Ishaa Saha Interview

ভালবাসাকে কি পরকীয়া বলা যায়? যে কোনও মুহূর্তে যে কাউকে ভালবেসে ফেলে মানুষ: ইশা

১৭ মার্চ মুক্তি পেয়েছে ইশা সাহার আগামী ছবি ‘ঘরে ফেরার গান’। ছবি, সিরিজ়ে কাজ থেকে ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে আনন্দবাজার অনলাইনের মুখোমুখি ইশা সাহা।

Advertisement
উৎসা হাজরা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ মার্চ ২০২৩ ১০:০০
Exclusive interview of Tollywood Actoress Ishaa Saha

নতুন ছবি ‘ঘরের ফেরার গান’ মুক্তির আগে আড্ডায় ইশা সাহা। —ফাইল চিত্র।

সিরিজ় থেকে সিনেমা— বিভিন্ন মাধ্যমে চুটিয়ে কাজ করে চলেছেন অভিনেত্রী ইশা সাহা। ১৭ মার্চ নতুন ছবি মুক্তির আগে আনন্দবাজার অনলাইনের সঙ্গে আড্ডায় ইশা।

প্রশ্ন: কিছু দিন আগে মিথ্যে প্রেমের গল্প’, এ বার ঘরে ফেরার গান। ইশার জীবন কি এখন মিউজ়িক্যাল?

Advertisement

ইশা: হ্যাঁ, কিছুটা মিউজ়িক্যাল। জীবন এখন অনেকটা ছন্দে আছে।

প্রশ্ন: এই ছবিটা অনেক দিন আগেই তো মুক্তি পাওয়ার কথা ছিল?

ইশা: ছবির শুটিংও হয়েছে আগে। মুক্তি পাওয়ার কথাও ছিল অনেক আগে। বরং ‘মিথ্যে প্রেমের গল্প’ ছবিটার কোনও পরিকল্পনাও তখন ছিল না। ছবির নাম এটা ঠিক হয়নি। আমার সঙ্গে পর পর যা হচ্ছে, সবটাই কাকতালীয়। তবে যা ঘটছে ভাল হচ্ছে। আমি তো বেশ উপভোগ করছি।

প্রশ্ন: পর পর ছবি মুক্তি পাচ্ছে বলে ভাল লাগছে, তাই তো?

ইশা: একের পর এক কাজ মুক্তি পাচ্ছে সেটা না ভাল লাগার কথা নয়। দর্শক বাইরে থেকে দেখে ভাবছেন, পর পর ছবি মুক্তি পাচ্ছে কী ভাল ব্যাপার। আমি কিন্তু অনেকগুলো দিন কাজ করিনি। এই ছবিগুলো সব অনেক আগে করা। একটা এক বছর আগে। আর একটা তো দু’বছর আগে করা। মনে হচ্ছে যে প্রচুর কাজ আসছে। ব্যাপারটা কিন্তু তা নয়।আমি গত বছর থেকে বেশ বেছে কাজ নেওয়া শুরু করেছি। আমার শেষ শুট করা ছবি ‘কর্ণসুবর্ণের গুপ্তধন’। এখনও অবধি কিন্তু কোনও ছবি শুট করিনি এক বছরে। মাঝে দু’টো সিরিজ় শুট করেছি। রিলিজ়ও করে গিয়েছে ‘ইন্দু ২’ এবং ‘হ্যালো রিমেম্বর মি’। এ বার আমি ফ্লোরটাকে মিস করছি।

Ishaa Saha Interview

কাজের মান না সংখ্যা—কোনটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ ইশার কাছে? —ফাইল চিত্র।

প্রশ্ন: একসঙ্গে অনেক কাজ বলে অনেকেই বলছেন, ইশার কাছে কাজের মান নয়, সংখ্যাই বেশি গুরুত্বপূর্ণ।

ইশা: আমার মনে হয়, যাঁরা বলছেন তাঁদের থেকে আমি নিজের কেরিয়ার নিয়ে একটু বেশি সচেতন। তাই আমি এটা ভাবতে চাই না। আর আমার মনে হয় না এত দিন পর্যন্ত আমি যে ক’টা কাজ করেছি তা মানের বিচারে খারাপ। বাজে মনে হলে তো ছবিটাই বেছে নিতাম না। কোনটা খারাপ মনে হয়, ‘মিথ্যে প্রেমের গান’? আমার মনে হয় না। বক্স অফিসে চলেছে না চলেনি, সেই বিতর্কে যেতে চাই না। আমি আমার চরিত্রের জন্য যথেষ্ট প্রশংসা পেয়েছি। আমার মন যা বলে তেমন ভাবেই কাজ করি।

প্রশ্ন: প্রচুর ছবিতে আপনি কাজ করছেন, কিন্তু ইন্দুনিয়ে চর্চা বেশি হয়েছে, ‘ওটিটি’-তে নিজেকে বেশি সফল মনে হয়?

