আফরান নিশো। ছবি: সংগৃহীত।
ইদে বাংলাদেশে মুক্তি পেয়েছে ‘সুড়ঙ্গ’। মডেলিং দিয়ে কেরিয়ারের শুরু করেছিলেন ছবির নায়ক। তার পর একটা দীর্ঘ সময় নাটকে অভিনয় করেছেন। অভিনেতা হয়ে উঠতে কম কাঠখড় পোড়াতে হয়নি তাঁকে। সদ্য ৪০-এ পা দিয়েছেন। মুক্তি পেয়েছে জীবনের প্রথম ছবি। প্রথম ছবিতেই বাজিমাত। যেমন দর্শকের ভালবাসা, তেমনই বক্স অফিসে সাফল্য পেয়েছে এই ছবি। এই ছবি ঘিরে একই উৎসাহ দেখা গিয়েছে এ পার বাংলায়ও। কারণ নায়ককে এ পার বাংলার দর্শক ‘কাইজ়ার’ সিরিজ় দিয়েই চেনেন। অবশ্য যাঁরা নিয়মিত বাংলাদেশি কাজ দেখেন, তাঁদের অনেকেই ইউটিউবে নায়কের বহু শর্ট ফিল্ম এবং নাটক দেখেছেন বহু দিন আগে থেকেই। আগামী ২১ জুলাই কলকাতায় মুক্তি পেতে চলেছে ‘সুড়ঙ্গ’। তার আগে আনন্দবাজার অনলাইনের মুখোমুখি আফরান নিশো।
প্রশ্ন: প্রথম ছবিতেই সাফল্য, আকাশ ছোঁয়ার আনন্দ উপভোগ করছেন?
আফরান নিশো: জি ভাল আছি, মন্দ আমি থাকি না। আলহামদুল্লিলাহ্, আমি সব সময় ভাল থাকি। আসলে মাটিতে পা রেখে থাকতে ভালবাসি। তাই আকাশ ছোঁয়ার কথা ভাবি না। ভাববেন না বিনয় করছি। এটা আমার কাছে প্রথম প্রেমের অনুভূতির মতো। বড় পর্দায় প্রথম ছবিই যে সিনেমাপ্রেমীরা এমন ভাবে গ্রহণ করবেন, তা অপ্রত্যাশিত ছিল। তাই এই মুহূর্তে আনন্দে ভাসছি।
প্রশ্ন: বাংলাদেশে হলে ঢুকলেই একটা চিৎকার শোনা যাচ্ছে— ‘নিশো ভাইয়া’!
আফরান নিশো: যাঁরা আমার কাজ দেখেন, আমার সব সময় তাঁদের কাছাকাছি পৌঁছতে ইচ্ছে করে। এক সময় ভেবেছিলাম, আমার প্রত্যেক অনুরাগীর বাড়ি যাব। তাঁদের বাড়িতে খাব। তবে সেটা করা যায়নি কিছু সীমাবদ্ধতার কারণে। ‘সুড়ঙ্গ’ মুক্তির পর লুকিয়ে লুকিয়ে হলে গিয়েছি। দর্শক জানেনও না, আমি তাঁদের মাঝে বসে সিনেমা দেখছি। আমার হাসিতে তাঁরা হাসছেন, আমার কথায় হাততালি দিচ্ছেন। এই অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। আমাকে এই আনন্দ ছোট পর্দা কোনও দিনও দিতে পারেনি।
প্রশ্ন: আচ্ছা, আপনি কি নিয়ম ভাঙতে ভালবাসেন?
আফরান নিশো: যা কিছু চলতি নিয়ম রয়েছে, সেটা আমি ভাঙতে চাই। আমায় এক সময় শুনতে হয়েছিল, মডেলরা অভিনয় করতে পারেন না। আমাকে শুনতে হয়, দর্শক টাকা খরচ করে নাটকের অভিনেতাদের বড় পর্দায় দেখতে আসবেন না। সেই মিথ আমি ভেঙেছি। আবার এখন আমাকে বলা হয়, ‘পর্দায় নায়ক হয়ে দর্শকের এত কাছাকাছি যেয়ো না, একটু এক্সক্লুসিভ থাকো’। সেই মিথও ভাঙব আশা করছি। আমি এত আলাদা হতে চাই না। অন্য কাউকে ছোট না করেই বলছি, এটা আমার জীবনের দর্শন।
প্রশ্ন: বাংলাদেশের বহু তারকার জীবনযাপন কলকাতার তারকাদের তুলনায় বিলাসবহুল। আপনার জীবন কতটা সাধারণ?
