আইনক্সে নেই সোহম চক্রবর্তীর ‘শাস্ত্রী’! ছবি: ফেসবুক।
পুজোয় ছবি মুক্তি পাবে, শুনলেই সব বয়সের পরিচালক, অভিনেতা, প্রযোজক উত্তেজনায় টানটান। হবেন না-ই বা কেন! ক’জনের ভাগ্যে এই সুযোগ ঘটে? ‘শাস্ত্রী’ আমায় সেই সুযোগ করে দিয়েছে। প্রযোজক সোহম চক্রবর্তী এই প্রথম পুজোয় ছবিমুক্তির গৌরব অর্জন করল। ছবিমুক্তির আনন্দ-উত্তেজনায় রাতে ঘুমোতে পারিনি। কিন্তু, সেই আনন্দ বেশি ক্ষণ থাকল কই? বাকিদের মতো আমিও অপেক্ষা করেছিলাম, নির্দিষ্ট সংখ্যক প্রেক্ষাগৃহ পাব। বাড়তি পাওনা নন্দন, রাধা স্টুডিয়োর মতো সরকারি প্রেক্ষাগৃহ। বিধি বাম, নন্দন বা রাধা স্টুডিয়োয় ‘শাস্ত্রী’ শো পায়নি। অবশ্য বাকি দু'টি বাংলা ছবি ‘টেক্কা’ আর ‘বহুরূপী’ও পায়নি। তবে বিষয়টি নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে।
সবিস্তার জানতে আনন্দবাজার অনলাইন যোগাযোগ করেছিল আমার সঙ্গে। অনেকেই এতে রাজনীতি দেখতে পাচ্ছেন। অনেকে বলছেন, মিঠুন চক্রবর্তী সংক্রান্ত বিতর্ক এড়াতেই নাকি বাকি ছবি দু'টিকে নন্দন বা রাধা স্টুডিয়োয় শো দেওয়া হয়নি। এ বিষয়ে আমারও বক্তব্য আছে। তাই আনন্দবাজার অনলাইনেই কলম ধরলাম। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বারে বারে একটাই কথা বলেছেন, "বিনোদন দুনিয়া রাজনীতির ঊর্ধ্বে। এখানে কে কোন রাজনৈতিক দলে বা মতে বিশ্বাসী, সেটা দেখা হবে না।” আমরা তা অক্ষরে অক্ষরে মানি। তাই দেবদা বা আমি মিঠুনদার সঙ্গে অনায়াসে কাজ করি। ভিন্ন রাজনৈতিক মত হওয়া সত্ত্বেও।
কিন্তু, ছিদ্রান্বেষীরা কি এত সহজে মানেন? তাঁদের যুক্তি, পরিচালক অনীক দত্তের পরে মিঠুন চক্রবর্তী নাকি শাসক দলের রাজনীতির বলি। দাবির সূত্রপাত, মিঠুনদা-দেবদা অভিনীত ‘প্রজাপতি’ নন্দনে জায়গা পায়নি বলে। তাঁরা এটা ভুলে গিয়েছেন, সুমন ঘোষ পরিচালিত ‘কাবুলিওয়ালা’ কিন্তু নন্দনে জায়গা পেয়েছিল। এই ছবির নামভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন মিঠুনদা-ই। ফলে, নন্দনে তিনি রাজনীতির শিকার, এ কথা মানতে পারছি না। এটা বলতে পারি, নন্দন নিয়ে আমারও আশা ছিল। কারণ, ওই প্রেক্ষাগৃহের নির্দিষ্ট সংখ্যক দর্শক রয়েছেন। ৯০০ আসনের এই প্রেক্ষাগৃহে ছবিমুক্তি মানে বাণিজ্যে টাটকা অক্সিজেন। কিন্তু, নন্দন কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তের উপরে আমার হাত নেই।
এ-ও কানে এসেছে, অনেকে নাকি বলেছেন, আমি শাসক দলের বিধায়ক। আমি থাকতে এ রকম হয় কী করে! তাঁদের বলব, বিধায়ক সোহম আর অভিনেতা সোহম আলাদা। অভিনয় দুনিয়ায় কখনও আমার রাজনৈতিক সত্তা ছায়া ফেলে না। তা ছাড়া, আমি তো নিজের ইন্ডাস্ট্রিতেই রাজনীতির মুখোমুখি! পরিবেশক, হল মালিকেরা ‘শাস্ত্রীকে’ ভাল শো টাইম দিলেন না! একা নন্দনকে দুষে কী করব? খোঁজ নিয়ে দেখুন, বাকি দু'টি ছবি ক’টা প্রেক্ষাগৃহ, কী ধরনের শো টাইম পেয়েছে। ‘শাস্ত্রী’ ক’টা পেয়েছে! আমাদের কোনও ফ্যান ক্লাব নেই। দর্শকেরা হল ভরিয়ে ছবি দেখতে আসছেন। প্রথম দিন ৭৫ শতাংশ বিক্রি হয়েছে। সেটা প্রকাশ্যে আসার পরেই দেখলাম, বুক মাই শো-তে শো টাইম ঘুরিয়ে দেওয়া হল!
বলতে লজ্জা করছে, সদ্য বিনোদন দুনিয়ার সর্বোচ্চ সম্মান পাওয়া অভিনেতা নিজের রাজ্যেই কতখানি হীন আচরণের শিকার! যেখানে মিঠুন-দেবশ্রীদির ছবি প্রেক্ষাগৃহ পায় না!