(বাঁ দিকে) আমেরিকার প্রেসিডেন্ট পদে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী কমলা হ্যারিসকে সমর্থন করছেন অভিনেত্রী পূর্ণা জগন্নাথন। (ডান দিকে) ছবি: সংগৃহীত।
সুদূর আমেরিকায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। ভারতীয় মনে কি পাল্লা ভারী কমলা হ্যারিসের? শুধুমাত্র ভারতীয় বংশোদ্ভূত নারী বলেই কি এই পক্ষপাতিত্ব? সম্প্রতি সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বিষয়টি স্পষ্ট করলেন আর এক ভারতীয় বংশোদ্ভূত মহিলা, পূর্ণা জগন্নাথন। আমেরিকান অভিনেত্রী ও প্রযোজককে ভারতীয়রা চেনেন ‘ডেলহি বেলি’ ছবির মীনাক্ষী বশিষ্ঠ হিসাবে। পূর্ণা স্পষ্ট জানিয়েছেন, কমলাকে পছন্দ করার একাধিক কারণ রয়েছে।
একান্ন বছরের অভিনেত্রী বলেছেন, “আমি সর্বান্তকরণে কমলাকে সমর্থন করি। এই নির্বাচনে অনেকগুলি ইস্যু রয়েছে। আমি নিজে একজন অভিবাসী, আমি যৌন নিগ্রহের শিকার, আমি মনে করি পশ্চিম এশিয়ায় যুদ্ধবিরতি এবং শান্তি প্রতিষ্ঠার আশু প্রয়োজন এবং আমি নিজে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবও অনুভব করেছি।” পূর্ণার আশা, এ সব বিষয়ে কাজ করতে হলে ভরসা করতেই হবে ডেমোক্র্যাট দলের উপর। তিনি বলেন, “ডেমোক্র্যাটরা যা ভাবছেন শুধু তা-ই নয়, কমলার নিজস্ব অবস্থানেও আমার ভরসা রয়েছে। এটি ব্যক্তিগত ভাবে আমার কাছে খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি নির্বাচন।”
নির্বাচনের কয়েক ঘণ্টা আগেই সংবাদমাধ্যমের কাছে মুখ খোলেন পূর্ণা। ভারতীয় কূটনীতিবিদ বসন্ত জগন্নাথন ও জি জগন্নাথনের মেয়ে পূর্ণার জন্ম তিউনিশিয়ায়। তাঁর শৈশব, কৈশোর যেমন কেটেছে ভারতে, তেমনই পাকিস্তানে, আয়ারল্যান্ডে, ব্রাজ়িলে, আর্জেন্টিনায়। একই সঙ্গে তামিল, হিন্দি, ইংরিজি, স্প্যানিশ, পর্তুগিজ় ভাষায় সাবলীল পূর্ণা। ২০১১ সালে ‘ডেলহি বেলি’ ছবিতে নজর কেড়েছিলেন ইমরান খানের বিপরীতে। আমেরিকান অভিনেত্রী হিসাবেই তাঁর পরিচিতি।
ইন্দো-আমেরিকান ভোটারেরা ২০২৪ সালের আমেরিকান প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ক্ষেত্রে কী ভাবছেন? এ প্রশ্ন উঠতেই পূর্ণা দাবি করেন, শুধু ভারতীয়েরা নন, অন্য সংখ্যালঘু মানুষেরাও কমলাকেই চাইছেন। যাঁরা দ্বিধায় রয়েছেন, তাঁদের জন্য পূর্ণা বলেন, “মানুষ হিসাবে প্রার্থী কেমন তা দেখতে হবে।”
অভিনেত্রীর দাবি, “ইন্দো-আমেরিকান মহিলা এবং ইন্দো-আমেরিকান পুরুষের ভাবনাও এই মুহূর্তে হয়তো আলাদা। তবে সার্বিক ভাবে মনে রাখতে হবে আমরা কোথা থেকে এসেছি, আমরা কারা। ডোনাল্ড ট্রাম্প যখন দীপাবলির বার্তা দেন, তখন প্রাথমিক ভাবে মনে হতে পারে অভিবাসী বা সংখ্যালঘু হিসাবে আমরা নিরাপদ। কিন্তু সব দিক বিবেচনা করে পদক্ষেপ করতে হবে।”
পূর্ণার কথায় উঠে আসে ৯/১১-র প্রসঙ্গ। তিনি বলেন, “ইসলামভীতি ছড়িয়ে পড়েছিল সেই সময়। তার প্রভাব পড়েছিল আমাদের শিখ ভাইবোনেদের উপর। আমরা ব্যতিক্রম নই।” অভিনেত্রী সরাসরি বলেন, “ট্রাম্পের অভিবাসন নীতি অন্যায্য এবং নৃশংস। আমরা কিন্তু শেষ পর্যন্ত অভিবাসীই।”
নারী হিসাবে আমেরিকান প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু তুলে আনেন পূর্ণা। গর্ভপাতের অধিকার। এ বারের নির্বাচনে অন্যতম বিতর্কিত একটি বিষয়। পূর্ণা মনে করেন, এটি শুধু মহিলাদের নিরাপত্তার জন্য নয়, আমেরিকান পুরুষের কাছেও গুরুত্বপূর্ণ।