আফরান নিশো: খুব সাধারণ ভাবেই বাঁচি। আর্থিক স্বাচ্ছন্দ্য মানুষের জীবনযাপনে কিছু পরিবর্তন আনে। তখন সেখান থেকে আর পিছনে ফেরা যায় না। এটা কেউ বলতে পারবে না যে, আমি খুব সেজেগুজে চকমকে পোশাক পরে দর্শকের সামনে যাই। তবে কিছু শখ রয়েছে। আমার গাড়ির প্রতি ভালবাসা রয়েছে। এমন নয় যে, বাজারে যে নতুন গাড়ি আসছে, কিনে ফেলছি। তবে যে গাড়িটা কিনব, সেটা যাতে ওই লটের সব থেকে সুন্দর হয়, সেটা দেখি। ঘড়ি আর গ্যাজেটেরও শখ রয়েছে। স্বাচ্ছন্দ্য রয়েছে, তবে বিলাসবহুল নয়।
প্রশ্ন: প্রথম থেকেই অভিনেতা হতেই চেয়েছিলেন?
আফরান নিশো: আমি একটা লম্বা জার্নি পেরিয়ে এসেছি। শুরুতে মডেলিং। তার অনেক পরে অভিনয়ে আসা। তখন থেকেই ভীষণ টান অনুভব করতাম অভিনয়ের প্রতি। মডেলরা যে অভিনয় করতে পারেন না, এ হতে পারে না। এটা ভুল ধারণা, এক দিন ভাঙবই। প্যাশন থেকে পেশা হিসেবে নেওয়া।
প্রশ্ন: একটা দীর্ঘ সময় নাটকে কাজ করেছেন, বড় পর্দায় আসতে এতটা সময় লাগল কেন?
আফরান নিশো: ‘দের আয়ে, দুরুস্ত আয়ে’! এত দিন কাজ করে পরিণত হয়েছি কিংবা চেষ্টায় রয়েছি। আমি তো পেশাদার অভিনেতা। তাই আমার কিছু চাহিদা পূরণ হতে হবে। আমার কাছে ভাল গল্প এল। কিন্তু ভাল পরিচালক নেই, বাজেট নেই। অন্য দিকে বাজেট আছে, তবে ভাল টিম নেই, গল্প নেই। এ সব কাজ আমি করব না। ভেবেছিলাম, যখনই বড় পর্দায় আসব একেবারে পেশাদারের মতো অভিষেক হবে। কারণ অভিনয় আমার রুজিরুটি। আদর্শ কিংবা প্যাশনের জন্য তো সিনেমায় অভিনয় করব না। দানধ্যান করতে আসিনি। আমি অহংকারী নয়, স্পষ্টবাদী। ‘সুড়ঙ্গ’-এর ক্ষেত্রে আমার সব ক’টা ইচ্ছে পূরণ হয়েছে। আমাদের পরিচালক রায়াহান রাফী অত্যন্ত গুণী। যা আগে কোনও দিনই বাংলাদেশি সিনেমায় ব্যবহার হয়নি, তেমন ক্যামেরায় কাজ করেছেন। অসাধারণ সেট তৈরি করেছেন। আসলে প্রথম ছবি বলে একটু বেশি খুঁতখুঁত করছিলাম। আমি নিজেকে ফাঁকি দিতে চাইনি। আমার চাহিদাগুলো এই ছবির ক্ষেত্রে যদি না মিলত, তা হলে হয়তো আরও দেরি হত বড় পর্দায় আসতে। মনের মতো ছবি পাওয়ার জন্য যদি বৃদ্ধ বয়স পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হত, তা-ই করতাম।
প্রশ্ন: ইদে এ বছর বাংলাদেশে পাঁচটি ছবি মুক্তি পায়। কিন্তু তার মধ্যে শেষমেশ বক্স অফিসে মুখোমুখি ‘প্রিয়তমা’ এবং ‘সুড়ঙ্গ’। আসল লড়াইটা কি শাকিব বনাম নিশোর?
