(বাঁ দিকে) প্রভাত রায়, জয়শ্রী রায় (ডান দিকে)। ছবি: ফেসবুক।
বাইরে কড়া রোদ উঠেছিল বুধবার সকালে। কিন্তু প্রভাত রায়ের কাছে এ দিনের আকাশ ছিল অংশত মেঘলা। দু’বছর আগে স্ত্রী জয়শ্রী রায়কে চিরতরে হারিয়ে ফেলেছেন তিনি। এ দিন অর্থাৎ, ১০ জুলাই তাঁদের ৫০তম বিবাহবার্ষিকী। সকাল সকাল ‘বাবি’র খোঁজ নিয়েছেন মেয়ে একতা ভট্টাচার্য। মনে করিয়ে দিয়েছেন, মা বেঁচে থাকলে রায় দম্পতির বিয়ের বয়স হত ৫০। পিছনে ফিরে তাকালে বর্ষীয়ান পরিচালকের আজ কী মনে পড়ছে?
আনন্দবাজার অনলাইনের প্রশ্নে তিনি বললেন, “২৫ বছরের বিবাহবার্ষিকীর কথা খুব মনে পড়ছে। বড় পার্টি দিয়েছিলাম। প্রায় পুরো ইন্ডাস্ট্রি এসেছিল। নতুন শাড়ি, গয়নায় খুব সুন্দর করে সেজেছিল জয়শ্রী। তখনই মনে মনে ঠিক করেছিলাম, ৫০ তম বিবাহবার্ষিকীতে আরও ধুমধাম করে উদ্যাপন করব। জয়শ্রীকে আবারও সাজাব নতুন শাড়ি, গয়নায়।” আক্ষেপ, তাঁর সেই স্বপ্ন পূরণ হল না।
কথা প্রসঙ্গে দাম্পত্যের কিছু মুহূর্তও তুলে ধরেছেন তিনি। জানিয়েছেন, তাঁর খুব কম ছবিই ব্যবসায় খারাপ ফল করেছে। একটা বা দুটো ছবি হয়তো ব্যর্থ হয়েছে। সেই সময় জয়শ্রী তাঁকে সামলেছিলেন। সারা ক্ষণ আশ্বাস দিয়েছেন, শুধু ভাল হতে নেই। মাঝেমধ্যে খারাপও হতে হয়। খারাপ হলে ভেঙে পড়তে নেই। পাশাপাশি, তিনি ছিলেন প্রভাতের ‘কাস্টিং ডিরেক্টর’। অনেক অভিনেতা তাঁর হাত ধরে প্রভাতের ছবিতে জায়গা পেয়েছেন। আজ তাঁরা বাংলা বিনোদন দুনিয়ার প্রথম সারির অভিনেতা। যেমন, ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত। একটি বিজ্ঞাপনী ছবিতে তাঁকে দেখে ‘লাঠি’র জন্য বেছেছিলেন জয়শ্রী। শুধু অভিনেতা বাছাই নয়, প্রভাতের ছবির গানের পিছনেও বড় ভূমিকা পালন করতেন প্রয়াত স্ত্রী। কারণ, তিনি খুব ভাল গান জানতেন।
একা প্রভাতের দেখভালের জন্য এখন সারা ক্ষণের এক পুরুষ সঙ্গী রয়েছেন। তিনি সব কাজ করে দেন। মেয়ে একতাও নিয়মিত এসে দেখে যান তাঁকে। প্রভাতের আক্ষেপ, “একতার দায়িত্বজ্ঞান নিয়ে কিছুই বলার নেই। সর্ব ক্ষণের ছেলেটিও খুবই ভাল। তবু জয়শ্রীর শূন্যস্থান পূরণ হল কই?”