(বাঁ দিক থেকে) শ্বেতা ভট্টাচার্য, রুবেল দাস এবং পল্লবী শর্মা। ছবি: সংগৃহীত।
এই মুহূর্তে বাংলা টেলিভিশনে সৃজন-পর্ণা জুটি হিট। কথা হচ্ছে রুবেল দাস ও পল্লবী শর্মার। তবে একই অভিনেতার ‘রিল লাইফ’ ও ‘রিয়েল লাইফ’ দু’টি জুটি যখন জনপ্রিয়তা পায় তখন সেটা খানিক উপরি পাওনার মতো, এ কথা মানছেন রুবেল নিজেও। তবে পর্দার জুটি জনপ্রিয় হোক বা না হোক, অভিনেতা বরাবর এগিয়ে রাখবেন রুবেল-শ্বেতা জুটিকে। তাঁরা কবে বিয়ে করবেন? এই নিয়ে জল্পনার অন্ত নেই। সমাজমাধ্যমের আনাচকানাচে তাঁদের প্রেমজীবনের প্রতিফলন সুস্পষ্ট, কখনও কি ভয় হয় সম্পর্কে যদি আঁচ আসে! ‘নিম ফুলের মধু’র সেটে আনন্দবাজার অনলাইনের মুখোমুখি অভিনেতা রুবেল দাস।
বাংলা সিরিয়ালের চর্চিত জুটি পর্ণা-সৃজন কিন্তু রুবেলের কাছে কোন জুটি এগিয়ে? এক মুহূর্ত না ভেবে রুবেল বলেন, ‘‘অবশ্যই শ্বেতা-রুবেল জুটি। ওটার সঙ্গে কোনও কিছুর তুলনা হয় না। আমার জীবনের অনেক বড় অংশ, যেটা ছাড়া আমার ভবিষ্যৎ অসম্পূর্ণ।’’
‘নিম ফুলের মধু’র সেটে ৫০০ পর্বের উদ্যাপন। দুপুরে পাঁঠার মাংস, পাতুরি খাওয়াদাওয়া চলছে, তার মাঝেই আড্ডা দিচ্ছেন অভিনেতা। এই কথোপকথনের মধ্যেই উঠে এল তাঁর অসুস্থতার প্রসঙ্গ। মাঝে দুর্ঘটনা, এক বার ডেঙ্গি। দুটোই শুটিং ফ্লোরে হয় বলেই জানালেন রুবেল। তবে সেই সময় সর্ব ক্ষণ পাশে ছিলেন শ্বেতা। দু’জনেই অভিনেতা, কিন্তু পল্লবীকে জড়িয়ে ধরলে কি শ্বেতার খারাপ লাগে? একটু ভেবে রুবেল বলেন, ‘‘না। শ্বেতা আমাকে বোঝে। আমরা কেউ-কারও কাজে নাক গলাই না। আমাদের বোঝাপড়াটা খুব ভাল। তবে আমরা সকলেই মানুষ। কোথাও কিছু খারাপ লাগলে, সেটা ওইটুকু সময়ের জন্যই। কিন্তু সেই ‘তালমেল’টা আছে আমাদের। আর আমরা একে অপরকে কাজের ক্ষেত্রে কোনও কিছু করতে বারণ করি না।’’
সমাজমাধ্যমের পাতায় চোখ রাখলেই তাঁদের ভালবাসার ইস্তাহার। মাঝেমধ্যে সম্পর্কে নজর পড়ে যাওয়ার ভয়ও পেয়েছেন রুবেল। অভিনেতার কথায়,‘‘নজর লেগে যাওয়ার ভয় হয়। সম্পর্কের প্রথম দু’বছর কেউ জানত না। আসলে আমার মনে হয় আমাদের অনেক শুভাকাঙ্ক্ষী রয়েছেন। আমরা যা-ই করি, তাঁদের জন্য করি। আর কুনজর দেওয়ার লোক থাকেই। সেটা নিয়ে ভাবিত নই। কারণ আমাদের সম্পর্কটা এতটা দৃঢ় যে সেখানে কোনও কিছুই বাধা হতে পারবে না।’’
আগামী বছরই বিয়ে করার পরিকল্পনা রয়েছে রুবেলের। বিয়েতে কি সংবাদমাধ্যমের স্থান হবে, না কি ‘প্রেস নট অ্যালাউড’? একবাক্যে অভিনেতা জানান, সংবাদমাধ্যমকে না ডাকার বিষয়টা ভীষণ খারাপ। তাঁর কথায়,‘‘সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে আমরা জড়িয়ে। আমরা যতটুকু যা জনপ্রিয়তা পেয়েছি, তাতে সংবাদমাধ্যমের একটা অবদান রয়েছে। তাদের বাদ দিয়ে কিছুই হবে না। আর বিয়েটা সব জানিয়ে করব। তবে ‘ডেস্টিনেশন ওয়েডিং’ নয়, বরং ছিমছাম ভাবে করব।’’
শ্বেতার সঙ্গে এতগুলো বছর কাটল। ভাল গুণ কোনটা, আর কোন গুণটা বদলে ফেলতে চান? রুবেল বলেন, ‘‘আসলে শ্বেতার যাঁরা শত্রু, তাঁরা যদি সামানাসামনি কথা বলেন, ধারণা বদলে যাবে। ও সকলকে এতটাই ভালবাসতে পারে। শ্বেতা মানুষটা ভীষণ আবেগপ্রবণ। তাই কিছু ভুল সিদ্ধান্ত হয়তো নিয়ে ফেলে, যেটা আমার খারাপ লাগে।’’
শ্বেতা না কি রুবেল, কে বড় তারকা? রুবেল হেসে বললেন, ‘‘শ্বেতা তো আমার থেকে অনেকটা আগে শুরু করেছে। সে অর্থে আমার গুরুজন। অনেক বছর ধরে কাজ করছে। আমি নিজে ওর অনুরাগী ছিলাম। আমি এই পেশায় অনেক কিছু শিখেছি ওর থেকে।’’ একই সঙ্গে রুবেল যোগ করলেন, ‘‘শ্বেতা শুধু ধারাবাহিক নয়, সিনেমাও করেছে। একটা আলাদা জনপ্রিয়তা থাকবেই। সত্যি কথা বলতে, ওর প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে। ও অনেক বেশি সাফল্য পেতে পারে। অবশ্যই ওর জনপ্রিয়তা অনেক বেশি।’’
এক পেশায় থাকলে অনেক সময় দু’জনের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতাও চলে আসে। সিনেমার পর্দা থেকে বাস্তবজীবনে অনেক যুগলের ক্ষেত্রেই তা ঘটেছে। তবে শ্বেতা-রুবেলের ক্ষেত্রে সেই সম্ভাবনা নেই বলেই জানালেন রুবেল। অভিনেতার কথায়, ‘‘আমরা এটা নিয়ে আগে কথা বলতাম। তবে আমার মনে হয় এক পেশার মানুষকে বিয়ে করার সুবিধে বেশি। আমি যদি চাকুরিজীবী কাউকে বিয়ে করতাম, তা হলে আমার সঙ্গে মানিয়ে নিতে অসুবিধে হত।’’