(বাঁ দিকে) নচিকেতা চক্রবর্তী ও ঋতুপর্ণ ঘোষ (ডান দিকে)। ছবি: সংগৃহীত।
প্রেম নিয়ে বিভ্রান্ত নচিকেতা, এক সময় ঋতুপর্ণ ঘোষের সঙ্গে একটি ঘরোয়া আড্ডায় জানিয়েছিলেন সঙ্গীতশিল্পী। তাঁর কাছে “প্রেম আসলে পিটুইটারির খেলা। আমরা বোকারা প্রেম বলি এটাকে।” একটা বিশ্বাস নিয়ে সারা জীবন চলা যায় না। ব্যবহারিক জীবনে মানুষ প্রত্যেক দিন তাঁর বিশ্বাস থেকে সরে যায়। সেই মুহূর্তে একটা বিশ্বাসকে আঁকড়ে ধরে চলা গায়কের কাছে প্রায় মূর্খামির সমান।
গান লেখার সময় সেই গানের কথাতেই নচিকেতার তাৎক্ষণিক বিশ্বাস থাকে। সেই কথা শুনে ঋতুপর্ণ প্রশ্ন তুললেন, ‘সে ছিল তখন উনিশ, আমি তখন ছত্রিশ’ এই গান শোনার পরে নচিকেতার বিবাহিতা স্ত্রী যদি প্রশ্ন করেন কোন উনিশ বছরের মেয়ের প্রেমে পড়েছেন তিনি? ‘মন মন মন মন তো চাইল, বিবাহিত আমি তাতে কী হল’ গানের সূত্র ধরে ঋতুপর্ণ আরও প্রশ্ন করলেন, গায়ক নিজে বিবাহিত হলেও কেন কিছু আসে-যায় না? পরিচালক বলেছিলেন, “তোর স্ত্রী যদি জিজ্ঞেস করে, ‘আমি রয়েছি, আমার উপস্থিতি কী ভাবে অস্বীকার করো তোমার জীবনে?’ তখন কী ভাবে সামলাবি?” ঋতুপর্ণের এই একের পর এক প্রশ্নের উত্তরে নচিকেতা বলেছিলেন, “যে ভাবে বাকি সকলে সামলায়।” নচিকেতার উত্তর শুনে ঋতুপর্ণের সটান জবাব, “মিথ্যে কথা বলে? অধিকাংশ পুরুষ তা-ই করে।”
গায়ক জানালেন জীবনে এই মোড় এলে এড়িয়ে চলাই শ্রেয়। প্রেম ও কর্তব্যের সংঘাত নিয়ে কথাবার্তা জারি থাকে দু’জনের মধ্যে। “স্ত্রী কি তা হলে শুধুই নিরাপত্তার জায়গা?” প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছিলেন ঋতুপর্ণ। তাঁর প্রশ্ন বোঝাতে গিয়ে পরিচালক জানান, স্ত্রীর প্রেম স্থায়ী, কিন্তু বাইরের সম্পর্কটি কত দিন টিকবে তা জানা নেই। তাই ঝুঁকি না নেওয়ার প্রবণতা? নচিকেতা নিরুত্তর।
ঋতুপর্ণ ঘোষের বক্তব্য ছিল, বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্ক নিয়ে স্ত্রীর সঙ্গে খোলাখুলি কথা বলা যায়, খোরপোশ দিয়ে তাঁকে বলা যায়, “আমি এখন অন্য এক জনকে ভালবাসি, তুমি যাও।” কিন্তু এই পদক্ষেপ না করার নেপথ্যে কি নচিকেতার জনপ্রিয়তা নিয়ে সচেতনতা? কারণ বিচ্ছেদ হলে মানুষ নানা কথা বলবে।
এর উত্তরে নচিকেতা বলেন, “আমার মা তো দুর্গাঠাকুরের মতো দেখতে সুন্দর নন। কিন্তু আমি দুর্গাঠাকুরকেও মা বলি, আমার মাকেও মা ডাকি।” তিনি আরও যোগ করলেন, “কিন্তু যখন আমাকে কেউ জিজ্ঞেস করে, আমার মাকে কেমন দেখতে? আমি বলি, আমার মাকে সুন্দর দেখতে।”