জিজ্ঞাসাবাদ এড়াতে পারলেন না ঐশ্বর্যা।
পানামা নথি মামলায় সোমবার ঐশ্বর্যা রাই বচ্চনকে পাঁচ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। বিদেশে প্রচুর সম্পত্তি রাখার অভিযোগে বিদেশি মুদ্রা আইনে (ফেমা) প্রাক্তন বিশ্বসুন্দরীকে ডেকে পাঠানো হয়। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, কর ফাঁকি দিতে ব্রিটিশ ভার্জিন আইল্যান্ডে তিনি তাঁর সম্পদ গচ্ছিত রেখেছেন। দীর্ঘ জেরা পর্বে কোন কোন প্রশ্নের মুখে পড়লেন অমিতাভ বচ্চনের পুত্রবধূ? দেখে নেওয়া যাক।
সূত্রের খবর, ইডি কর্তারা জানতে চান, ২০০৫ সালে ব্রিটিশ ভার্জিন আইল্যান্ডে নথিভুক্ত অমিক পার্টনার কোম্পানিটি হওয়ার সঙ্গে ঐশ্বর্যের কোনও যোগসূত্র আছে কি না।
এর পরে জানতে চাওয়া হয়, কোন আইনি ফার্মে মোসাক ফসেনকা এই সংস্থাটিকে নথিভুক্ত করেছিল? প্রসঙ্গত, এই মোসাক ফসেনকা নামে আইনি ফার্মটি ২০১৬ সালে ১ কোটি ১৫ লক্ষ গোপন নথি ফাঁস করে দেয়।
ঐশ্বর্যার সঙ্গেই তাঁর বাবা, মা এবং ভাই অমিক পার্টনার সংস্থার ডিরেক্টর পদে ছিলেন। সূত্রের খবর, এ বিষয়ে ঐশ্বর্যাকে বিস্তারিত প্রশ্ন করে ইডি।
ডিরেক্টর থেকে ঐশ্বর্যা কেন ২০০৫ সালে এই কোম্পানির একজন শেয়ারহোল্ডার হয়ে যান, সে প্রশ্নও করা হয়। এর পর তাঁরা জানতে চান, কেন এই কোম্পানি ২০০৮ সাল থেকে নিষ্ক্রিয় হয়ে যায়?
কর্তারা জানতে চান, টাকাপয়সা লেনদেনের জন্য কি রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়ার থেকে কি অনুমতি চাওয়া হয়েছিল? সূত্রের খবর, ঐশ্বর্যা গত ১৫ বছরের বিদেশি অর্থ লেনদেনের সব নথি ইডির হাতে তুলে দেন।
অতীতে দু’বার তাঁকে তলব করেছিল ইডি। কিন্তু তখন তিনি সময় চেয়ে নিয়েছিলেন। কিন্তু এ বার আর জিজ্ঞাসাবাদ এড়াতে পারলেন না ‘বচ্চন বহু’।
২০১৭ সাল থেকে ইডি এই মামলার তদন্ত করছে। ২০১৬ সালের এপ্রিল মাসে ১ কোটি ১৫ লক্ষ গোপন নথি ফাঁস হয়েছিল। যা ‘পানামা নথি কেলেঙ্কারি’ নামে পরিচিত। এই পানামা নথিতে নাম থাকায় আদালতের নির্দেশে পাকিস্তানে প্রধানমন্ত্রিত্ব খোয়াতে হয়েছে নওয়াজ শরিফকে। অমিতাভ বচ্চন-সহ বেশ কিছু বিশিষ্ট ভারতীয়ের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করার কথা জানিয়েছিল নরেন্দ্র মোদী সরকার।
প্রসঙ্গত, পানামা নথি মামলায় প্রায় ৫০০ জন ভারতীয়ের নাম জড়িয়েছে। তাঁদের মধ্যে অভিনেতা, ক্রীড়াবিদ, ব্যবসায়ী-সহ বহু বিশিষ্টজনের নাম রয়েছে। প্রত্যেকের বিরুদ্ধে কর ফাঁকির অভিযোগ। এঁদের অনেকের বিরুদ্ধে শুল্ক দফতরের আধিকারিকরা তদন্ত শুরু করেছেন। এই মামলায় এর আগেও বচ্চন পরিবারের নাম উঠে এসেছে। ইডি এই মামলার সঙ্গে অর্থ পাচারের মামলা নথিভুক্ত করেছিল। সে সময় অভিষেক বচ্চনের নাম প্রকাশ্যে এসেছিল। মাস খানেক আগে অভিষেক ইডি অফিসে পৌঁছেছিলেন। ইডি আধিকারিকদের কাছে কিছু নথিও হস্তান্তর করেছেন। সূত্রের খবর, খুব শীঘ্রই অমিতাভ বচ্চনকেও এই মামলায় তলব করা হতে পারে।