টোটা-সৃজিত
এ যেন অনেকটা শ্বশুরবাড়ি থেকে বাপের বাড়িতে ফেরার মতো ব্যাপার। আড্ডা টাইমসের জন্য প্রথম ‘ফেলুদা ফেরত’ সিরিজ বানানোর কাজে হাত দেন সৃজিত মুখোপাধ্যায়। সেখানেই গোয়েন্দা চরিত্রে অভিষেক টোটা রায়চৌধুরীর। তাঁর দুই সহকারী অনির্বাণ চক্রবর্তী (জটায়ু), কল্পন মিত্র (তোপসে)। আবহসঙ্গীত এবং সুরকার জয় সরকার। প্রথম সিরিজ ‘ছিন্নমস্তার অভিশাপ’ দেখানোও হয়েছিল ওয়েব প্ল্যাটফর্মটিতে। ফের নতুন করে শুরু। এ বার সৃজিত ফেলুদা সিরিজ বানিয়েছেন হইচই-এর জন্য। ফেলুদার ক্ষেত্রে সৃজিতের কি ‘ঘর ওয়াপসি’ ঘটল?
উত্তর অজানা। তবে ২ মে কলকাতার পাঁচতারা হোটেলে সিরিজের আনুষ্ঠানিক ঘোষণার সময় পরিচালক অনেকটাই আত্মস্থ। চেনা টিমের সঙ্গে সাংবাদিকদের নতুন ভাবে আরও এক বার পরিচয় করালেন। এবং সেখানেই ফাঁস করলেন তিন বার ফেলুদা হয়ে নাকি ভারী উন্নতি হয়েছে টোটার! যিনি ধূমপানের ঘোর বিরোধী ছিলেন তিনিই নাকি সেটে অনায়াসে উড়িয়ে দিয়েছেন তিন প্যাকেট চারমিনার সিগারেট! শুধু তাই নয়। অভিনয়ের খাতিরে অভিনেতা এখন ‘চেনস্মোকার’! একটি সিগারেট থেক আরও একটি ধরিয়ে নেন অনায়াসে। তার পরেই ধোঁয়ার কুণ্ডলি ছাড়েন পোক্ত ধূমপায়ীদের মতো।
নিজের রসিকতায় নিজেই গলা ছেড়ে হেসেছেন সৃজিত। বলেছেন, ‘‘শারীরিক গঠন, অভিনয় কোনও দিক থেকেই কোনও খুঁত নেই টোটার। সেখানে ১৫ কলা সম্পূর্ণ ছিল। বাকি ছিল একটি কলা। ধূমপান শিখে নেওয়ার পরে অভিনেতা আক্ষরিক অর্থেই ষোলোকলা পূর্ণ করেছেন!’’ নিজের কানে নিজের প্রশংসা শুনে টোটা তত ক্ষণে যেন ঈষৎ লালচে। সৃজিত তখনও বলে চলেছেন, টোটাকে তাঁর ‘ফিটনেস’-এর সঙ্গে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের চোখের অভিনয় এবং সব্যসাচী চক্রবর্তীর বাচিক অভিনয় মিশিয়ে দিতে বলেছিলেন।
অভিনেতা তাঁর কথা রেখেছেন। শ্যুট করতে করতে এক এক সময় সৃজিতের মনে হয়েছে, টোটার যেন ‘ফেলুদা লগ্নে’ জন্ম! তাই সত্যজিৎ রায়ের ফেলুদার সঙ্গে চেহারা, আচরণ, স্বভাবে এত মিল। টোটা যেন সারা ক্ষণ ‘প্রদোষচন্দ্র মিত্র’ হয়েই দিনযাপন করেন। পাশাপাশি, শুধু চেহারায় নয়, অনির্বাণ ওরফে ‘একেনবাবু’ এই সিরিজে ‘জটায়ু’ হয়ে নিজেই অভিনয় দিয়ে পার্থক্য গড়ে দিয়েছেন দুই জনপ্রিয় চরিত্রের মধ্যে।