Sikandar Disaster

ইদের আনন্দ কাজে লাগল না ‘সিকন্দর’-এর, দর্শকশূন্য প্রেক্ষাগৃহ কি সলমনের ‘শেষ’-এর ইঙ্গিত?

ইদে সলমনের ছবিমুক্তি। অথচ প্রেক্ষাগৃহ ফাঁকা! উদ্‌যাপনের আবহেও হলমুখী নন ভাইজানের অনুরাগীরা। ইদ কি আর সহ্য হচ্ছে না তাঁর?

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ০১ এপ্রিল ২০২৫ ১২:৪৫
সলমন খানের সময় শেষ?

সলমন খানের সময় শেষ? ছবি: সংগৃহীত।

সত্যজিৎ রায়ের ‘নায়ক’ ছবিতে ‘অরিন্দম মুখার্জি’ সংবাদিক ‘অদিতি’কে জানিয়েছিলেন, পরপর তিনটি ছবি ‘ফ্লপ’ মানেই নায়কের ভবিষ্যৎ শেষ। জনপ্রিয়তার চূড়া থেকে নেমে এসে তিনিও অতি সাধারণ! সলমন খানের ক্ষেত্রেও কি সেটাই ঘটতে চলেছে?

Advertisement

২০১৭-র ইদে প্রথম বিপর্যয়। ওই বছর মুক্তি পেয়েছিল সলমন খানের ‘টিউবলাইট’। দর্শকের অভাবে প্রেক্ষাগৃহ অন্ধকার। দ্বিতীয় বিপর্যয় এর পাঁচ বছর পরে। সে বার মুক্তি পেয়েছিল ‘কিসি কা ভাই কিসি কি জান’। ছবিটি প্রথম দিনে ব্যবসা করেছিল মাত্র ১৫.৮১ কোটি টাকা! পরের বছর ইদমুক্তি থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছিলেন সলমন। তাঁর ‘টাইগার’ ফ্র্যাঞ্চাইজ়ি মুক্তি পেয়েছিল দীপাবলির আবহে। ছবি হিট। এ বছর ফের তিনি ‘সিকন্দর’ নিয়ে ইদে ফিরেছেন। আবারও বিপর্যয়। প্রথম দিনের আয় ৫৪ কোটি টাকা। আবারও দর্শকশূন্য সিনেমা হল। ইদের দিনেও ফাঁকা হল ভরেনি! আর তারই জেরে নাকি দেশের বিভিন্ন প্রেক্ষাগৃহে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে প্রদর্শন, জানা গিয়েছে এমনই। ‘সিকন্দর’কে সরিয়ে তার জায়গায় আসতে চলেছে ‘অল দ্য বেস্ট পন্ডা’, ‘এল ২ এমপুরাণ’, ‘’দ্য ডিপ্লোম্যাট ছবিগুলি।

পরপর না হলেও তিন বার ইদে বিপর্যয়ের মুখোমুখি ভাইজান। ফলে চর্চা শুরু, এ বার কি অভিনেতার অবসর নেওয়া উচিত?

রশ্মিকা মন্দনা কি সলমন খানের পাশে বেমানান?