ইশা: এই বিষয়ে কথা বলতে আমার একদম ভাল লাগে না। শেষ কয়েক বছর ধরে মহিলাকেন্দ্রিক ছবি একটু বেশি দেখা যায়। কিন্তু তার আগে যাঁরা কাজ করেছেন, তাঁদের অভিনেত্রী বলবেন না বলছেন? তাঁরাও তো ‘মশলা’ ছবিতে কাজ করেছেন। যেখানে হিরোরা প্রাধান্য বেশি পায়। ইন্দু নিয়ে চর্চা হয়েছে, কারণ গোটা সিরিজ় জুড়ে শুধুই ইন্দু রয়েছে। সব ছবি জুড়ে আমি থাকব, সেটা সম্ভব নয়। তা হলে আমার নিজের প্রযোজনা সংস্থা খুলতে হবে। তা তো হবে না , তা বলে কি কাজ করব না? আমায় সারা ক্ষণ নায়িকাই হতে হবে এমনটা ভাবি না। শেষ এক বছরে উপলব্ধি করেছি, যার কাজ যত বেশি মুক্তি পায়, তাকে নিয়ে চর্চাও বেশি হয়। কাজের থেকে অকাজের চর্চা বেশি হয় বলে আমার ধারণা।

প্রশ্ন: এত চর্চা হওয়ায় কি আপনি বিরক্ত?

ইশা: কাজ ছাড়া ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে চর্চা করা মিডিয়ার ক্ষেত্রে তা-ও একটা যুক্তি খুঁজে পাই। কিন্তু ইন্ডাস্ট্রির অন্দরের লোকজন এমন কিছু জিনিস নিয়ে চর্চা করে যেটা ঘটেনি। এই চর্চার কোনও দরকার নেই। আমার মনে হয়, সেই চর্চা সব ইন্ডাস্ট্রির অন্দরেই হয়। যদিও আমি আর এখন বিরক্ত হচ্ছি না।

প্রশ্ন: ঘরে ফেরার গানসিনেমার প্রচার ঝলক একটা পরকীয়ার আভাস দেয়। পরকীয়া আপনি কী ভাবে দেখেন?

ইশা: এই পরকীয়া বিষয়টা মানুষ বিশেষে আলাদা। আমাদের দেশে পরকীয়াকে খারাপ হিসাবে দেখা হয়। আচ্ছা ভালবাসাকে কি পরকীয়া বলা যায়? আমার ধারণা, ভালবাসা যে কোনও দিন যে কোনও সময় যে কারও সঙ্গে হতে পারে। আমার ধারণা, আমাদের দেশে অনেকের এটা হয়। অনেকে সাহস করে বিয়েটা থেকে বেরিয়ে আসে। কেউ পারে না। কেউ সমঝোতা করে নেয়। কেউ সমাজের ভয়ে থেকে যায়। আবার কেউ ভালবাসাটা স্বীকারই করতে চায় না। আমার কাছে নিজের ভাল থাকাটা গুরুত্বপূর্ণ। দুনিয়া চুলোয় যাক। সমাজের ভয়ে গুমরে মরে গেলাম, এর তো কোনও মানে নেই। আমি ঠিক পরকীয়া হিসাবে দেখি না। এই ভাবে তকমা দিয়ে দেওয়া খুব সহজ।

Is Ishaa become straight forward

ইশা এখন অনেক বেশি স্পষ্টবক্তা? —ফাইল-চিত্র।

প্রশ্ন: ইশা কি এখন অনেক বেশি স্পষ্টবক্তা হয়ে উঠেছেন?

ইশা: আমার এখন মনে হয় কথা বললেও বিতর্ক হবে, না বললেও বিতর্ক হবে। বিনা কারণে খবরের শিরোনামে থাকতে চাই না। ভুল কথা নিয়ে চর্চায় থাকতে চাই না। আর সব সময় আমি উত্তরও দিই না। আজ ইচ্ছা করছে, তাই কথা বলছি। পরের সাক্ষাৎকারে ইচ্ছা না হলে এত কথা বলব না।

প্রশ্ন: প্রেমের কথা উঠলেই আপনি রেগে যান। বিষয়টা কি আপনার কাছে এতটাই স্পর্শকাতর?

ইশা: রেগে যাই না। কিছু জিনিস ব্যক্তিগত থাকা খুব প্রয়োজন। আমাদের সবটাই এত প্রকাশ্যে এসে গিয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে। শেষ কয়েক মাস বা বছর ধরে আমার ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে যা হচ্ছে তাতে আমি খানিকটা বিরক্ত। এত কাজ করছি তা নিয়ে চর্চা যথেষ্ট। অসম্মান করাটা একটু বেশি হয়ে গিয়েছিল। কারও ব্যক্তিগত জীবনকে একটু সম্মান দেওয়াটাই কাম্য। চারদিকে আমায় নিয়ে খুব খারাপ ভাষায় লেখা হয়েছে। তাই এই প্রেমের বিষয় নিয়ে কথা উঠলেই আমি গুটিয়ে যেতাম। মনে হত, এ বার এই প্রসঙ্গ থেকে বেরোতে হবে। সেখান থেকে বেরোনোর উপায় মনে হত এটা।

আরও পড়ুন
Advertisement