গত পাঁচ মাস তাঁরা নবদম্পতি। কিন্তু একে অপরের সঙ্গে সময় কাটিয়েছেন কতটা? বিয়ের পরেই লোকসভা নির্বাচনের নির্ঘণ্ট ছিল। ফলে, কাঞ্চন মল্লিক তাঁর নতুন বৌ শ্রীময়ী চট্টরাজকে একেবারেই সময় দিতে পারেননি। কাজের জন্য অনেক দিন আবার কাঞ্চনকে মুম্বইয়েও থাকতে হয়েছিল। তাই নিয়ে জামাইষষ্ঠী উপলক্ষে ভিডিয়ো শুট করতে গিয়ে আনন্দবাজার অনলাইনের কাছে অনুযোগও জানিয়েছিলেন অভিনেত্রী। অভিমান দীর্ঘ দিন জমতে দেননি কাঞ্চন। এর পরেই বিধায়ক-অভিনেতা স্ত্রীকে নিয়ে সোজা মলদ্বীপে। উদ্দেশ্য একটাই, নিরিবিলিতে নতুন করে প্রেম!
বিয়ের পর থেকেই কাঞ্চন অবশ্য শ্রীময়ীকে কিছু না কিছু চমক দিয়েই চলেছেন। যেমন, সম্প্রতি স্ত্রী, পরিবারকে নিয়ে পৌঁছে গিয়েছিলেন তাজপুর। সেখানে তিনি সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের আগামী ছবির শুটিংও সেরেছেন। আবার শ্রীময়ীকে নিয়ে সমুদ্রতীরে চাঁদের আলোও গায়ে মেখেছেন। গত রবিবার ছিল শ্রীময়ীর জন্মদিন। শনিবার রাত ১২টা থেকে উদ্যাপনের আয়োজন ছিল। সে সব মিটতেই সোমবার উড়ে গিয়েছেন মলদ্বীপ।
সোমবার সকালেই শ্রীময়ী পোস্ট করে জানিয়েছিলেন, বহু প্রতীক্ষিত মধুচন্দ্রিমায় যাচ্ছেন তাঁরা। বিমানবন্দর থেকে ছবি শেয়ার করেছিলেন তারকা জুটি। মধুচন্দ্রিমায় কোথায় যাচ্ছেন, তা নিয়ে জল্পনা ছিল প্রথম থেকেই। আনন্দবাজার অনলাইনকে শ্রীময়ী জানান, মলদ্বীপে মধুচন্দ্রিমায় তাঁরা।
মলদ্বীপে পা রেখেই ভিডিয়ো দিয়েছিলেন শ্রীময়ী চট্টরাজ। তাঁর ভিডিয়োয় গোলাপের পাপড়ি ছড়ানো বিছানা থেকে নীল জলরাশির ঝলক। সেই ঝলকের ভিডিয়ো কাঞ্চন মল্লিক আর তাঁর অভিনেত্রী স্ত্রীর মধুচন্দ্রিমা নিয়ে আগ্রহ বাড়িয়ে দিয়েছে সকলের।
যে ঘরে তাঁরা থাকবেন, সেই ঘরে ধবধবে সাদা বিছানার সামনে রাখা শ্রীময়ীর জন্মদিনের কেক। দেখে অনুরাগীরা বুঝে গিয়েছেন, বিদেশে জন্মদিনের দ্বিতীয় পর্ব পালন করবেন তাঁরা। বিছানায় ছড়ানো ফুলের পাপড়ি ও পাতা। আর দরজা খুললেই দেখা যাচ্ছে নীল জলরাশি। সিঁড়ি নেমে গিয়েছে সে দিকে।
দ্বিতীয় দিনের শেষে আর ঝলক নয়। সরাসরি জলের মধ্যে ভালবাসার গতি প্রকাশ্যে আনলেন তাঁরা। দেখা গেল ঊর্ধ্বাঙ্গ অনাবৃত বিধায়ক-অভিনেতার। স্ত্রীকে নিয়ে জলকেলিতে মগ্ন তিনি। কালো বিকিনিতে সমান উত্তাপ ছড়িয়েছেন শ্রীময়ীও।
