গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
প্রতি বছরই নিত্যনতুন গল্প নিয়ে টেলিভিশনের পর্দায় হাজির হন পরিচালকরা। চ্যানেলে চ্যানেলে প্রতিযোগিতা চলে, কাদের গল্প সবচেয়ে ‘অন্য রকম’। প্রতি বৃহস্পতিবারের টিআরপি রিপোর্ট দেখলে বোঝা যায়, কোন গল্প বেশি ‘চলছে’। কিন্তু সেই ছকের বাইরে গিয়ে কিছু গল্প ভিড়ের মধ্যে আলাদা হয়ে ওঠে। ২০২৩ সালে গতে বাঁধা নিয়মের বাইরে বেরোনোর সাহস দেখিয়েছে, এমন ৫ সিরিয়াল বেছে নিল আনন্দবাজার অনলাইন।
কার কাছে কই মনের কথা
শিমুল, সুচরিতা, বিপাশা, শীর্ষা এবং প্রতীক্ষা একে অপরের প্রতিবেশী। আবার একে অন্যের সুখ-দুঃখের সঙ্গীও। শিমুল সদ্য বিয়ে হয়ে এসেছে পাড়ায়। শাশুড়ি বেশ কড়া ধাঁচের। স্বামীও তেমনই। নতুন বৌয়ের বন্ধু বলতে বিপাশা, সুচরিতারাই। প্রতিবেশী হয়েও মেয়েরা যে মেয়েদের ঢাল হয়ে দাঁড়াতে পারে, এই ধারাবাহিকে পরিচালকের সেই বার্তা স্পষ্ট। প্রচলিত শাশুড়ি-বৌমার কোন্দলের ক্ষেত্রেও রয়েছে মোচড়। ধীরে ধীরে শাশুড়ি এবং বৌমা পরস্পরের বন্ধু হয়ে উঠেছে। ১০০ পর্ব পার করে ফেলেছে এই কাহিনি।
জল থই থই ভালবাসা
অপরাজিতা আঢ্য এবং চন্দন সেন জুটি আগে কখনও ছোট পর্দায় আসেনি। লীনা গঙ্গোপাধ্যায় এনেছেন। এই গল্পে অবশ্য বড় পর্দার বেশ কিছু চেনামুখকেও প্রতিদিন দেখা যাচ্ছে। কাহিনিতে রয়েছে নতুনত্বের ছোঁয়া। ইদানীং নারী ক্ষমতায়ন, শাশুড়ি-বৌমার কোন্দলের ভিড়ে সাধারণ ছিমছাম গল্প বিশেষ দেখা যায় না। এই সিরিয়াল এক হাসিখুশি, সাধারণ গল্প বলে। যেখানে কোনও প্যাঁচ নেই। হিংসা নেই। আছে যৌথ পরিবারের নস্ট্যালজিয়া।
জগদ্ধাত্রী
সিরিয়াল পাড়ায় নতুন ট্রেন্ড বলছে, যে কোনও গল্পের মেয়াদ টেনেটুনে পাঁচ থেকে আট মাস। অল্প দিনের মধ্যেই সিরিয়াল বন্ধ করে দেওয়া হয় সাধারণত। নেপথ্যে মূল কারণ দুটি। কম টিআরপি এবং কাহিনির একঘেয়েমি। কিন্তু ‘জগদ্ধাত্রী’ এই দুই নিরিখেই সফল। এক বছরেরও বেশি সময় ধরে সম্প্রচারিত হচ্ছে এই সিরিয়াল। প্রতিদিনই গল্পে নিত্যনতুন মোড়। অ্যাকশন আর রোমান্সের মিশেলে ‘জগদ্ধাত্রী’ সেরার তালিকায় থাকবেই।
লভ বিয়ে আজকাল
যিশু উজ্জ্বল সেনগুপ্ত প্রযোজনা সংস্থার এটি দ্বিতীয় সিরিয়াল। গত দু’বছর ধরে নীলাঞ্জনা সেনগুপ্ত এবং যিশু দ্বিতীয় ইনিংসের খেলা শুরু করেছেন। আরও বেশি পরীক্ষানিরীক্ষা চালিয়ে যাচ্ছেন গল্প নিয়ে। তাঁদের দ্বিতীয় সিরিয়ালের গল্প সকলের চেনা। তবে ‘চমক’ জুন মাল্য। বহু দিন পরে আবার খলনায়িকার চরিত্রে দেখা গেল অধুনা মেদিনীপুরের বিধায়ককে। এত দিন তাঁকে শুধুই ‘ভাল মা’-এর চরিত্রেই দেখা যেত। এ বার একেবারে উল্টো! স্বভাবতই উত্তেজনা তুঙ্গে।
তুঁতে
একটা সময় চ্যানেলে শুধু নারী স্বাধীনতা, নারী ক্ষমতায়নের গল্প দেখা যেত। এখন তুলনায় বিভিন্ন স্বাদের গল্প দেখা যায়। যেমন, শাশুড়ির সঙ্গে বৌমার বন্ধুত্ব বা গ্রামের মেয়ের শহরে এসে প্রতিষ্ঠা পেতে লড়াই। ‘তুঁতে’ সিরিয়ালের গল্প অনেকটা তেমনই। গ্রাম থেকে সে শহরে এসেছিল ডিজ়াইনার হওয়ার লক্ষ্যে। শহরে এসে কত বাধাবিঘ্ন পার করতে হয়, সেই কাহিনিই এই সিরিয়ালের আধার। গতানুগতিক শাশুড়ি-বৌমার গল্পের মধ্যে এই সিরিয়াল আলাদা।