আফরান নিশো: নাহ্, আমি প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিশ্বাস করি না। আমার তো প্রথম ছবি। ইন্ডাস্ট্রি স্বাগত জানাবে, এইটুকুই কাম্য।
প্রশ্ন: আপনি বলছেন প্রতিদ্বন্দ্বিতা নেই, কিন্তু ‘সুড়ঙ্গ’-এর পরিচালক সমাজমাধ্যমে শাকিব খানের অনুরাগীদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিলেন কেন?
আফরান নিশো: আমার মনে হয়, তারকাদের ভক্তেরা একটু আলাদা। কেউ একটু হিংসাত্মক, কেউ আবার আদুরে, কেউ আবার সমালোচনা করে। আমি সব সময় বলি, অনুরাগীদেরও দায়িত্বজ্ঞান থাকা দরকার। আমার মনে হয় না শুধু লাফালাফি করেই অনুরাগী হওয়া যায়। সমালোচনা করে ভুল শুধরে দেয় যে, সে-ই অনুরাগী। যখন কোনও নতুন কাজ হয়, তখন ছোট্ট শিশুর মতো বুকে টেনে নেওয়া উচিত। সেই জায়গা থেকে অভিমানের সুরেই রাফী বলেছেন। এটা খুব দুর্ভাগ্যজনক যে, প্রথম ছবি থেকেই উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে কারও প্রতিদ্বন্দ্বী বানিয়ে দেওয়া হচ্ছে। তবে এটা মানি যে, সুস্থ প্রতিযোগিতা থাকা ভাল। তাতে কাজের উন্নতি হয়। একটা মাঠে একা খেলায় মজা নেই।
প্রশ্ন: শাকিব খান প্রতিষ্ঠিত তারকা। তার তরফে শুধু প্রতিদ্বন্দ্বিতাই পেয়েছেন, না কি তিনি স্বাগতও জানিয়েছেন?
আফরান নিশো: না, ওঁর পক্ষে থেকে কোনও অভিনন্দন বার্তা পাওয়া যায়নি। ওঁর ছবির প্রযোজক শুভেচ্ছাবার্তা দিয়েছেন।
প্রশ্ন: গত বছর ‘হাওয়া’ নিয়ে উন্মাদনা দেখেছে কলকাতা। এ বার ‘সুড়ঙ্গ’ নিয়েও উৎসাহ তৈরি হয়েছে। বাংলাদেশি সিনেমার কদর কি এখানে বাড়ছে বলে আপনার মনে হয়?
আফরান নিশো: বাংলাদেশ বা কলকাতা বলে আলাদা করতে চাই না আমি। সারা বিশ্বেই গল্প বলার ধরন বদলে গিয়েছে। নাচগান, মারপিট, প্রেম দিয়েই যে শুধু সিনেমা তৈরি হবে, এই ধারণা কলকাতাতে আগেই ভেঙেছে। এখন বাংলাদেশের নির্মাতারাও সেই দিকে হাঁটছেন। কারণ, এখন ওটিটির সাহায্যে বিশ্বমানের কাজ দেখার সুযোগ পাওয়া যাচ্ছে। এখন আর লোকে ধার করা সংস্কৃতি নয়, নিজের সংস্কৃতির সঙ্গে যুক্ত কাজ দেখতে চাইছেন। এখন আর হিরোকে সুন্দর হওয়ার প্রয়োজন পড়ে না। চরিত্র হয়ে ওঠাটাই গুরুত্বপূর্ণ। এর জ্বলন্ত উদাহরণ প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়। কী ভাবে এক জন হিরো থেকে তিনি অভিনেতা হয়ে উঠলেন, শেখার মতো।
প্রশ্ন: ভারতে ‘কেজিএফ’, ‘পুষ্পা’র মতো ছবিগুলি বক্স অফিস মাত করেছে। ‘সুড়ঙ্গ’ ছবিতে নুসরত ফারিয়ার নাচের সঙ্গে ‘উ অন্তাভা’র মিল পেয়েছেন অনেকে। বাংলাদেশ কি এখন একই মডেল অনুসরণ করছে?
