাজমাধ্যমের রমরমার যুগে একাধিক ভিডিয়োয় একাধিক বার মিলেছে রণবীরের ‘বদতমিজ়’ ব্যবহারের প্রমাণ। ছবির নায়িকা হোন বা তাঁর প্রেমিকা— কাউকে রেয়াত করেন না রণবীর। কখনও সাক্ষাৎকারের মাঝেই তাঁদের থামিয়ে দেন অভিনেতা। কখনও আবার এমন কিছু তথ্য ফাঁস করে দেন সংবাদমাধ্যমের সামনে, যা উক্ত অভিনেত্রীর একান্তই ব্যক্তিগত। রণবীরের একাধিক ছবির নায়িকা ছিলেন তাঁর এক সময়ের প্রেমিকা ক্যাটরিনা কইফ। ‘জগ্গা জাসুস’ ছবির প্রচারে গিয়ে ক্যাটরিনাকে রীতিমতো অস্বস্তিতে ফেলেছিলেন তিনি। সাক্ষাৎকার চলাকালীন ক্যাটরিনাকে তাঁর চরিত্র নিয়ে প্রশ্ন করেছিলেন সঞ্চালক। ক্যাটরিনাকে উত্তর দিতে না দিয়ে রণবীর নিজেই গড়গড় করে কথা বলে যান। এমনকি, ‘তুমি ঠিক করে বলতে পারছ না, আমি বুঝিয়ে বলছি’-র মতো মন্তব্য করতেও পিছপা হননি রণবীর।
‘অ্যায় দিল হ্যায় মুশকিল’ ছবিতে অনুষ্কা শর্মার সঙ্গে জুটি বেঁধে অভিনয় করেছিলেন রণবীর। এক অনুষ্ঠানে গিয়ে অনুষ্কা সম্পর্কে কথা বলতে গিয়ে রণবীর বলে বসেন, ‘‘অনুষ্কা তো অ্যাংজ়াইটি-কুইন! কারও সঙ্গে কথা বলতে গিয়েও ওকে ওষুধ খেতে হয়!’’ রণবীরের এই মন্তব্যে খেপে উঠেছিল সমাজমাধ্যম। কোন আক্কেলে এক জন সহকর্মীর অসুস্থতার কথা এমন ভাবে জনসমক্ষে প্রকাশ করলেন রণবীর? প্রশ্ন তুলেছিলেন নেটাগরিকরা। তাতেও অবশ্য নিজের বেফাঁস মন্তব্য করার অভ্যাসে লাগাম টানেননি রণবীর। বরং সেই অভ্যাস দিন দিন আরও বেড়েছে বই কমেনি।
গত বছর প্রেমিকা আলিয়া ভট্টকে বিয়ে করেন রণবীর। এপ্রিলে বিয়ের পরে নভেম্বর মাসে দম্পতির কোলে আসে তাঁদের প্রথম সন্তান। সন্তানসম্ভবা থাকাকালীন রণবীর ও ছবির পরিচালক অয়ন মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে ‘ব্রহ্মাস্ত্র: পার্ট ওয়ান - শিবা’ ছবির প্রচারে ব্যস্ত ছিলেন আলিয়া। সেই সময় এক সাক্ষাৎকারে কথায় কথায় আলিয়াকে ‘মোটা’ বলতেও ছাড়েননি রণবীর। মেয়ে রাহার জন্মের পর মাতৃত্ব নিয়ে কথা বলতে গিয়ে আলিয়া জানিয়েছিলেন, তিনি মেয়েকে নিয়ে সব সময় ভীষণ চিন্তা করেন। রণবীরকে এই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি নির্বিকারে আলিয়াকে ‘দুশ্চিন্তাগ্রস্ত’ বলে দাবি করেন। রণবীর বলেন, ‘‘আলিয়া সব সময়ই একটু বেশিই চিন্তা করে। মেয়েকে সব সময় এটা করবে না, ওটা করবে না বললে.. বা মেয়েকে সব সময় আগলে রাখতে গেলে হয়তো চিন্তা আরও বেড়েই যায়।’’ এখানেই থামেননি রণবীর। মেয়ে বড় হয়ে আলিয়ার মতো ব্যক্তিত্ব হয়ে উঠুক, তাও চান না তিনি।
আলিয়া একটু উঁচু গলায় কথা বললে তাও না-পসন্দ রণবীরের। আলিয়া লিপস্টিক পরলে সেটাও মুছে ফেলার কড়া নির্দেশ দেন অভিনেতা। প্রাক্তন প্রেমিকাদের উপর এক সময় বেশ খবরদারি করেছেন রণবীর, এমন কানাঘুষো হামেশাই শোনা যায় বলিপাড়ায়। এখনও স্ত্রীর উপরে কর্তৃত্ব ফলাতেই ব্যস্ত তিনি। যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এগিয়েছে বলিউড ছবির ধ্যান-ধারণাও। বলিউডের ‘হিরো’রা কি তার পরেও নিজেদের মধ্যে বদল আনবেন না? রণবীরের আচরণ ঘিরে এখন এটাই প্রশ্ন নেটাগরিকদের একটা বড় অংশের।