রশ্মিকা মন্দনা কি সলমন খানের পাশে বেমানান? ছবি: সংগৃহীত।

যদিও এই প্রেক্ষিতে নানা মত শোনা যাচ্ছে চলচ্চিত্র জগতে। অনেকেই বলছেন, রবিবার ছবিমুক্তির আগে সমাজমাধ্যমে ফাঁস হয়ে গিয়েছে ‘সিকন্দর’। দর্শক বাড়ি বসে দেখে ফেলেছেন। এর পর কেন তাঁরা প্রেক্ষাগৃহে যাবেন? আবার অনেকের দাবি, যে হেতু গত ইদে সলমন অনুপস্থিত ছিলেন তাই এ বছর তাঁকে ঘিরে অতিরিক্ত আশা ছিল। সেই প্রত্যাশা পূরণ না হতেই সমালোচনা শুরু। এ সবের বাইরে রয়েছে অভিনেতার নিজস্ব ক্লান্তি। অনেকেই মনে করছেন, ‘সিকন্দর’-এর ট্রেলারমুক্তির দিন সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত সলমনকে ভীষণ ক্লান্ত দেখাচ্ছিল। শুধু তা-ই নয়, ৩১ বছরের ছোট নায়িকা রশ্মিকা মন্দনাকে নিয়েও তৈরি হয়েছে বিতর্ক। দর্শক নাকি মেনে নিতে পারছেন না এই রসায়ন। তার উপর সলমনে অতিরিক্ত ওজনবৃদ্ধিও খানিকটা প্রভাব ফেলেছে বলে মনে করছেন অনেকে।

এ প্রসঙ্গে স্বাভাবিক ভাবেই উঠে আসছে শাহরুখ খানের তুলনা। ২০১৮ সালে ব্যর্থ হয়েছিল তাঁর ‘জিরো’, বিপরীতে ক্যাটরিনা কইফ, অনুষ্কা শর্মার মতো নায়িকারা থাকা সত্ত্বেও। ‘কিং খান’ তার পর চার বছর অভিনয় থেকে দূরে ছিলেন। নিজেকে প্রস্তুত করে ফিরেছেন ‘পঠান’, ‘জওয়ান’ ছবিতে। দু’টি ছবিই হিট। রোমান্টিক নায়ক রাতারাতি বদলে গিয়েছেন ‘অ্যাকশন হিরো’তে। বাড়তি মেদ ঝরিয়ে তাঁর চাবুকের মতো চেহারা এই প্রজন্মকে সমান আকৃষ্ট করেছে। সমালোচকেরা বলছেন, সলমন কিন্তু কিছুতেই নিজেকে বদলাতে পারছেন না! জাতীয় স্তরের সমস্ত সংবাদমাধ্যম ‘সিকন্দর’-এর সমালোচনায় মুখর। দাবি, ছবিতে সলমন থাকলেও অভিনেতার উপস্থিতি ঘিরে সেই মুগ্ধতা কই!

একই কথা শোনা গিয়েছে টলিউডেও। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক কলকাতার এক বাণিজ্য বিশ্লেষক আনন্দবাজার ডট কমকে জানিয়েছেন, উত্তর কলকাতার একটি প্রেক্ষাগৃহে সন্ধ্যার প্রদর্শনে এখনও রুক্মিণী মৈত্রের বাংলা ছবি ‘বিনোদিনী’ রয়েছে। ৬৭ দিনের পরেও সেই ছবি ‘সিকন্দর’-এর থেকে বেশি ব্যবসা দিচ্ছে!

আর এক বিশ্লেষক শ্যামল দত্তের উপলব্ধি, “সম্ভবত মৃত্যুভয়ে কাবু সলমন। যার ছাপ ছবিতে স্পষ্ট। পর্দায় তাঁকে দেখে বোঝা গিয়েছে, জোর করে অভিনয় করছেন। কাজে মন নেই! ফলে, জোরালো সংলাপ থাকলেও অভিনেতার উপস্থিতিতে সেই ‘জোশ’ নেই।” তাঁর মতে, কিছু দৃশ্যে ভিএফএক্সের কাজ দুর্বল। সলমনের ছবি মানেই জমজমাট গান। এই ছবিতে সেটাও অনুপস্থিত। এ ছাড়া, বেশ কিছু দৃশ্যে তাঁকে যথেষ্ট বয়স্ক দেখিয়েছে। সব মিলিয়ে তাই শ্যামলের আশঙ্কা, “এ ভাবে একের পর এক ছবি ব্যর্থ হলে আগামী কয়েক বছরের মধ্যে অভিনয় দুনিয়া থেকে সলমন খান নামটাই হয়তো মুছে যাবে।”

Advertisement
আরও পড়ুন