আফরান নিশো: এই গানের সাদৃশ্যের প্রসঙ্গটা শুনেছি। কিন্তু ‘পুষ্পা’ কিংবা ‘কেজিএফ’-এর সঙ্গে আমাদের ছবির মিল নেই। আমার মনে হয়, এটা একটা ধরন ছবি বানানোর। আর ওই ধরনের ছবির বাজেট অনেক। আমাদের বাজেট অনেক কম। চাইলেও ওই ধরনের ছবি তৈরি করতে পারব না। তবে আমরা এখন আমাদের সংস্কৃতির দিকে বাড়তি জোর দিচ্ছি। যে ভাবে দক্ষিণী ছবি হিট হয়েছে নিজেদের সংস্কৃতিকে গুরুত্ব দিয়ে।
প্রশ্ন: আপনি কি নিজেকে মেথড অ্যাক্টর মনে করেন?
আফরান নিশো: না, সেটা মনে করি না। আমি কাজ করতে করতে শিখেছি। আমি তো কোনও অ্যাকাডেমিতে থেকে শিখে আসিনি। আমার পূর্বসূরিরাই আমার শিক্ষক। হ্যাঁ, কিছু প্র্যাকটিস রয়েছে যা প্রতিনিয়ত চালিয়ে যাই। অভিনয় না করাটাই সব থেকে বড় অভিনয়। প্রতিক্রিয়া ও অন্যকে লক্ষ করাই কাজ।
প্রশ্ন: কোন সহ-অভিনেত্রীর সঙ্গে কাজ করতে গেলে একটু বেশি প্রস্তুতি নিতে হয় আপনাকে?
আফরান নিশো: আসলে অভিনয় কেউ একা করতে পারে না। আমি সবাইকে সমান গুরুত্ব দিই। যাঁরা নতুন তাঁদের সাজসজ্জা, সিন বোঝানো— সব ক্ষেত্রেই সাহায্য করি।
প্রশ্ন: আপনি সব থেকে বেশি কাজ করেছেন মেহজ়াবীন, ইমরোজ তিশা, তাসনিয়া ফারিনের সঙ্গে। এই তিন নায়িকার মধ্যে কার সঙ্গে সব থেকে বেশি মানায় বলে মনে হয়?
আফরান নিশো: (একটু ভেবে...) দর্শক হয়তো সব থেকে বেশি রোমাঞ্চিত বোধ করেন মেহজ়াবীনের সঙ্গে আমাকে দেখে। তবে এক জনের নাম নিলে পরে অন্য জন রেগে যাবে। মারমুখী হয়ে যেতে পারে ওরা। তাই এক জনের নাম নেওয়া ঠিক হবে কি!
প্রশ্ন: এই মুহূর্তে দুই বাংলার শিল্পীদের ঘনিষ্ঠতা বাড়ছে। বাংলাদেশের শিল্পীরা যেমন আসছেন, তেমনই কলকাতার শিল্পীরা ও দেশে যাচ্ছেন। এই আদানপ্রদানটা হঠাৎ বৃদ্ধি পেল কী ভাবে?
আফরান নিশো: আসলে আমাদের ভাষা এক, গায়ের রং এক এবং কাজের ধরনও এক। সেই জন্যই হয়তো এই আদানপ্রদান সহজ হচ্ছে। এই মুহূর্তে যে সেতুবন্ধনটা হচ্ছে, সেটাই খুবই ভাল। এই আদানপ্রদানটা চললে এক দিন আমাদের নিয়ে বিশ্বমানের কাজ হবে।
প্রশ্ন: কলকাতার কোন শিল্পীদের কাজ আপনি দেখেন কিংবা পছন্দ করেন?
