(বাঁ দিক থেকে) রুদ্রনীল ঘোষ, রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়, জুন মাল্য, দেব, জয়জিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়। গ্রাফিক : সনৎ সিংহ।
অষ্টাদশ লোকসভা নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গে গণনা শুরুর পর থেকেই ঘাসফুলের প্রার্থীদের জয়ের পরিসংখ্যান বেড়েই চলেছে। অন্য দিকে, এ বার পশ্চিমবঙ্গে নিজেদের আসনসংখ্যা নিয়ে আত্মবিশ্বাসী ছিল বিজেপি। তবে যত বেলা গড়িয়েছে, ছবিটা যেন ততই স্পষ্ট হতে শুরু করে। হাসি চওড়া হয়েছে তৃণমূল প্রার্থীদের। ভোটের আগে যে সুর চড়িয়েছিল বিজেপি, তা যে মেলেনি, সে কথা ভোটের ফলাফলে পরিষ্কার। তৃণমূলের অন্যান্য প্রার্থী ছাড়াও ভাল ফল করেছেন তারকা প্রার্থীরা। এই নির্বাচনে তৃণমূলের তরফে পাঁচ তারকা প্রার্থী দাঁড়িয়েছিলেন। জুন মাল্য, রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়, সায়নী ঘোষ, দেব ও শত্রুঘ্ন সিন্হা। এই পাঁচ জনই জয়ী হয়েছেন। প্রতি বছরই নির্বাচনের সময় রাজনীতিতে তারকা মুখ দেখা যায়। খানিক সেটাই বর্তমান সময়ের ‘ট্রেন্ড’। এ বার নিজের ইন্ডাস্ট্রির বন্ধুরা সংসদ ভবনে পা রাখার আগেই তৃণমূলের প্রার্থীদের কাছে কিছু দাবি রাখলেন অভিনেতা জয়জিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়। তেমনই বিজেপির অনুগামীদের তরফ থেকে পেয়েছেন হুমকি। সাহায্য চেয়েছিলেন বিজেপির রুদ্রনীল ঘোষের কাছে। তবে জবাব নাকি মেলেনি। এই লোকসভা নির্বাচনের জয়ের পিছনে ‘ম্যান অফ দ্য ম্যাচ’টি কে, আনন্দবাজার অনলাইনকে জানালেন অভিনেতা!
এমনিতেই অভিনেতার রসবোধের কারণে মাঝেমাঝেই বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছে। ৪ জুন বিজেপির বিপর্যয়ের ছবি পরিষ্কার হতেই জয়জিৎ সমাজমাধ্যমে লেখেন, ‘‘হনুমানদের হুপ হাপ কমেছে, যাকে তাকে এনকাউন্টার করে দেব, কেউ বলছে না। আধিকারী পালিয়েছে ধাই কিরি কিরি।’’ গোটাটাই ব্যঙ্গাত্মক ভাবে লিখেছেন। তবে তার জন্য নাকি তাঁর সমাজমাধ্যমে এসে সেই দলের সমর্থকরা নানা কুকথা লিখে যাচ্ছেন। কেউ কেউ আবার হুমকি দিতে ছাড়েননি। তাই সাহায্য চেয়েছিলেন বিজেপি কর্মী রুদ্রনীলের কাছে। তবে সাহায্য সে ভাবে করে উঠতে পারেননি তিনি। জয়জিতের কথায়, ‘‘ওকে ট্যাগ করেছিলাম ওই কমেন্টগুলোতে। হয়তো ফলটা এমন হবে বুঝে গিয়েছিল আগে থেকে। তাই হয়তো তেমন কিছু করতে পারেনি। কিংবা হয়তো দেখে উঠতেই পারেনি।’’
অন্য দিকে, জয়জিতের দুই কাছের বন্ধু রচনা ও জুনের কাঁধে নতুন দায়িত্ব। তাই দুই বন্ধুর জন্য খুশি তিনি। যদিও অভিনেতা জানান, তাঁর দুই বন্ধু যে দলের হয়ে জিতেছেন তার সঙ্গে তাঁর তেমন কোনও সম্পর্কই নেই তাঁর। তবু জয়জিৎ জানান, এই ভোট আসলে কোনও তারকা প্রার্থী নয়, দলের কান্ডারি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখেই পড়েছে। তবে রচনা ও জুন, দু’জনেই যেমন ব্যক্তি, তাঁরা যে মানুষের কাজ করবেন সেই বিষয়ে নিশ্চিত অভিনেতা। পাশপাশি জয়জিৎ বলেন, ‘‘আমি শুধু চাই, জুন ও রচনা যাতে রাজ্য সরকারকে সঙ্গে নিয়ে আরও বেশি করে সিনেমার উন্নতির বিষয়টা দেখে। চেষ্টা করে, যাতে সিঙ্গল স্ক্রিনের অবস্থা ফেরানো যায়। আর দেব তৃতীয় বার সাংসদ হল। ও যে ভাল কাজ করে, এই জয়ই তার প্রমাণ।’’
শেষে অভিনেতার সংযোজন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গে আমরা যে ভাবে বড় হয়েছি, সেখানে সাম্প্রদায়িকতার কোনও জায়গা নেই। আর বিরোধী দলনেতা উত্তরপ্রদেশ মডেলে হুমকি দেওয়ার চেষ্টা করছেন। আমার মনে হল, ইউপিতে যে মডেল চলছে না, পশ্চিমবঙ্গে সেই মডেল চলবে কী ভাবে?’’