সৃজিত মুখোপাধ্যায়।
যে কথা আগে বলেননি, সে কথা আনন্দবাজার অনলাইনকে জানালেন পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায়। ইন্ডাস্ট্রিতে একের পর এক অভিনেত্রী-মডেলদের আত্মহননের খবর। কেন? নিজের আগামী ছবি ‘এক্স ইক্যুয়ালস টু প্রেম’ নিয়ে কথা বলতে গিয়ে সৃজিত বললেন, ‘‘ ইন্ডাস্ট্রিতে নতুন কেউ কাজ করতে চাইলে আমি সোজা তাঁকে বারণ করি। এমন নৈরাশ্যের জায়গা, যেখানে সাফল্যের দৈনিক হার এক বা দুই শতাংশ, সেখানে কারও আসা ঠিক নয়। ঝুঁকি নিয়ে কাজ করেও হতাশাই বেশি মিলবে। এমন ইন্ডাস্ট্রিতে কেউ কাজ করতে আসে?’’ সৃজিত জানালেন,‘‘আমরা শুধু ঝলমলে তারকাদের দিকে তাকিয়েই ইন্ডাস্ট্রিতে কাজের স্বপ্ন দেখি। বাস্তব যে কী, তা নিয়ে কেউ বিশেষ মুখ খোলেন না। নতুন প্রজন্মকে তো এই ইন্ডাস্ট্রির বাস্তব দিকটা জানতে হবে।’’ আর এই ইন্ডাস্ট্রি ছাড়াও কাজের অনেক জায়গা আছে বলে মনে করেন ‘গুমনামী’-র পরিচালক। অনেক নতুন ছেলেমেয়ে সিনেমা বা ধারাবাহিকে কাজ করতে চেয়ে সৃজিতের পরামর্শ নিতে আসেন। সৃজিত বললেন, “আমি প্রথমেই বলি, এখানে কাজ করতে এস না। সিনেমায় কাজ করা আর হাঙরের সঙ্গে সাঁতার কাটা দুটোই এক। অনেকে সংবাদমাধ্যমে সাফল্যের আলো দেখে এই কাজে আসতে চান। তাঁরা জানেন না এই আলো অনেক পরে শুধুমাত্র কয়েকজনের ওপরেই এসে পড়ে।’’
আনন্দবাজার অনলাইনের লাইভে কথা প্রসঙ্গে সৃজিত ফিরে গেলেন সেই সময়ে, যখন তিনি বিদেশের চাকরি ছেড়ে পরিচালনার কাজে আসছেন। অভিনেত্রী মাধবী মুখোপাধ্যায় সৃজিতকে ডেকে অনেক কথা বলেছিলেন। পারিবারিক সূত্রে আলাদা পরিচয় থাকায় ‘চারুলতা’ জানিয়েছিলেন, ছবির জগতে সাফল্য পাওয়া কতখানি কঠিন। অভ্যন্তরীণ রাজনীতির সম্মুখীন হতে হবে সৃজিতকে। এই জগৎ যথেষ্ট 'নোংরা'। ওই দিকে হাত বাড়ানো বোকামির নামান্তর।
সৃজিত যদিও সে সব কথায় কান দেননি। নিজের কাজ দিয়ে তিনি বাংলা ছবির অন্যতম সফল পরিচালক। সম্প্রতি মুম্বইয়েও চুটিয়ে কাজ করছেন তিনি। বহু বার নতুন ছেলেমেয়েদের তাঁর ছবিতে কাজের জায়গা করে দিয়েছেন। তা হলে? সৃজিত বললেন,‘‘এটা আসলে ‘বাঞ্জি জাম্পিং’-এর মতো। বারণ করলেও অনেকে ঝাঁপ দিতে চায়। যারা চায়, তাদের নিয়েই কাজ হচ্ছে।’’
ইন্ডাস্ট্রিতে স্বপ্ন বিক্রি করা হয়। শুধুমাত্র সেই স্বপ্ন দেখে, কিছু না জেনে যেন কেউ ঝাঁপ না দেন, এই সতর্কবাণীই জানিয়ে দিলেন ‘এক্স ইক্যুয়ালস টু প্রেম’-এর পরিচালক।