নতুন ধারাবাহিকে ইন্দ্রাশিস রায়। নিজস্ব চিত্র।
ধারাবাহিক ‘জল থইথই ভালবাসা’ শেষ। ধারাবাহিকের নায়ক ‘আসমান’ ওরফে ইন্দ্রাশিস রায়ের কিন্তু ছুটি হয়নি। দিনে ১৯টি দৃশ্যের শুটিং করছেন!
অবশ্যই অন্য ধারাবাহিকে। নতুন রূপে, নতুন চরিত্রে। সম্প্রতি জানা গিয়েছে, তিনি যিশু সেনগুপ্ত-নীলাঞ্জনা সেনগুপ্তের ‘হরগৌরী পাইস হোটেল’-এ যোগ দিয়েছেন। ১৫ বছর এগিয়ে গিয়েছে ধারাবাহিক। এক পথদুর্ঘটনায় মারা গিয়েছে নায়ক-নায়িকা শঙ্কর-ঐশানী। প্রাণে বেঁচেছে তাদের একমাত্র মেয়ে ধৃতি। এ বার তার গল্প। এই চরিত্রে অভিনয় করছেন শুভস্মিতা মুখোপাধ্যায়। তিনিই এর আগে ‘ঐশানী’ হয়েছিলেন। এ বার তাঁর বিপরীতে ইন্দ্রাশিস।
সাধারণত একটি ধারাবাহিক শেষ হলে অভিনেতারা সামান্য অবসর নেন। ইন্দ্রাশিস সেটা করলেন না। বসে থাকবেন না বলে?
আনন্দবাজার অনলাইনের তরফ থেকে জানতে চাওয়া হয়েছিল অভিনেতার কাছে। ইন্দ্রাশিসের যুক্তি, “এ রকম কোনও ভাবনাই ছিল না। যিশুদা-নীলাঞ্জনাদির থেকে ডাক পেয়েছিলাম। অন্য ধরনের চরিত্র। জনপ্রিয় ধারাবাহিক। ফলে না বলার মতো কোনও কারণ খুঁজে পাইনি।”
‘জল থইথই ভালবাসা’-র আসমান, ধারাবাহিক ‘হরগৌরী পাইস হোটেল’-এর রুদ্র। তাঁর সঙ্গে ধৃতির বিয়ে ঠিক হয়ে রয়েছে। যদিও ধৃতি এখনও নিখোঁজ। অন্য দিকে, বিদেশ থেকে পড়া শেষ করে দেশে ফিরেছে রুদ্র। ধৃতিকে সে-ও খুঁজছে।
কোনও ধারাবাহিকের শুরু থেকে থাকা, আর কোনও ধারাবাহিকের মাঝপথে যোগ দেওয়া— কতটা আলাদা? নিজেকে প্রমাণ করার তাগিদ কি এখানে বেশি?
ইতিমধ্যেই ‘হরগৌরী পাইস হোটেল’-এর লোগো, পোস্টার, চিত্রনাট্য সব বদলে গিয়েছে। সেই দিক তুলে ধরে ইন্দ্রাশিস বলেছেন, “ধারাবাহিকের পুরোটাই বদলে গিয়েছে। ‘ব্র্যান্ড নিউ’ ধারাবাহিকের মতো। সেখানে ‘রুদ্র’ নতুন চরিত্র। অভিনয়ের অনেক সুযোগ। সেটাই করার চেষ্টা করছি। বাকিটা দর্শক বলবে।”
টেলিপাড়া বলছে, ইদানীং দর্শক আর রেটিং চার্টের উপরেই নাকি ধারাবাহিকের ভাগ্য নির্ধারিত। যে ধারাবাহিক ভাল ফল করছে সে টিকে যাচ্ছে। নইলে কম সময়ে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। যেমন, ‘জল থইথই ভালবাসা’। একাধিক জনপ্রিয় মুখ থাকা সত্ত্বেও মাত্র ন’মাসে বন্ধ সেটি। এই অস্থিরতা কি ছোট পর্দার অভিনেতাদের পেশাজীবনে প্রভাব ফেলছে? কারণ, ধারাবাহিকের স্থায়িত্বের জন্যই অনেকে এখানে কাজ করতে আগ্রহী। এতে উপার্জনও স্থায়ী হয়, তাই।
প্রসঙ্গ উঠতেই নায়কের মত, বিষয়টি অস্বীকার করার জায়গা নেই। সত্যিই পালাবদল ঘটেছে টেলিপাড়ায়। তাঁর কথায়, “এর জন্য দায়ী অতিমারী। করোনা মানুষের জীবন, মানসিকতা— সব বদলে দিয়েছে। দর্শকের ধৈর্য কমেছে। ফলে, ধারাবাহিকের সময়সীমাও কমছে। এখন ধারাবাহিকের আগে ‘মেগা’ শব্দ আর বসানো যায় না।” একই সঙ্গে আশাবাদী তিনি। যুক্তি, সমস্যা থাকলে সমাধানও থাকবে। এই অস্থিরতা সাময়িক। শীঘ্রই হয়তো এই পর্যায় কেটে যাবে। তার আগে অভিনেতাদের স্রোতে গা ভাসানো ছাড়া উপায় নেই।