অপরাজিতর চরিত্রে জিতু
সাদা-কালো ফ্রেমে যেন সত্যজিতের ছায়া! অনীক দত্তর পরবর্তী ছবি ‘অপরাজিত’-য় জিতু কামালের লুক প্রকাশ পেল আনন্দ প্লাসে। সত্যজিত রায়ের ‘পথের পাঁচালী’ তৈরির নেপথ্যের কাহিনিই ছবির উপজীব্য। ছবিতে অপরাজিত রায়ের চরিত্রে দেখা যাবে জিতুকে আর বিজয়া রায়ের ছায়ায় তৈরি বিমলার ভূমিকায় থাকবেন সায়নী ঘোষ।
ছবির লুকে নিজেকে দেখে মাঝে মধ্যেই অবাক হয়ে যাচ্ছেন জিতু, ‘‘এমনও হয়েছে, লুকটা কাছের একজনকে দেখিয়েছি, সে দেখে বলছে ‘এ তো আমার দেখা, নতুন আবার কী দেখব?’ আমি তখন তাকে বলেছি ভাল করে দেখতে, সে তখনও বলে যাচ্ছে, ‘সত্যজিৎ রায় তো!’ তার পরে তাকে যখন বললাম এটা আমার লুক, সে অবাক হয়ে হাত থেকে ফোনটা কেড়ে নিল।’’ তবে লুকের পুরো কৃতিত্বই পরিচালককে দিলেন জিতু।
গালে ও থুতনিতে প্রস্থেটিক্সের সাহায্য নেওয়া হয়েছে। মেকআপ করেছেন সোমনাথ কুণ্ডু। কিন্তু সত্যজিতের ম্যানারিজ়ম ফুটিয়ে তোলা, তাঁর মতো করে রুমাল ধরা... সে সবের কৃতিত্ব জিতুকেই দিলেন পরিচালক। অনীকের কথায়, ‘‘ওঁর চাহনি, সিগারেট ধরার ধরন... সবটাই খুব সুন্দর করেছে জিতু। সত্যজিতের রুমাল নেওয়ার একটা বৈশিষ্ট্য ছিল, কাঁধে রেখে সেটা তিনি চিবোতেন। সে সবের রেফারেন্স বা ছবি সে রকম কিছু ছিল না। কিন্তু জিতু অভিনয়টা ভাল করছে। আর ও যেহেতু মূলত সিরিয়ালের, বড় পর্দায় সে ভাবে ওকে দর্শক পাননি, সেটা একটা বাড়তি সুবিধে,’’ সত্যজিতের ছায়ায় তৈরি অপরাজিতর চরিত্রে জিতুর অভিনয় নিয়ে বেশ আশ্বস্ত শোনাল পরিচালককে।
শুধু লুকেই মগ্ন থাকতে চান না জিতু। তাঁর মনোযোগ এখন অভিনয়ে। নিয়মিত সত্যজিতের ইন্টারভিউ দেখছেন, তাঁর কথা বলার ধরন খেয়াল করছেন। ‘‘ছবিটার প্রস্তাব যখন এল, আমার প্রস্তুতিও শুরু হয়েছে তখন থেকেই। মানুষটাকে গভীর ভাবে জানার, বোঝার চেষ্টা করছি। আগেও দেখেছি, কিন্তু এখন দেখার ধরনটা অন্য। এখন যখনই ওঁর লেখা পড়ছি, জানছি, ওঁকে দেখছি ... তা থেকে কিছু শেখার চেষ্টা করছি। ওঁর ব্যাপ্তি ধরা যদিও খুব কঠিন। এর কোনও কূল নেই, কিনারাও নেই। আমি এখন মাঝসমুদ্রে। এই চরিত্রে অভিনয় করতে গিয়ে আক্ষরিক অর্থে রাতের ঘুম উড়ে গিয়েছে।’’ তার সঙ্গে মেগা ধারাবাহিকের চাপ। তবে নিয়মানুবর্তিতায় বিশ্বাসী জিতু সব দিকই সামলাচ্ছেন। ভোর পাঁচটায় উঠে ধ্যান করে ছ’টায় বেরিয়ে যান। তার পরে চলতে থাকে ছবির জন্য ওয়ার্কশপ। সে এক অন্য জগৎ। তখন খাওয়াদাওয়ারও ঠিক থাকে না তাঁর। পরিচালকের স্বপ্নের প্রজেক্টে এতটুকু ত্রুটি রাখতে চান না অভিনেতা।
ছবির একটা অংশের শুট হয়েছে বীরভূমে, বিশেষত বোলপুরের আশপাশে। এর পরের শিডিউলের শুট শুরু হবে ১৯ নভেম্বর থেকে। নন্দন, শিশির মঞ্চ থেকে শুরু করে কলকাতার বিভিন্ন জায়গায় শুটিং চলবে। আর পুরো ছবিটাই সাদা-কালোয় শুট হবে বলে জানালেন ছবির প্রযোজক ফিরদৌসুল হাসান। ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে শুট শেষ করার পরিকল্পনা রয়েছে।