আফরান নিশো: আমার খুব ভাল লাগে রুদ্রনীলদাকে (রুদ্রনীল ঘোষ)। আসলে লোকহাসানো সহজ কাজ নয়। ওঁর ‘চ্যাপলিন’ দেখেছি, ওঁর বহু আগের করা একটা ‘দেবদাস’ দেখেছি। আর বাণিজ্যিক ছবিও দেখেছি ওঁর। উনিও আমার নাটক দেখে প্রশংসা করেন, আমার খোঁজ করেন। কোনও ভাবে সে সময় যোগাযোগ হয়নি। পরে দেখি উনি নিজেই ফেসবুকে আমাকে মেসেজ পাঠিয়েছিলেন, তখন আমার দেখা হয়ে ওঠেনি। এখন অবশ্য হোয়্যাটস্অ্যাপে কথা হয়। উনি আমাকে বলেছিলেন, আমাদের দেশে অভিনেতার খুব দরকার। এ ছাড়াও প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের কাজ দেখি। পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়, খরাজ মুখোপাধ্যায়ের মতো অভিনেতারা আমার কাজের প্রশংসা করেছেন।
প্রশ্ন: ‘কাইজ়ার’ সিরিজে জনপ্রিয়তা পেয়েছেন কলকাতায়। এ বার প্রথম ছবির মাধ্যমে বন্ধনটা আরও মজবুত হল?
আফরান নিশো: হ্যাঁ, এ দেশের সঙ্গে বন্ধনটা মজবুত হচ্ছে। আসলে আমি একটা ভাল কাজ করে থেমে যেতে চাই না। একটার থেকে অন্যটা যাতে ভাল হয় সেটা দেখি। এবং কাজে ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে চাই। ‘কাইজ়ার’ এখানে প্রশংসিত হয়েছে। এখন ‘সুড়ঙ্গ’ মুক্তি পাবে। এর পর অন্য কাজও আসবে।
প্রশ্ন: বাংলাদেশের নাটকের দুই জনপ্রিয় নায়ক নিশো ও অপূর্ব। অনেকে বলেন, আপনাদের এক রকম দেখতে। কখনও কেউ আপনাকে অপূর্ব বলে গুলিয়ে ফেলেছেন?
আফরান নিশো: আগে লোকে একটু বেশি ভুল করত। অনেকেই ভাবে, আমাদের এক রকম দেখতে। অপূর্বকে অনেকে নিশো ভেবে অটোগ্রাফ চেয়েছেন। আমার ক্ষেত্রেও এমন হয়েছে। তবে এখন একটু কমেছে এই বিভ্রান্তি।
প্রশ্ন: দিন কয়েক আগেই আপনি বলেন, আপনি বউ-বাচ্চা লুকিয়ে রাখার মতো নায়ক নন। ইঙ্গিত কি বিশেষ কারও দিকে?
আফরান নিশো: (হেসে) আমি আমার দর্শনের কথা বলেছি। দর্শনে সংঘর্ষ আসতে পারে। আমি বিবাহিত হলে, সকলকে বলেই দেব। হয়তো আমার স্ত্রীকে সর্বদা প্রকাশ্যে আনব না। তবে লুকিয়েও রাখব না। ব্যক্তিজীবনকে লুকিয়ে রাখায় বিশ্বাসী নই। আমার ঘনিষ্ঠ বন্ধুরা ব্যক্তিজীবনকে অন্তরালে রেখেছেন। সেটা তাঁদের কেরিয়ারে যে খুব সাহায্য করেছে, এমনটা নয়। সুপারস্টার, মেগাস্টার যা-ই হোক না কেন তাঁর সবটা মিলিয়ে দর্শক তাঁকে অনুসরণ করেন। আসলে হিরোর ধারণাটা শুধু আমাদের দেশে আছে। হিরো আসেন, বসেন, একটার জায়গায় পাঁচটা চেয়ার দেওয়া হয়। আমার কাছে হিরো বলাটা বড্ড ফেক মনে হয়। হিরো এবং অভিনেতার মধ্যে বৈষম্য তৈরি করাটা আমার দর্শন অনুমতি দেয় না। কেউ যদি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে গায়ে মাখেন, সেটা দুর্ভাগ্যজনক।
প্রশ্ন: লোকে বলে বাংলাদেশের সুপারস্টার এক জনই— শাকিব খান। আপনার কী মত?
আফরান নিশো: আমার কাছে হুমায়ুন ফরীদি, গোলাম মোস্তাফা, বুলবুল আহমেদরা সুপারস্টার।