দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ‘পাঠান’ নিয়ে বিদ্রোহের আগুন জ্বলছে। সেই আবহে চুপ করে থাকতে পারলেন না, ‘ইয়ো ইয়ো’ হানি সিংহও। ফাইল চিত্র।
১৯৯২ সাল। ‘রোজা’ ছবির ‘রুকমণি রুকমণি’ গান জনপ্রিয় হয়েছিল এই দেশেই। এ আর রহমান-সৃষ্ট সেই গান নিয়ে কিছু মাত্র বিতর্ক হয়নি। যা হল, ৩০ বছর পর, ‘পাঠান’-এর ‘বেশরম রং’ নিয়ে। সময় এগোচ্ছে না পিছোচ্ছে? এখন-তখনের উদাহরণ টেনে প্রশ্ন ছুড়লেন গায়ক হানি সিংহ।
দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ‘পাঠান’ নিয়ে বিদ্রোহের আগুন জ্বলছে। হিংসাত্মক মন্তব্যের ঝড় সমাজমাধ্যমে। সেই আবহে চুপ করে থাকতে পারলেন না, ‘ইয়ো ইয়ো’ হানি সিংহও। তাঁর দাবি, এত আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠার কোনও কারণ দেখছেন না। র্যাপতারকা জানালেন, ইদানীং মানুষ অতিরিক্ত প্রতিক্রিয়াশীল হয়ে উঠছেন। আগে শিক্ষিত মানুষ কম ছিলেন হয়তো, তবু অনুভূতির কমতি ছিল না।
শুরুতেই ‘পাঠান’ বয়কটের রব তুলেছেন মধ্যপ্রদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নরোত্তম মিশ্র। সেই আগুন ধিকিধিকি ছড়িয়ে পড়ে বিভিন্ন রাজ্যে। মধ্যপ্রদেশের পর ‘পাঠান’ ছবি নিয়ে সবচেয়ে বেশি বির্তক হয়েছে অযোধ্যা শহরে। শাহরুখ খান-দীপিকা পাড়ুকোনের পোস্টার পোড়ানো হয় সে শহরে। সম্প্রতি অযোধ্যার রাস্তায় প্রতিবাদে নামেন সেখানকার তপস্বী ছাবনীর সাধুরা। পরমহংস আচার্য হুমকি দেন, শাহরুখ খানের সঙ্গে দেখা হলে তাঁকে জীবিত পুড়িয়ে মারবেন! সাফ বলেন, ‘‘আমি শাহরুখ খানকে খুঁজছি।’’
সেই পরিস্থিতির পর শুক্রবার হানি বললেন, “মতপ্রকাশের স্বাধীনতা আগেও ছিল। মানুষ হয়তো কম শিক্ষিত ছিলেন, কিন্তু তাঁরা অনেক বেশি বিবেকবান ছিলেন। বুদ্ধি দিয়ে বিচার করে বিষয়গুলিকে বিনোদন হিসাবে গ্রহণ করতে পারতেন আগেকার মানুষ।”
হানির মনে পড়ে যায় সহনশীলতার আদর্শ উদাহরণ, বলে চলেন, “রহমান স্যরের একটা গান ছিল, ‘রুকমণি রুকমণি শাদি কে বাদ কেয়া কেয়া হুয়া’ (বিয়ের পর কী হল, রুকমণি?)… মানুষ তা-ও মেনে নিয়েছিলেন মজার ছলে। এ সব শুনে শুনে বড় হয়েছি। কিন্তু এখন যখন এ ধরনের হালকা চালের গান বানাই, তখন মানুষ প্রতিবাদ শুরু করেন!”
আরও বলেন, “হালের দর্শকের এত বেশি প্রতিক্রিয়াশীল হয়ে ওঠার কারণ আমি বুঝতে পারছি না। বিনোদনের অর্থ কী রইল তা হলে?”
২০১৩ সালে ‘চেন্নাই এক্সপ্রেস’ ছবিতে শাহরুখ খান আর দীপিকা পাড়ুকোনের সঙ্গে কাজ করেছিলেন হানি। দেশ জুড়ে জনপ্রিয় হয়েছিল ‘লুঙ্গি ডান্স’। মজা পেয়েছিলেন দর্শক। সে কথা স্মরণ করিয়ে হানির দাবি, “মানুষ তখনও বিচক্ষণ ছিলেন। শায়রির মর্ম বুঝতেন। তার মধ্যে ‘নোংরা’ কিছু দেখেননি। এখন যদি ‘চোলি কে পিছে ক্যায়া হ্যায়’-এর মতো গান কেউ বানান, তাঁর কপালে দুঃখ আছে।”