মহেশের মতে, আধ্যাত্মিক গুরুদের সেই ভূমিকাই সমাজে, যেমনটা থাকে বিনোদন প্রদানকারীদের। ছবি: সংগৃহীত।
সাধারণ মানুষের মতো বিনোদন জগতের তারকাদেরও নির্ভরতা থাকে আধ্যাত্মিক গুরুদের প্রতি। চিত্রনির্মাতা মহেশ ভট্ট ধর্মগুরু ওশো রজনীশের অনুরক্ত হয়ে পড়েছিলেন। যদিও ভক্তির স্রোতে ভাটা পড়ে অচিরেই। সম্পর্ক দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। আরবাজ় খানের এক অনুষ্ঠানে মহেশ জানান এ কথা।
মহেশ বলেন, “আমি সাধারণ মানুষ ছিলাম। ‘বিশ্বাসঘাত’, ‘মঞ্জিলেঁ আউর ভি হ্যায়’-এর মতো ছবি করেছিলাম। সবগুলোই ফ্লপ করে। সে সময় আমি ওশো রজনীশের কাছে যাই। পুণের সম্মোহন সৃষ্টিকারী গুরু ছিলেন তিনি। তাঁর কাছে নিজেকে সমর্পণ করেছিলাম। গেরুয়া পোশাক পরতাম, দিনে পাঁচ বার ধ্যান করতাম।” কিন্তু এক সময় মনে হয় সব বৃথা, ভুল করছেন। রজনীশের মোহ কাটিয়ে বেরিয়ে আসতে চান মহেশ।
বিনোদ খন্নার সঙ্গে রজনীশের পরিচয়ও মহেশই করিয়ে দিয়েছিলেন। বিনোদ খ্যাতির শীর্ষে থাকাকালীন সব ছেড়েছুড়ে রজনীশের পথ অনুসরণ করে আমেরিকায় চলে যান। মহেশ বলেন, “আমি রজনীশের সঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদ করেছিলাম, কিন্তু বিনোদ যুক্ত ছিল। রজনীশ আমায় ফিরিয়ে আনতে বিনোদকে ব্যবহার করেছিলেন। আমি মন্ত্রপুত মালা ছিঁড়ে কমোডে ফেলে দিয়েছিলাম।”
মহেশ বলে চলেন, “আমার ভিতরে তখনও ঈর্ষা ছিল, কিন্তু আমি ভাল ভাল কথা বলতাম। নিজেকে ভণ্ড বলে মনে হত। দুনিয়ার সঙ্গে, নিজের সঙ্গে আমি মিথ্যাচার করতে পারছিলাম না।”
বিনোদ তাঁকে জানান, ‘ভগবান’( রজনীশ) রেগে গিয়েছেন মহেশ মালা ছিঁড়ে কমোডে ফেলে দিয়েছেন বলে। মহেশ জানান, এ সব ফালতু ব্যাপার। রজনীশ মালাটি তাঁকে ফিরিয়ে দিতে বলেছেন বলে জানান বিনোদ। মহেশ রাজি না হতে শেষমেশ চাপা গলায় বিনোদ টেলিফোনে বন্ধুকে বলেন, “না হলে রজনীশ তোমায় শেষ করে দেবে।”
যদিও ধর্মগুরু বলেছিলেন বিনোদকে, “আমি মহেশের জন্য খুব চেষ্টা করেছিলাম, কিন্তু ওর মধ্যে তা নেই, যা তোমার মধ্যে আছে।”
যদিও এই ঘটনায় বিনোদের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক নষ্ট হয়নি বলে জানান মহেশ।
আরবাজ়কে জানান মহেশ, তাঁর পিতা সেলিম খানের সঙ্গেও তিনি রজনীশের কাছে গিয়েছিলেন। রজনীশকে মহেশ বলেন, ‘‘আমি ব্যবসা করছি মানুষ একা বলে, আপনি ব্যবসা করছেন মানুষ দুঃখে আছে বলে। যদি আপনার কাছে আলো থাকে, দিশা থাকে, আপনি দিতে পারেন। যদি না থাকে, তাহলে কী হবে আর!’’
পনেরো মিনিটের নির্ধারিত কথাবার্তা পৌঁছে যায় দেড় ঘণ্টার আলোচনায়।
মহেশ আরও বলেন, “যখন আমি চলে আসি, বুঝতে পারি, রজনীশ সব কিছুর জন্য দায়ী নন। আমি যা শুনতে চেয়েছিলাম, তিনি সেটাই বলেছিলেন। তিনি বিনোদন দিতে পারেন, কথার জালে আটকাতে পারেন। তিনি খুবই সফল মানুষ। মানুষকে তিনি সাময়িক সুখ দিতে পারেন, কিন্তু এটা এক ধরনের ‘আধ্যাত্মিক ড্রাগ’।”
মহেশের মতে, আধ্যাত্মিক গুরুদের সেই ভূমিকাই সমাজে, যেমনটা থাকে বিনোদন প্রদানকারীদের।