এ তো গেল ছবির গল্প। দিন দুই ধরে আর কী কী করেছেন কাঞ্চন-শ্রীময়ী? সে কথাও গোপন রাখেননি তাঁরা। একমাত্র আনন্দবাজার অনলাইনকে শ্রীময়ী বলেছেন, “বিশাল একটা দ্বীপ জুড়ে আমাদের রিসর্ট। সুন্দর করে সাজানো। নানা ধরনের সুইমিং পুল রয়েছে।” পুরো ঘুরে দেখতেই কাঞ্চন-শ্রীময়ীর সারা দিন শেষ। সকালে জলখাবার খেয়ে জলে নেমেছিলেন। নীল আকাশের নীচে, সমুদ্রকে সাক্ষী রেখে তাঁরা নতুন করে যেন নিজেদের চিনেছেন। সেই সব দামি মুহূর্ত বন্দি ক্যামেরায়।
শ্রীময়ী আরও জানিয়েছেন, রিসর্টে তিনটি রেস্তরাঁ। তিনটিতে বিভিন্ন রকমের খাবার সাজানো। যেমন, একটিতে নানা দেশের রকমারি খাবার। অন্যটিতে নানা ধরনের সামুদ্রিক, ইউরোপীয়, এশিয়ার খাবার পাওয়া যায়। আর একটিতে নিজেদের পছন্দমতো খাবার তৈরির সুযোগ রয়েছে।
রিসর্টের আরও একটি বৈশিষ্ট্য, অতিথিদের জন্মদিন সুন্দর করে পালন করা। অভিনেত্রী জানিয়েছেন, কাঞ্চন রিসর্ট কর্তৃপক্ষকে আগাম শ্রীময়ীর জন্মদিনের কথা জানিয়েছিলেন। সেই সুবাদে রিসর্টে পা রাখতে না রাখতেই কেক উপহার পেয়েছেন তিনি।
স্বামীর থেকে এত দামি উপহার পেয়ে কতটা খুশি শ্রীময়ী? তাঁর প্রত্যেক কথায় ভাললাগার ছোঁয়া। অকপটে জানিয়েছেন, “বিয়ের পর নির্বাচনী প্রচারে কাঞ্চন ব্যস্ত। আমি কখনও অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে। কখনও বাড়িতে একা। মনখারাপ হয়ে যাচ্ছিল।” বিধায়ক-অভিনেতা সেটা বুঝেছিলেন। বুঝেছিলেন বলেই এত বড় চমক উপহার দিলেন।
আপাতত কাজ থেকে দূরে, একান্তে দিনযাপন। শ্রীময়ীর কথায়, “প্রকৃতির মাঝে শুধুই আমরা। নিজেদের মতো করে একে অন্যকে নতুন করে যেন চিনছি, জানছি। ডুব দিচ্ছি ভাললাগার অতল গভীরে।”
মধুচন্দ্রিমার আগে জন্মদিন পালনের ছবি ভাগ করে নিয়েছিলেন শ্রীময়ী। মা-বাবা ও কাঞ্চনকে পাশে নিয়ে জন্মদিনের কেক কাটেন। দুপুরে ভূরিভোজ পর্ব। জন্মদিনের কেক, উপহার, খাওয়াদাওয়ার সব ছবি তাঁর সমাজমাধ্যমে।
জন্মদিনে স্ত্রীর সঙ্গে অনেক ছবি পোস্ট করেছিলেন কাঞ্চনও। আবেগঘন পোস্টে অভিনেতা লেখেন, “ঈশ্বর তোর মনের সব ইচ্ছা পূরণ করুন। আমার জন্য তোর ত্যাগ আজীবন মনে রাখব। আমার জীবন গুছিয়ে দেওয়ার জন্য এবং আমাকে ভালবাসা দিয়ে আগলে রাখার জন্য আমি তোর কাছে সারা জীবন কৃতজ্ঞ থাকব। হ্যাঁ, আমি বলতে পারি, আমি তোর জন্য নতুন করে বাঁচতে শিখেছি এবং নতুন ভাবে জীবনে পথ চলা শুরু করেছি। এই ভাবেই সব সময় আমার পাশে থাকিস। আমি তোকে খুব খুব খুব ভালবাসি।”