‘দ্য কেরালা স্টোরি’র সমালোচনায় কেরলের ছবি সম্পাদক বীণা পাল। ছবি—সংগৃহীত
তথ্যবিকৃতি রয়েছে ‘দ্য কেরালা স্টোরি’-তে, বলে উঠলেন দক্ষিণের পুরস্কারজয়ী ছবি সম্পাদক বীণা পাল। সাফ জানালেন, এই ছবির কোনও শৈল্পিক মূল্যই নেই, অকারণে মাথায় তোলা হচ্ছে। অথচ পরিচালক সুদীপ্ত সেন জোর গলায় বলেছিলেন, এ ছবির প্রতিটি ঘটনা সত্য। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে ছবিকে ‘কাল্পনিক’ ঘোষণা করতে নারাজ তিনি। বীণার কথায় নতুন করে দানা বাঁধছে বিতর্ক।
গত ৫ মে মুক্তি পাওয়ার পর থেকেই ‘দ্য কেরালা স্টোরি’ নিয়ে হুলস্থুল। দেশ জুড়ে বিতর্কের আবহে ছবি নিয়ে এখনও পর্যন্ত মুখ খুলেছেন বলিউড পরিচালক অনুরাগ কাশ্যপ এবং অভিনেতা নওয়াজু়দ্দিন সিদ্দিকি, কমল হাসন-সহ আরও অনেকেই। এ বার সরব হলেন কেরলের ছবি সম্পাদক বীণা। এক সাক্ষাৎকারে তিনি সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন ‘দ্য কেরালা স্টোরি’ দেখে বিমর্ষ হয়ে পড়েছেন। বীণার কথায়, “কী ভাবে এত গুরুত্ব পাচ্ছে এই সিনেমাটা? কেউ এটা নিয়ে কথা না বললে কবেই ‘দ্য কেরালা স্টোরি’র স্বাভাবিক মৃত্যু হত।”
বিষয়বস্তু প্রসঙ্গেও বীণা মন্তব্য করেন এর পরই। তাঁর কথায়, “এখন যে যা খুশি বানিয়ে পার পেয়ে যেতে পারে। সম্পূর্ণ ভুলভাল তথ্য দিয়ে সিনেমা করে পর্যাপ্ত সুরক্ষিতও থাকা যায় দেখছি।” তাঁর দাবি, ট্রেলারও বদলাতে হত পরিচালককে। কারণ, ট্রেলারে যা বলা ছিল, তা ছবিতে সে ভাবে দেখানো হয়নি। কেউ এ নিয়ে কথা বলছেন না, ক্ষোভ উগরে দেন বীণা।
তথ্যবিকৃতি থাকলেও ‘দ্য কেরালা স্টোরি’ বক্স অফিসে দুর্দান্ত ব্যবসা করছে, রোজ শিরোনামে থাকছে, যা অনেক ভাল ছবির ভাগ্যে থাকে না — দাবি বীণার। তাঁর মতে, “নিশ্চয়ই দেশের একাংশ এ ধরনের ছবি থেকেই রসদ নেন। মানুষের ইচ্ছার প্রতিফলন এই বিকৃত ছবি।”
যদিও বীণা গর্বিত যে কেরলের মানুষ এই ছবিকে প্রত্যাখ্যান করেছেন। মালয়ালম ভাষায় চলেনি এই ছবি কেরালার কোনও হলে। এতেই শান্তি বীণার। তাঁর কথায়, “২০১৮ বলে একটি ছবি ঠিক এর উল্টো আখ্যান নিয়ে বানানো। সেটি কিন্তু জনমত গঠন করতে পেরেছিল। ভাল চলেছিল।”
সম্প্রতি ‘দ্য কেরালা স্টোরি’ প্রসঙ্গে দক্ষিণের অভিনেতা কমল হাসন জানান, কোনও ছবির নামের নীচে ‘সত্য ঘটনা’ লিখে দিলেই সেটাকে সত্য বলে প্রতিষ্ঠা করা যায় না। অভিনেতার কথায়, ‘‘আমি প্ররোচনামূলক ছবির বিরুদ্ধে। কোনও ছবির নামের নীচে ‘সত্য ঘটনা’ লিখে দেওয়াটাই যথেষ্ট নয়। সেই ঘটনা আদতে ঘটে থাকলে তবেই তা সত্য। আর এখানে যা দেখানো হয়েছে, তা সত্য নয়।’’ কমলের কথায় স্পষ্ট, এই ছবির চিত্রনাট্য ও তথ্যের সঙ্গে একেবারেই সহমত নন তিনিও।